BN/Prabhupada 0338 - এই লোকতন্ত্রের মূল্য কি? সব মূর্খ আর দুষ্ট



Lecture on BG 1.31 -- London, July 24, 1973

চর্তুর বিদ্যা ভজন্তে মাম সুকৃতিনা। সুকৃতিনা মানে পবিত্র। কৃতি মানে পার্থিব কার্যকলাপের অভিনয়ে বিশেষজ্ঞ। সুতরাং যে পবিত্র কর্মকান্ডে নিয়োজিত, তাকে সুকৃতি বলা হয়। দুটি ধরনের কার্যকলাপ রয়েছে। অপবিত্র কার্যকলাপ, পাপী কার্যকলাপ এবং পবিত্র কার্যকলাপ। তাই যে মন্দির বা গীর্জায় প্রার্থনা করার জন্য যায়, "ঈশ্বর, আমাকে কিছু টাকা দিন" বা "হে ঈশ্বর, আমাদের প্রতিদিন রুটি দিন" অথবা "ঈশ্বর, এই সংকট থেকে আমাকে মুক্তি দিন," তারাও পবিত্র। তারা অপবিত্র নয়। অপবিত্র ব্যাক্তি, তারা কখনও কৃষ্ণের কাছে আত্মসমর্পণ করে না। ন মাম দুষ্কৃতিন মূঢ়া প্রপদ্যন্তে নরাধমা (ভ.গী ৭.১৫)। পুরুষদের এই শ্রেণী, পাপী মানুষ, শয়তান, মানবজাতির সর্বনিম্ন শ্রেণীর, মায়া, এবং অসুর দ্বারা তাদের জ্ঞান হরন হয়েছে- এই শ্রেনীর মানুষেরা কোনোদিন ভগবানের কাছে আত্মসর্মপন করে না। তাই তারা দুষ্কৃতি, অপবিত্র। অতএব কৃষ্ণ পবিত্র, কিন্তু তবুও তিনি পরিবারের ভাল চান। এই তাঁর দোষ। আর অর্জুন। পারিবারিক সমৃদ্ধি। তিনি সমাজ, বন্ধুত্ব এবং প্রেমের মাধ্যমে খুশি হতে চান। তাই তিনি বলেছেন যে ন কাংসে বিজয়াম। এটা কে বলা হয় বৈরাগ্য। শ্মশান বৈরাগ্য। এটা কে বলা হয় শ্মশান বৈরাগ্য। শ্মশান বৈরাগ্য মানে ভারত বর্ষে হিন্দুরা মৃতদেহ দাহ করে। তাই আত্মীয়রা মৃত দেহ নিয়ে দাহ করার জন্য শ্মশানে যায়, "এবং যখন শরীরটি দাহ করা হয়, সেখানে উপস্থিত সবাই, কিছু সময়ের জন্য, তারা একটু শোকাহত হয়ে যায়: "ওহ, এই শরীর, আমরা এই শরীরের জন্য কাজ করছি, এখন এটি শেষ। ": এটা ছাই হয়ে গেছে । তাই কি লাভ?" এই রকম বৈরাগ্য ত্যাগ করতে হবে। "কিন্তু যখন তারা শ্মশান থেকে আসে আবার তাদের সাধারণ কাজকর্ম শুরু করে। সে শ্মশানে গিয়ে বৈরাগী হয়ে যায়। "এবং যেই মাত্র বাড়ি আসে, আবার বেশি করে অর্থ উপার্জনের চিন্তা করতে শুরু করে, কিভাবে অর্থ উপার্জন, কিভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়, কিভাবে টাকা কামানো যায় তাই এই বৈরাগ্য কে বলা হয় শ্মশান বৈরাগ্য, তাৎক্ষনিক। সে বৈরাগী হতে পারে না। এবং তিনি বলেছেন ন কাংশে বিজয়াম (ভ.গী ১.৩১) আমি জয়ী হতে চাই না। আমি এটা চাই না। "এটা অস্থায়ী অনুভূতি। অস্থায়ী অনুভুতি। এই সমস্ত মানুষ তারা পরিবার জীবনের সাথে যুক্ত। তারা বলতে পারে, "আমি এই সুখ চাই না, খুব ভাল পদ চাই না, জয়। আমি চাই না।" কিন্তু তিনি সব কিছু চান। তিনি সব কিছু চান। কারণ তিনি জানেন না যে শ্রেয়ঃ কী। শ্রেয়ঃ হলো কৃষ্ণ। আসলে যখন একজন কৃষ্ণ বা কৃষ্ণ ভাবনামৃত লাভ করে, তখন সে বলতে পারে "আমি এটা চাই না।" তারা বলবে না যে। কেন তারা বলবে, "এইটা চাই না? এখানে কি আছে আমার? ধরুন আমার একটি রাষ্ট্র আছে। তাই এটা আমার রাজ্য? না। এটা কৃষ্ণের রাজ্য। কারন কৃষ্ণ বলেছেন ভোক্তারং যজ্ঞতপসাং সর্বোলোকমহেশ্বরম (ভ.গী ৫.২৯)। তিনি মালিক। আমরা তাঁর প্রতিনিধি হতে পারি। কৃষ্ণ চায় যে সকলে কৃষ্ণ ভাবনামৃত হোক।

