BN/Prabhupada 0254 - বৈদিক জ্ঞান গুরু আমাদের বোঝান



Lecture on BG 2.8 -- London, August 8, 1973

তাই মূলত আমরা সব ব্যক্তি, কোন নিরাকার নই। শ্রীকৃষ্ণও বলেছেন ... তিনি বলেছেনঃ "এই সৈন্যরা, এই রাজারা, তুমি ও আমি, আমার প্রিয় অর্জুন, এইরকম নয় যে আমরা অতীতে উপস্থিত ছিলাম না। ভবিষ্যতে আমাদের অস্তিত্বের শেষ হয়ে যাবে " শ্রীকৃষ্ণের এই বিশেষ নির্দেশ, যে: "আমি, তুমি এবং এই সমস্ত রাজারা এবং সৈন্য যারা এখানে জড়ো হয়েছে তাদের সবার অস্তিত্ব ছিল। যেমন আমরা এখন, পৃথক ব্যক্তি, একইভাবে, তারা পৃথক ব্যক্তি ছিল। এবং ভবিষ্যতে আমরাও ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত থাকব।" তাই নিরাকারের প্রশ্ন কোথায়? এই নির্বিশেষবাদী, শুন্যবাদীরা বদমাশ এইজন্য মূলনীতি হচ্ছে , বাস্তবে বিষয়গুলিকে বুঝতে গেলে আমাদেরকে অর্জুনের মতো কৃষ্ণের কাছে যেতে হবে। শিষ্যস্তেহম্‌ (ভ.গী ২.৭) "এখন আমি আপনার শিষ্য। আপনি আমাকে শিক্ষা দিন। শাধি মাং প্রপন্নম। আমি আত্মসমর্পণ করছি আমি তোমার সাথে একই স্তর থেকে কথা বলতে চেষ্টা করছি না।"

