BN/Prabhupada 0579 - আমরা যেমন পোশাক পরিবর্তন করি তেমনই আত্মা দেহ পরিবর্তন করে



Lecture on BG 2.21-22 -- London, August 26, 1973

প্রদ্যুম্নঃ অনুবাদ - "হে পার্থ, যেই ব্যক্তি জানেন যে আত্মা ধ্বংস করা যায় না, অজ, নিত্য এবং অব্যয়, তিনি কীভাবে কাউকে হত্যা করতে পারেন বা কাউকে দিয়ে হত্যা করাতে পারেন?"

"একজন মানুষ যেভাবে পুরানো বস্ত্র ছেড়ে নতুন বস্ত্র পরিধান করে, তেমনই আত্মা পুরানো, অকেজো দেহ ছেড়ে নতুন দেহ গ্রহণ করে"

প্রভুপাদ: তাই এটি আরেকটি উপায়ে বোঝানো যে... খুবই সহজ ব্যাপার। যে কেউই এটা বুঝবে। বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় (গীতা ২/২২) ঠিক যেমন যখন আমাদের শার্ট, কোট ইত্যাদি পুরানো, নষ্ট হয়ে যায় আর ব্যবহার করার মতো থাকে না, তখন আমরা এটি ছেড়ে আরেকটি জামা বা কোট পরিধান করি ঠিক তেমনই আত্মা শৈশব থেকে বাল্যাবস্থায় পোশাক পরিবর্তন করছে। ঠিক যেমন একটি শিশুর জুতো আছে, কিন্তু যখন সে বালকের দেহ পাবে, সেই জুতো লাগবে না। তাকে আরেকটি জুতো নিতে হবে ঠিক তেমনিই, যখন সেই ছেলে তার দেহ পরিবর্তন করে বড় হয়, তখন তার আরেক মাপের জুতো লাগে ঠিক তেমনই এই আত্মাও দেহের পরিবর্তন করছে ঠিক যেভাবে আমরা পোশাক বদলাই বাসাংসি জীর্ণানি। জীর্ণানি মানে যখন তা আর ব্যবহার করা যায় না, পুরানো হয়ে যায় যথা বিহায়, আমরা তা ত্যাগ করি। বিহায় মানে ত্যাগ করা নবানি। নতুন একটি পোশাক। নরঃ অপরাণি গৃহ্নাতি এখানে দেহকে পোশাকের সাথে তুলনা করা হয়েছে দরজি দেহের মাপ অনুযায়ী শার্ট বা কোট কাটে। ঠিক তেমনই যদি এই জড় দেহটি একটি কোট বা শার্ট হয় তাহলে এটি চিৎ দেহের অনুযায়ী বানানো। চিন্ময় দেহটি নিরাকার নয়, রূপ ছাড়া নয় এটি যদি নিরাকারই হয় তাহলে এই দেহ বা পোশাকটির কীভাবে হাত, পা ইত্যাদি আছে? এটি একটি সাধারণ জ্ঞান। কোটের হাত বা প্যান্টের পা আছে কারণ সেই লোকটি যে এই কোটটি ব্যবহার করবে তাঁর হাত, পা আছে

তাই এটি প্রমাণ করে যে চিন্ময় দেহ নিরাকার নয় এটি কোন শুন্য নয়। এটির রূপ আছে কিন্তু সেই রূপটি এতোই ক্ষুদ্র, অণোরণীয়ানাম্‌ মহতো মহীয়ান একটি রূপ অণুর চেয়েও ক্ষুদ্র অণোরণীয়ানাম্‌ মহতো মহীয়ান । দুটি চিন্ময় রূপ আছে। একটি হচ্ছে পরমেশ্বর ভগবানের রূপ, বিরাট রূপ। মহতো মহীয়ান আর আমাদের রূপ অণোরণীয়ান্‌। অণুর চেয়েও ক্ষুদ্র। সেই কথা কঠোপনিষদে বলা আছে অণোরণীয়ানাম্‌ মহতো মহীয়ান আত্মাস্য জন্তোর্নিহিতো গুহায়াম্‌ নিহিতো গুহায়াম্‌। গুহায়াম্‌ মানে হৃদয়ে তাঁরা উভয়েই সেখানে আছে। এখন আধুনিক বিজ্ঞানে খুঁজে বের কর। পরমাত্মা এবং জীবাত্মা উভয়েই হৃদয়ে অবস্থান করছে ঈশ্বর সর্বভূতানাম্‌ হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি (গীতা ১৮/৬১) কোন ... এটা বলা হয় নি যে, "দেহের যে কোন জায়গায় তা বসা আছে" । না হৃদদেশে। হৃদয়ের অভ্যন্তরে। এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, হৃদয় হচ্ছে দেহের সমস্ত রকমের কার্যকলাপের কেন্দ্র। কার্যালয়। আর মস্তিষ্ক হচ্ছে ব্যবস্থাপক। পরিচালক হচ্ছেন কৃষ্ণ। তিনি আরেক জায়গাতেও বলেছেন, সর্বস্য চাহম্‌ হৃদি সন্নিবিষ্টো (গীতা ১৫/১৫)। সবকিছুই পরিষ্কারভাবে বলা আছে।