তাই শ্রী কৃষ্ণের প্রতিনিধি হিসাবে রাজার কর্তব্য , যে প্রত্যেক নাগরিককে কৃষ্ণ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। তাহলে সেটা হবে তার ভালো কর্তব্য। এবং যেহেতু রাজারা এটা করেননি তাই এখন রাজতন্ত্র কোথাও নেই। আবার সম্রাট, রাজতন্ত্র যেখানে সামান্য সামান্য আছে অন্তত দেখানোর জন্য আছে, যেমন ইংল্যান্ডে, প্রকৃতপক্ষে, যদি সম্রাট কৃষ্ণ সম্পর্কে সচেতন হন, বাস্তবে কৃষ্ণের প্রতিনিধি হয়ে গেলে, তখন সমস্ত রাষ্ট্রের চেহারাটাই বদলে যায়। এটা আবশ্যক। এর জন্যই আমাদের কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন। আমরা এই তথাকথিত গণতন্ত্রকে মোটেও পছন্দ করি না। এই গণতন্ত্রের মূল্য কী? সকলে বোকা বদমাশ। তারা একজন বদমাশ এবং বোকা কে ভোট দেয় এবং সে হয়ে যায় প্রধানমন্ত্রী বা এটা বা ওটা। যেমন অনেক সময় এটা মানুষের জন্য ভালো হয় না। আমরা এই তথাকথিত গণতন্ত্রের পক্ষে নয়, কারণ তারা প্রশিক্ষিত নয়। যদি রাজা প্রশিক্ষিত হয় ... এই ছিল রাজতন্ত্রের শাসন। যেমন যুধিষ্ঠির মহারাজা বা অর্জুন বা অন্য কোনও সব রাজা। রাজর্ষি। তারাঁ ছিলেন রাজর্ষি।

ইমম বিবস্বতে যোগং
প্রক্তাবাংন অহম অব্যয়ম
বিবস্বান মনবে প্রাহ
মনুর ইক্ষ্বাকবে অব্রবীৎ
(ভ.গী.৪.১)।

এবং পরম্পরা-প্রাপ্তম ইমম রাজস্বয়ো বিদু (ভ.গী ৪.২)। রাজস্বয়ো। রাজা, রাজা মানে, তিনি একমাত্র রাজা নয়। তিনি একজন মহান ঋষি, একজন সাধু ব্যাক্তি, যেমন মহারাজ যুধিষ্টির অথবা অর্জুন। তারা সাধু ব্যাক্তি। তারা সাধারণ না, এই মাতাল রাজা বলেন, "আমার কাছে এত টাকা আছে। আমি মদ খাব আর বেশ্যা নিয়ে নাচবো।" এমন নয়। তারা ঋষি ছিলেন। যদিও তারা রাজা ছিলেন, তারা ছিলেন ঋষি। এই ধরনের রাজা চাই,রাজর্ষি। তাহলে মানুষরা সুখী হবে। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, রাজার পাপে রাজ্য নষ্ট, গৃহিণীর দোষে গৃহস্থ ভ্রষ্ট। গার্হস্থ্য জীবনে, পারিবারিক জীবনে, স্ত্রী ভাল না হলে, তাই কেউ খুশি হবে না সেই ঘরে, গৃহস্থ জীবনে, ঘরোয়া জীবনে। অনুরূপভাবে রাজ্যে, যদি রাজা অপবিত্র হয়, তাহলে সবকিছুই সবার জন্য কষ্টদায়ক হবে। এটা সমস্যা।