BN/Prabhupada 0087 -জড় প্রকৃতির নিয়ম



Sri Isopanisad Invocation Lecture -- Los Angeles, April 28, 1970

হ্যাঁ। এই জড় জগতে সবকিছুর একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। এবং এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছয় ধরণের পরিবর্তন হয়। সর্ব প্রথম জন্ম, তারপর বৃদ্ধি, তারপর স্থিতি,. তারপর উৎপাদন, তারপর হ্রাস পাওয়া, তারপর অদৃশ্য হয়ে যায়। এটাই প্রকৃতির আইন। একটা ফুল জন্ম নেয়, একটা কুঁড়ির মতো, তারপর বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়, তারপর দুই তিন দিন থাকে, তারপর এটি বীজ তৈরী করে, তারপর ধীরে ধীরে শুকিয়ে শেষ হয়ে যায়। (একপাশে:) আপনি এভাবে বসুন। সুতরাং এটিকে বলা হয় ষড়বিকার, ছয় ধরনের পরিবর্তন। আমরা এটিকে তথাকথিত বিজ্ঞান দ্বারা বন্ধ করতে পারি না। না। এটিই অবিদ্যা, মানুষ নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। এবং মাঝে মাঝে বোকার মতো কথা বলছে যে, বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষ অমর হয়ে যাবে। রাশিয়ানরা এইরকম বলছে। সুতরাং এটি অবিদ্যা, অজ্ঞান। তুমি ভৌতিক নিয়মের প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারবে না। তাই ভগবদগীতায় বলে হয়েছে, দৈবী হ্যেষা গুণময়ী মম মায়া দুরত্যয়া (ভগবদ্গীতা.৭.১৪) জড়া প্রকৃতির প্রক্রিয়া, যা তিনটি গুণের সংমিশ্রণে গঠিত হয় - সত্ত্বগুণ, রজোগুণ, তমোগুণ.. ত্রিগুণ। গুণের অরেকটি নাম হচ্ছে দড়ি। যেমন তোমরা দড়ি দেখেছ, সেগুলো তিনভাবে পাকানো থাকে। সবার প্রথমে পাতলা দড়ি থাকে, তারপর ওর মধ্যে তিনটি দিয়ে প্যাঁচানো, তারপর আবার তার মধ্যে তিনটি দিয়ে পাকানো হয়। তারপর আবার তিনটি। এভাবে এটা ভীষণ শক্ত হয়ে যায়। সুতরাং তিনটি গুণ, সত্ত্ব, রজো, তমো গুণ, তাদেরকে মিশানো হয়। আবার তারা কিছু উৎপণ্য করে, আবার মিশ্রিত হয়, আবার মিশ্রিত হয়। এই ভাবে একাশি বার তাদের পাকানো হয়। সুতরাং গুণময়ী মায়া, আরও বেশী, আরও বেশী করে তোমাকে বন্ধন করে। তাই তুমি এই জড় জগতের বন্ধন থেকে বের হতে পার না। বন্ধন। তাই এটিকে বলে অপবর্গ। এই কৃষ্ণভাবনামৃত প্রক্রিয়ার অর্থ হচ্ছে প-বর্গ প্রক্রিয়াকে বন্ধ করা।

গতকাল আমি গর্গমুনিকে বলছিলাম এই প-বর্গ কি। এই প-বর্গের অর্থ হচ্ছে বর্ণমালার প অক্ষর। তোমরা জানো, দেবনাগরী নিয়ে যারা অধ্যয়ন করেছ। দেবনাগরী বর্ণমালা হচ্ছে , ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ এইভাবে পাঁচ সেট, এক পংক্তিতে। তারপর পঞ্চম সেট আসে, প ফ ব ভ ম। সুতরাং এই পবর্গ মানে প, প্রথমে প প মানে পরাভব, হার। সবাই চেষ্টা করছে, বেঁচে থাকার জন্য কঠোর সংগ্রাম করছে, কিন্তু হেরে যাচ্ছে। প্রথমে প বর্গ । প মানে পরাভব। তারপর ফ । ফ এর অর্থ হচ্ছে ফেনা। যেমন ঘোড়ার মতন, যখন খুব শক্ত কাজ করে, তুমি দেখতে পাবে মুখ দিয়ে কিছু ফেনা মুখ থেকে বেরোচ্ছে, আমাদেরও কখনও কখনও, যখন আমরা খুব ক্লান্ত হয়ে যাই খুব কঠিন কাজ করার পর, জিহ্বা শুষ্ক হয় এবং কিছু ফেনা আসে। সুতরাং প্রত্যেকে খুব কঠোর পরিশ্রম করছে শুধুমাত্র ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য, কিন্তু হেরে যাচ্ছে। প, ফ এবং ব , ব মানে বন্ধন। প্রথমে প, দ্বিতীয় ফ, তারপর বন্ধন তৃতীয়, তারপর ব, ভ। ভ মানে পেটানো, ভয়। এবং তারপর ম, ম মানে মৃত্যু অথবা মারা যাওয়া। সুতরাং এই কৃষ্ণভাবনামৃতের পদ্ধতি হচ্ছে অপবর্গ। অপ। অ মানে কিছু নয়। প বর্গ, এই হচ্ছে জড় জগতের লক্ষণ, এবং যখন তুমি এই শব্দ যুক্ত করবে, অ, অপবর্গ, এটার অর্থ হচ্ছে নিরস্ত হওয়া।