গুরু গ্রহণ করার মানে হল যে, গুরু যা আপনাকে বলবেন, তা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় গুরু বানানোর প্রয়োজন নেই। কোন ফ্যাশান দরকার নেই। আপনাকে প্রস্তুত হতে হবে। একেই প্রপন্নম্‌ বলা হয়। তদ বিদ্ধি প্রণিপাতেন (ভ.গী ৪.৩৪)। আপনি বুঝতে পারবেন আত্মসমর্পণ করে, গুরুকে পরীক্ষা করে নয়। "আমি তাকে পরীক্ষা করবো, সে কতটা জানে", তাহলে একজন গুরু গ্রহণ করার কী প্রয়োজন আছে? না। এজন্যই অর্জুন বলছেন যে "আপনি ছাড়া, এই বিভ্রান্তিতে আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে, এমন অন্য কেউ নেই।" যৎ শোকম উচ্ছোষণাম ইন্দ্রিয়ণাম (ভ.গী ২.৮) "আমার ইন্দ্রিয় শুকিয়ে যাচ্ছে।" কারণ অপূর্ন ইন্দ্রিয়...বাস্তবে এ ইন্দ্রিয় নয়। বাস্তব ইন্দ্রিয় ভিতরে আছে। হৃষিকেশ হৃষিকেন-সেবনম (চৈ.চ.মধ্য ১৯.১৭০) আমাদেরকে কৃষ্ণ, হৃষিকেশের সেবা করতে হবে। কৃষ্ণ বাস্তব এবং আমাদের বাস্তবে এই অবস্থায় আসতে হবে। তাহলে আমরা কৃষ্ণের সেবা করতে পারি। হৃষিকেন। তৎপরত্বেন নির্মলম। যখন আমাদের ইন্দ্রিয় বিশুদ্ধ হয়ে যাবে। ইন্দ্রিয়াণি পরাণি আহুঃ ইন্দ্রিয়েভ্যঃ পরম মনঃ, মনসঃ তু পরা বুদ্ধিঃ (ভ.গী ৩.৪২) এই বিভিন্ন পদক্ষেপ। জীবনের এই শারীরিক ধারণা মানে ইন্দ্রিয়। কিন্তু যখন আপনি এই ইন্দ্রিয়কে পার করে যাবেন তারপর আপনি মানসিক পর্যায় আসবেন। যখন আপনি মানসিক স্তর পার করবেন, তখন আপনি বুদ্ধির পর্যায়ে আসবেন। যখন আপনি বুদ্ধির পর্যায়ে আসেন এবং যখন আপনি এটি অতিক্রম করবেন, তখন আপনি আধ্যাত্মিক পর্যায়ে আসবেন। এটি একটি আধ্যাত্মিক স্তর। বিভিন্ন বিভাগ এবং পদক্ষেপ আছে। দেহের স্তরে আমরা সরাসরি দাবি করি- প্রত্যক্ষ জ্ঞান। প্রত্যক্ষ মানে প্রত্যক্ষ ধারণা। জ্ঞানের বিভিন্ন পদক্ষেপ আছে। প্রত্যক্ষ, অপরোক্ষ, প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ, অধোক্ষজ, অপ্রাকৃত এই জ্ঞান বিভিন্ন পর্যায়ে হয়। দেহের স্তরে অর্জিত জ্ঞান প্রত্যক্ষ ধারনায়, বাস্তবিক জ্ঞান নয়। অতএব, আমরা এই বিজ্ঞানী, তথাকথিত বিজ্ঞানীদের চ্যালেঞ্জ করতে পারি। তাদের এই মৌলিক জ্ঞান শারীরিক ধারণার উপরেই হয়, প্রত্যক্ষ, পরীক্ষামূলক জ্ঞান। পরীক্ষামূলক জ্ঞান মানে স্থুল ইন্দ্রিয়ের ধারনা। এটি পরীক্ষামূলক। প্রত্যক্ষ। সবাই বলে: "আমরা ভগবানকে দেখতে পাচ্ছি না।" ভগবান এমন একটি বিষয় নয় যা আপনি তাকে এই প্রত্যক্ষ ধারণার সাথে দেখতে পারেন। ভগবানের আরেকটি নাম অনুভব। অনুভব। যেমন এই রুমে আমরা সূর্যকে সরাসরি দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু আমরা জানি সূর্য সেখানে আছে। দিনের বেলা। আপনি কিভাবে এটা জানেন? আপনি দেখতে পাচ্ছেন না কিন্তু অন্য পদ্ধতি আছে যার মাধ্যমে আপনি অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। একে বলে অপরোক্ষ। প্রত্যক্ষ পরোক্ষ অপরোক্ষ। এইভাবে, কৃষ্ণ ভাবনামৃত মানে আধোক্ষজ এবং অপ্রকৃত, ইন্দ্রিয়ের বাইরে। অতএব, এটি ভগবত-গীতায় বলা হয়েছে; অধোক্ষজ। যেখানে সরাসরি উপলব্ধি পৌঁছতে পারে না। সুতরাং যেখানে সরাসরি প্রত্যক্ষ ধারনা পৌঁছাতে পারে না, সেখানে আপনি কিভাবে অনুভবকে, অনুভব করতে পারেন? এটা শ্রৌত পন্থা। এটা শ্রুতি। আপনাকে বেদ থেকে জ্ঞান নিতে হবে। এবং বৈদিক জ্ঞান গুরু ব্যাখ্যা করেন। এ কারণেই আমাদেরকে শ্রী কৃষ্ণের আশ্রয়ের মধ্যে আসতে হবে, যিনি চূড়ান্ত গুরু বা তাঁর প্রতিনিধির। তাহলে সব সমস্যা, মানে অজ্ঞান, সমাপ্ত হয়ে যাবে। যৎ শোকম উচ্ছোষণাম ইন্দ্রিয়ণাম (ভ.গী ২.৮)