BN/Prabhupada 0066 - কৃষ্ণের ইচ্ছার সঙ্গে আমাদের একমত হওয়া উচিত
Lecture on BG 16.4 -- Hawaii, January 30, 1975
এখন এটি আমাদের পছন্দ যে আমরা ভক্ত হতে চাই না কি অসুর হয়েই থাকতে চাই। সেটি আমার পছন্দ। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "এইসব আসুরিক কার্যাবলী ত্যাগ করে আমার কাছে শরণাগত হও।" সেটিই শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা। কিন্তু যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার সঙ্গে সহমত না হও, যদি তুমি নিজের ইচ্ছাকেই উপভোগ করতে চাও, তা হলেও শ্রীকৃষ্ণ তাতে খুশি, তিনি তোমাকে প্রয়োজনমত দেবেন। কিন্তু সেটি ভাল কাজ নয়। আমাদের উচিত শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার সঙ্গে একাত্ম হওয়া। আমাদের নিজেদের বাসনাগুলোকে, আসুরিক বাসনাগুলোকে বাড়তে না দেওয়াই উচিত। একে বলা হয় তপস্যা। আমাদের বাসনাগুলোকে ত্যাগ করা উচিত। সেটি হচ্ছে প্রকৃত ত্যাগ। আমাদের কেবল শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছাকে গ্রহণ করা উচিত। সেটিই শ্রীমদ্ ভগবদগীতার নির্দেশ। অর্জুনের যুদ্ধ করার কোন বাসনা ছিল না, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের ইছা ছিল যুদ্ধ হোক, ঠিক উল্টো। অর্জুন শেষ পর্যন্ত শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছাকেই মেনে নিয়েছেন, "হ্যাঁ," করিষ্যে বচনং তব (ভগবদগীতা ১৮/৭৩)। "হ্যাঁ, আমি আপনার ইচ্ছানুযায়ীই যুদ্ধ করব।" সেটি হচ্ছে ভক্তি। সেটিই হচ্ছে ভক্তি এবং কর্মের মধ্যে পার্থক্য। কর্ম মানে আমার নিজের বাসনাগুলোর পরিতৃপ্তি করা, আর ভক্তি মানে শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার পূর্তিসাধন। সেটিই হচ্ছে পার্থক্য। এখন তুমি তোমার পছন্দ নির্বাচন কর। তুমি কি তোমার ইচ্ছার পূর্তি চাও না কি তুমি শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার পূর্তি সাধন করতে চাও। যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা পূরণের সিদ্ধান্ত নাও তাহলে তোমার জীবন সার্থক। সেটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনাময় জীবন। "শ্রীকৃষ্ণ এটি চান, আমি অবশ্যই এটি করব। আমি আমার জন্য কিছুই করব না।" সেটিই হচ্ছে বৃন্দাবন। শ্রীবৃন্দাবনের সমস্ত অধিবাসীরা কেবল শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছাপূর্তির চেষ্টা করেন। গোপবালকেরা, গোবৎসেরা, গাভীরা, বৃক্ষসমূহ, পুষ্পরাজি, জল, গোপীগণ, বয়স্ক অধিবাসীরা, মা যশোদা, নন্দবাবা, তারা সকলেই শ্রীকৃষ্ণের বাসনা পূর্তির জন্য নিযুক্ত। সেটিই হচ্ছে বৃন্দাবন। সুতরাং এইভাবে তুমি এই জড় জগৎকেও বৃন্দাবনে পরিণত করতে পার। এই শর্তে যে তুমি শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা পূর্তির জন্য রাজি। সেটিই বৃন্দাবন। আর যদি তুমি তোমার নিজের বাসনাপূর্তির চেষ্টা কর তবে সেটি জড়। এটিই হচ্ছে জড় এবং চিন্ময়ের পার্থক্য।