BN/Prabhupada 0067 - গোস্বামীরা শুধুমাত্র দুই ঘন্টা নিদ্রা যেতেন



Lecture on SB 1.16.26-30 -- Hawaii, January 23, 1974

সুতরাং এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন যতোটাই এগিয়ে যাচ্ছে না কেন এটি কেবল শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মহাবদান্য করুণার কারণেই যা এই কলিযুগের দুর্দশাগ্রস্ত লোকেদের জন্য। অন্যথায় কৃষ্ণভাবনাময় হওয়া খুব সহজ নয়, এটি সহজ নয়। তাই যারা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপায় কৃষ্ণভাবনাময় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, তাদের এই সুযোগটি কোনওভাবেই হারানো উচিত নয়। এটি হবে আত্মঘাতী। পতিত হয়ো না। এটি খুবই সহজ। কেবল হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তনের মাধ্যমে, সবসময় নয়, চব্বিশ ঘণ্টা, যদিও শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ, কীর্তনীয় সদা হরিঃ (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত আদিলীলা ১৭/৩১) , সর্বদা কীর্তন কর। সেটিই হচ্ছে নিয়ম। কিন্তু আমরা সেটি করতে পারব না কারণ প্রবলভাবে আমরা কলির প্রভাবগ্রস্ত। তাই কমপক্ষে ষোল মালা। এটি ভুল কোর না। এটি বাদ দিও না। এতে সমস্যা কি? ষোল মালা করতে? এতে সর্বোচ্চ দুঘণ্টা লাগে। তোমার হাতে চব্বিশ ঘণ্টা রয়েছে। তুমি ঘুমোতে চাও, ঠিক আছে ঘুমোও, দশ ঘণ্টা ঘুমোতে চাও। কিন্তু সেটি অনুমোদিত নয়। ছ'ঘণ্টার বেশি ঘুমিও না। কিন্তু ওরা ঘুমোতে চায়। ওরা চব্বিশ ঘণ্টা ঘুমোতে চায়। কলিযুগে এটিই ওদের ইচ্ছা। কিন্তু না, তাহলে তোমার অনেক সময় নষ্ট হবে। আহার, নিদ্রা, ভয় এবং মৈথুন হ্রাস কর। যখন এগুলো একদম শুন্য হয়ে যাবে, সেটিই হচ্ছে পূর্ণতা। কারণ এগুলো দৈহিক চাহিদা। আহার, নিদ্রা, ভয় এবং মৈথুন হচ্ছে দৈহিক চাহিদা। কিন্তু আমি এই এই দেহ নই। দেহিনোস্মিন্‌ যথা দেহে কৌমারং (ভগবদগীতা ২/১৩)। সেই উপলব্ধিটি আসতে সময় লাগবে। কিন্তু আমরা যখন কৃষ্ণভাবনামৃতে প্রকৃতই উন্নতিসাধন করব, আমাদের কর্তব্য কি তা অবশ্যই আমাদের জানা উচিত। ছয় ঘণ্টার বেশি ঘুম নয়। সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা। সর্বোচ্চ মানে যারা তা একেবারেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কিন্তু দশ ঘণ্টা, বার ঘণ্টা, পনের ঘণ্টা নয়। না। তাহলে অর্থটা কি হল...? কেউ একজন এক উন্নত ভক্তকে দর্শন করতে গিয়েছিল এবং সে বেলা ন'টার সময় ঘুমিয়ে ছিল। আর সে কি না উন্নত ভক্ত? আহ্‌। তাই কি? তাহলে কি হল...? সে কি ধরণের ভক্ত? ভক্ত অবশ্যই খুব সকালে ঘুম থেকে উঠবে, চারটের মধ্যে। পাঁচটার মধ্যে তাকে অবশ্যই স্নান আর অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তারপর সে জপ এবং অন্যান্য কিছুতে যাবে... চব্বিশ ঘণ্টার কাজ থাকতে হবে। সুতরাং ঘুমোনো খুব একটা ভাল নয়। গোস্বামীগণ মাত্র দু'ঘণ্টা ঘুমোতেন। আমিও রাতে গ্রন্থ লিখি, আর আমি ঘুমোইও কিন্তু তিন ঘণ্টার বেশি নয়। কিন্তু কখনও কখনও আমি একটু বেশি ঘুমিয়ে নিই, তাদের মতো নয়... আমি গোস্বামীদের অনুকরণ করি না। তা সম্ভব নয়। কিন্তু যতদূর সম্ভব। তাই প্রত্যেকেরই তা এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করা উচিত। আর নিদ্রা এড়িয়ে চলা মানে, যদি আমরা অল্প পরিমাণ আহার গ্রহণ করি, তবেই আমরা এড়িয়ে চলতে পারব। আহার, নিদ্রা। আহারের পরই আসছে নিদ্রা। তাই যদি আমরা অতিরিক্ত খাই, তাহলে আমাদের অতিরিক্ত ঘুম হয়ে যাবে। যদি আমরা কম খাই, তাহলে কম ঘুমোতে পারব। আহার, নিদ্রা, মৈথুন। আর মৈথুন এড়িয়ে চলতে হবে। এটি একটি কঠোর নিয়ম। যৌনজীবন যতটা সম্ভব হ্রাস করতে হবে। তাই আমাদের এই নিয়ম পালন করার বিধান রয়েছে, "কোনও অবৈধ যৌনতা নয়"। যৌন জীবন, আমরা বলি না "তুমি এটি একেবারেই করতে পারবে না"। তা কেউই পারবে না। তাই যৌন জীবন মানে হচ্ছে বিবাহিত জীবন, সামান্য একটু ছাড়। এক প্রকার অনুমতি, "ঠিক আছে, তুমি এইটুকু অনুমতি হিসেবে নাও"। কিন্তু অবৈধ যৌনসঙ্গ নয়। তাহলে তুমি কখনই পারবে না।

সুতরাং আহার, নিদ্রা, মৈথুন এবং আত্মরক্ষা। প্রতিরক্ষা। আমরা বহুভাবে প্রতিরক্ষা করছি। কিন্তু তবুও যুদ্ধ রয়েই গেছে। আর জড়া প্রকৃতির প্রত্যাঘাত... তোমাদের দেশ অত্যন্ত সুন্দরভাবে প্রতিরক্ষা করছে, কিন্তু এখন পেট্রোল নিয়ে নেওয়া হল। তুমি কোনও প্রতিরক্ষাই করতে পারবে না। ঠিক একইভাবে, সবকিছুই যে কোনও মুহূর্তে কেড়ে নেওয়া হতে পারে। তাই প্রতিরক্ষার জন্য শ্রীকৃষ্ণের ওপর নির্ভর কর। প্রতিরক্ষা। 'অবশ্য রক্ষিবে কৃষ্ণ'। একে বলা হয় শরণাগতি। শরণাগতি মানে... শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "তুমি আমার শরণাগত হও" সর্বধর্মান পরিত্যাজ্য (ভগবদগীতা ১৮/৬৬) আমাদেরকে তা বিশ্বাস করতে হবে যে "শ্রীকৃষ্ণ শরণাগত হতে বলছেন, আমি শরণাগত হব। তিনি নিশ্চয়ই আমাকে বিপদে রক্ষা করবেন।" একে বলা হয় শরণাগতি।