BN/Prabhupada 0339 - ভগবান শক্তি শালী-আমরা তার অধীন



Lecture on SB 5.5.2 -- Hyderabad, April 11, 1975

যতদিন আমরা এই জাগতিক পর্যায়ে, দেহাত্মবুদ্ধিতে থাকব, একটি পার্থক্য থাকবে: "আমি একজন ইংরেজ," "আমি আমেরিকান," "আমি ভারতীয়" "আপনি এই, সেই যে," অনেক ধরনের জিনিস, অনেক পদ আছে। অতএব, যদি আপনি আধ্যাত্মিক স্তরে উন্নতি করতে চান, তাহলে সূত্র হচ্ছে সর্বপাধি-বিনিমুক্তং। সর্বপাধি-বিনিমুক্তং তৎ-পরত্বেন নির্মলম (চৈ.চ.মধ্য.১৯.১৭০) । এটাই হচ্ছে শুরু। এর মানে হল যে শুরু হচ্ছে ব্রহ্ম ভূত স্তর দিয়ে। ব্রহ্ম ভূত ... (শ্রী.ভা.৪.৩০.২০)। একই জিনিস। নারদ পঞ্চরাত্রে, সর্বপাধি-বিনির্মুক্তং, এবং ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা (ভ.গী.১৮.৫৪)। ভগবদ গীতা, একই জিনিস।। যখনই আপনি বৈদিক সাহিত্য খুঁজে পান, তাতে কেবল একই জিনিস রয়েছে। এটি অনুমোদিত, কোন দ্বন্দ্ব নেই। জড় স্তরে, আপনি একটি বই লেখেন, আমি একটি বই লিখি, তারপর আমি আপনার সাথে মতানৈক্য, এবং আপনি আমার সাথে একমত হন না। এটি জাগতিক স্তর। কিন্তু আধ্যাত্মিক পর্যায়ে, আত্ম উপলব্ধির জন্য একটি স্তর রয়েছে। কোন ভুল নেই, কোন বিভ্রম নেই, কোন অশুদ্ধ ইন্দ্রিয় নেই এবং কোন প্রতারণা নেই। এটি আধ্যাত্মিক পর্যায়। তাই ভগবদ্গীতায় বলা হয়েছে, ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্খতি (ভ.গী.১৮.৫৪)। নারদ পঞ্চরাত্রেও একই জিনিস অনুমোদন করা হয়েছে।

সর্বপাধি-বিনিমুক্তং
তৎ-পরত্বেন নির্মলম
হৃষিকেন হৃষিকেশ
সেবনং ভক্তির উচ্যতে
(চৈ.চ.মধ্য ১৯.১৭০)।

এই পর্যায়ে আমাদের আসতে হবে, আধ্যাত্মিক পর্যায়ে, যেখানে ঋষিকেন ....

