BN/Prabhupada 0225 - নিরাশ হই না, ভ্রমিত হই না



Lecture at Engagement -- Columbus, may 19, 1969

মানব সভ্যতা হচ্ছে নিজেকে বোঝার একটা সু্যোগ, আমি কে? সেই অনুসারে কার্য করছে। তাই ভাগবতে বলা হয়েছে, যদি তুমি নিজেকে বোঝার পরিস্থিতিতে না আস, তাহলে যা কিছু আমি করছি, এটা শুধুমাত্র হার এবং সময়ের অপচয়। একই সময়ে, একটি সতর্কবাণী আছে যে আমাদের জীবনের একটি মুহূর্ত নষ্ট করা উচিত নয়। এই বৈদিক নির্দেশাবলী বোঝার চেষ্টা করুন, সেগুলি কতটা সুন্দর। চাঁনক্য পণ্ডিত নামে একটি মহান রাজনীতিবিদ। তিনি গ্রিসে গ্রেট আলেকজান্ডারের রাজত্বকালে সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং তাঁর অনেক নৈতিক নির্দেশনা ও সামাজিক নির্দেশনা ছিল। তার একটি শ্লোকে তিনি বলেছেন যে আয়ুষ ক্ষন একোহপি ন লভ্যতে স্বর্ন-কোটিভি। আয়ুষ, "তোমার জীবনের অবধিকাল।" মনে করুন আপনি বিশ বছর বয়েসের। আজকে ১৯শে মে এবং এখন ৪টা বাজে। এখন এই সময় ৪টে, ১৯শে মে ১৯৬৯ চলে গেছে। এমনকি যদি আপনি মিলিয়ন ডলার টাকা দিতেও প্রস্তুত থাকেন, তবুও কখনও সেই সময় ফিরে আসবে না। শুধু বুঝতে চেষ্টা করুন। অনুরূপভাবে, যদি আপনার জীবনের এক মুহূর্ত নষ্ট হয়ে যায়, কেবল যৌন সন্তুষ্টির জন্য - খাওয়া, ঘুম, যৌন সংসর্গ এবং আত্মরক্ষার জন্য তাহলে আপনি আপনার জীবনের মূল্য জানেন না। আপনি লক্ষ লক্ষ ডলার দিয়েও আপনার জীবনের একটি মুহূর্ত আপনি পেতে পারবেন না।

আপনার জীবন কত মূল্যবান তা বোঝার চেষ্টা করুন। তাই আমাদের এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন মানুষকে এটা বলার জন্য যে তাদের জীবনটা কতটা মূল্যবান আর এইভাবে এটার উপযোগ করা উচিত। আমাদের আন্দোলন হচ্ছে সর্ব সুখিনো ভবন্তুঃ প্রত্যেকে সুখে থাক। শুধু মানুষের সমাজেই নয়, প্রাণী সমাজেও আমরা সবাইকে খুশি দেখতে চাই। এই হচ্ছে কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন এবং এটি বাস্তব, এটি একটি স্বপ্ন নয়, আপনি সুখী হতে পারেন। হতাশ হবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। আপনার জীবনের মূল্য আছে। আপনি, এই জীবনে, আপনার নিত্য জীবনকে আপনি উপলব্দি করতে পারবেন, জ্ঞানের অনন্ত আনন্দিত জীবন। এটা সম্ভব, এটা অসম্ভব নয়। তাই আমরা শুধু এই বার্তা বিশ্বে সম্প্রচার করছি, যে "আপনার জীবন অত্যন্ত মূল্যবান, বিড়াল এবং কুকুরের মত এটি নষ্ট করবেন না, এটি সম্পূর্ণরূপে উপযোগ করার চেষ্টা করুন।" এটি ভগবদ গীতার বিবৃতি। আমরা ভগবদ গীতা যথাযথ প্রকাশ করেছি। এটা পড়ার চেষ্টা করুন। ভগবদ গীতায় চতুর্থ অধ্যায়ে, এটি বলা হয়েছে যে, জন্ম কর্ম মে দিব্যম যো জানাতি তত্ত্বত। আমরা কেবল কৃষ্ণ কি তাহা বোঝার চেষ্টা করতে পারি, তার কি কাজ, তার জীবন কেমন, তিনি কোথায় বাস করেন, তিনি কি করেন...,জন্ম কর্ম। জন্ম মানে অবতরণ এবং অদৃশ্য হওয়া; কর্ম মানে হচ্ছে কার্য; দিব্য -আধ্যাত্মিক। জন্ম কর্ম মে দিব্যম যো জানাতি তত্ত্বত (ভ.গী. ৪.৯)। যিনি, কৃষ্ণের অবতরন এবং কার্যকলাপগুলি জানেন, বাস্তবে, সত্যি আবেগ দ্বারা নয়, কিন্তু বৈজ্ঞানিক অধ্যয়নের মাধ্যমে - তাহলে ফলাফল হচ্ছে ত্যত্বা দেহং পুনর জন্ম নৈতি মামেতি কৌন্তেয় (ভ.গী.৪.৯) শুধুমাত্র কৃষ্ণকে বোঝার মাধ্যমে, আপনাকে আর এই দুঃখজনক অবস্থায় দেহের অস্তিত্বের মধ্যে ফিরে আসতে হবে না। এটিই সত্য। এমনকি আপনার জীবনে, এই জীবনে, আপনি বুঝতে পারবেন, আপনি খুশি হবেন।