হৃষিক মানে ইন্দ্রিয়, জড় ইন্দ্রিয় এং আধ্যাত্মিক ইন্দ্রিয়। আধ্যাত্মিক ইন্দ্রিয় কি? আধ্যাত্মিক ইন্দ্রিয় অশুদ্ধ নয়। না। শুদ্ধ ইন্দ্রিয়। আমি অশুদ্ধ ইন্দ্রিয় দ্বারা চিন্তা করছি, "এই দেহটি ভারতীয়, তাই আমি ভারতের চাকরির জন্য," "এই শরীরটি আমেরিকান, তাই আমি আমেরিকার সেবা করার জন্য আছি।" এগুলি উপাধি। কিন্তু আধ্যাত্মিক ইন্দ্রিয় মানে সর্বপাধি-বিনিমুক্তং- " আমি ভারতীয় নই, আমি এখন আমেরিকান নই, আমি ব্রাহ্মণ নই, আমি একজন সুদ্র নই।" তাহলে কি আমি? যেমন চৈতন্য মহাপ্রভু বলেন, এছাড়াও শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, সর্ব-ধর্মান পরিত্যজ মাম একং...(ভ.গী.১৬.৬৬)। এই আধ্যাত্মিক পর্যায় হল যে "আমি এই ধর্ম বা ধর্মের সাথে সম্পর্কিত না। আমি শুধু কৃষ্ণের কাছে আত্মসমর্পণকারী একজন আত্মা।" এই সর্ব পাধি বিনিমুক্তং (চৈ.চ.মধ্য.১৯.১৭০)। আমরা যদি আধ্যাত্মিক বোঝার এই পর্যায়ে আসতে পারি যে, "আমি আত্মা। অহং ব্রহ্মাস্মি। আমি ভগবানের অংশাতি অংশ..." মামৈবাংশ জীব-ভূতা (ভ.গী.১৫.৭)। কৃষ্ণ বলেছেন, সকল জীব, তারা আমার অংশাতি অংশ।" মন ষষ্ঠানি ইন্দ্রিয়ানি প্রকৃতি-স্থানি কর্ষতিঃ (ভ.গী.১৫.৭) "তিনি অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছেন, মনের ও শরীর দ্বারা আচ্ছাদিত।" এই পরিস্থিতি।

তাই আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন মানুষকে শিক্ষা দিচ্ছে যে: "তুমি এই শরীর নও, মন নও, বুদ্ধিও নও, তবে এর উপরে তুমি। তুমি হচ্ছ আত্মা।" তাই কৃষ্ণ বলেছেন যে মামৈবাংশ। সুতরাং যদি কৃষ্ণ আত্মা, সর্বোচ্চ আত্মা, তাহলে আপনিও সর্বোচ্চ আত্মা। কিন্তু একমাত্র পার্থক্য হচ্ছে তিনি সর্বোচ্চ, আমরা অধস্তন। নিত্য নিত্যানাম চেতনস চেতনানাম একো হি বহুনাম বিদধতি...(ক.উ.২.২.১৩)। এই বৈদিক আদেশ। সে প্রাণী, আমরাও প্রাণী, কিন্তু সে সর্বোচ্চ এবং আমরা অধস্তন। এই হচ্ছে পার্থক্য। একো হি বহুনাম বিদধতি কামান। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থান। এই হচ্ছে আত্ম উপলব্ধি। যখন আপনি বুঝতে পারেন যে, "কৃষ্ণ বা পরমেশ্বর, বা ভগবান, যাই আপনি বলুন না কেন, তিনি পূর্ন আত্মা এবং আমরা পরমাত্মার আংশিক ভাগ, এবং তিনি পালনকর্তা, আমরা তার পালিত। তিনি শক্তিশালী, আমরা তার অধীনস্থ," তাই এটি হচ্ছে প্রথম উপলব্দধি। একে বলা হয় ব্রহ্ম-ভূত। এবং যদি আপনি ব্রহ্ম ভূত স্তরে আরও উন্নত হন, তাহলে অনেকগুলি জন্মের পরে হয়ত আপনি বুঝতে পারবেন কৃষ্ণ কী। এটা হচ্ছে...বহুনাম্‌ জন্মনাম অন্তে (ভ.গী.৭.১৯) কৃষ্ণ বলেছেন ভগবদ্গীতায়, বহুনাম জন্মনাম অন্তে জ্ঞানবান মাং প্রপদ্যতে। যখন আমরা সম্পূর্ণ জ্ঞানবান, বুদ্ধিমান হই, তখন আমাদের কাজ হচ্ছে বাসুদেব সর্বম ইতি স মহাত্মা সুদুর্লভ (ভ.গী .৭.১৯)। তারপর তিনি বুঝতে পারেন যে, বাসুদেব, বসুদেবের পুত্র, কৃষ্ণ সবকিছু। এই উপলব্ধি প্রয়োজন। এটাই কৃষ্ণ ভাবনামৃতের পূর্ণতা।