BN/Prabhupada 0580 - ভগবানের অনুমোদন ছাড়া আমরা আমাদের বাসনা পূর্ণ করতে পারি না



Lecture on BG 2.21-22 -- London, August 26, 1973

সর্বস্য চাহম্‌ হৃদি সন্নিবিষ্টঃ। "আমি সকলের হৃদয়ে উপবিষ্ট" সমস্ত বৈদিক শাস্ত্রে কৃষ্ণকে অনুসন্ধান কর, ভগবানকে অনুসন্ধান কর। গুহায়াম্‌ গুহায়াম্‌ মানে হৃদয়ে। সর্বস্য চাহম্‌ হৃদি সন্নিবিষ্টঃ মত্তঃ স্মৃতিঃ জ্ঞানম্‌ অপহোনম্‌ চ। (গীতা ১৫/১৫) পরম পরিচালক কৃষ্ণ সেখানে বসে আছেন এবং তিনিই সবকিছু পরিচালনা করছেন "জীব এইভাবে তার বাসনা পূর্ণ করতে চাইছে" তিনি জড়া প্রকৃতিকে নির্দেশ করছেন "এখন এই মূর্খের জন্য এইরকম একটি দেহযান প্রস্তুত কর, সে ভোগ করতে যায়, ঠিক আছে, ওকে ভোগ করতে দাও।" এটাই চলছে আমরা সবাই মূর্খ, আমরা সকলেই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আমাদের জীবন গড়তে চাইছি "আমার মনে হয়" ... তুমি কিছু একটা বাসনা করছ, যেই মাত্র তুমি কিছু ভাবতে শুরু করেছ কিন্তু আমরা ভগবানের অনুমোদন ছাড়া আমাদের বাসনা পূর্ণ করতে পারি না। তা সম্ভব নয়। কিন্তু যেহেতু আমরা জোর করছি, "আমি আমার বাসনা পূর্ণ করতেই চাই," শ্রীকৃষ্ণ অনুমোদন করেছেন, "ঠিক আছে," । ঠিক যেমন একটি শিশু কিছু একটা পাবার জন্য জোর করতে থাকে বাবা তাকে দিয়ে দেয়, "ঠিক আছে, এই নাও।" তাই আমরা এই যে সমস্ত দেহ পাচ্ছি তা সবই ভগবানের অনুমোদনের ফলে প্রাপ্ত কিন্তু তা অনিচ্ছাভরে অনুমোদন করছেন, "এই মূর্খ কেন এটি চাইছে?" এই হচ্ছে আমাদের অবস্থান। তাই অবশেষে শ্রীকৃষ্ণ বলেন, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য (গীতা ১৮/৬৬) "এইসব বদমাশি ত্যাগ কর। 'আমি এই দেহ চাই, আমি ঐ দেহ চাই, আমি এই ভাবে ভোগ করতে চাই'... এইসব কিছু পরিত্যাগ কর...

বৈদিক শাস্ত্রে আমরা দেখতে পাই যে ভগবান এবং জীবাত্মা উভয়েই তাঁরা হৃদয়ে অবস্থান করে জীবাত্মা বাসনা করছে, এবং প্রভু তা অনুমোদন করছেন আর প্রকৃতি সেই উপযোগী একটি দেহ দান করছেন "এই যে দেহ প্রস্তুত, নিন।" তাই আমাদের সমস্ত বন্ধন ও মুক্তির মূল কারণ আমাদের বাসনা। যেমন যেমন বাসনা করব। যদি তুমি চাও এই জন্ম মৃত্যু জরা ব্যাধির থেকে মুক্তি পেতে, তাহলে তা প্রস্তুত। আর যদি এইসব ঝামেলা আঁকড়ে থাকতে চাও, দেহের পরিবর্তন বাসাংসি জীর্ণানি... কারণ তুমি জড় দেহে চিন্ময় আনন্দ পেতে পারবে না তুমি কেবল জড় দেহ দিয়েই জড় জগতকে ভোগ করতে পারবে আর যদি চিন্ময় আনন্দ পেতে চাও, তাহলে তোমাকে চিন্ময় দেহ পেতে হবে কিন্তু যেহেতু আমাদের কাছে কোন চিন্ময় আনন্দ বা চিন্ময় জীবনের ধারণাই নেই আমরা কেবল এই জগতটাকেই ভোগ করে যেতে চাইছি পুনঃ পুনশ্চর্বিত চর্বণানাম্‌ (ভাগবত ৭/৫/৩০) চর্বিত বস্তু চর্বণ সেই একই মৈথুন সুখ, একই মহিলা ও পুরুষ বাড়িতে ইন্দ্রিয় ভোগ করছে সেই একই স্ত্রী পুরুষ আবার নগ্ন নৃত্য দেখতে যাচ্ছে। বস্তুটি একই। মৈথুন। এখানেই হোক আর ওখানেই হোক কিন্তু ওরা ভাবছে "যদি আমি থিয়েটার বা নগ্ননাচ দেখতে পারি, তাহলে খুব আনন্দ হবে" তাহলে একে বলা হবে পুনঃ পুনশ্চর্বিত চর্বণানাম্‌। চর্বিত বস্তুর চর্বণ। সেই একই মৈথুন জীবন বাড়িতেও, চর্বণ, আবার নগ্ন ক্লাবে গিয়েও সেই একই চর্বণ। চর্বিত বস্তুর চর্বণ। এতে কোন রস নেই ওতে কোন আনন্দ নেই, রস নেই, তাই ওরা হতাশ হচ্ছে। কারণ বস্তুটা একই। ঠিক যেমন তুমি একটি আখ খেয়ে চিবিয়ে রস বের করে দিচ্ছ এবং আবারও তা চিবিয়ে যাচ্ছ। কি পাবে এতে? কিন্তু তারা এতোই মূর্খ, এতোই বুদ্ধিহীন যে সেই কথা তারা জানে না ওরা সেই রস বা আনন্দ পেতে চাইছে যা তারা ইতিমধ্যেই খেয়েছে, স্বাদ নিয়েছে, পুনঃ পুনশ্চর্বিত চর্বণানাম্‌ (ভাগবত ৭/৫/৩০)। অদান্ত গোভির্বিশতাম্‌ তমিস্রং। পুনঃ পুনশ্চর্বিত চর্বণানাম্‌। একটি মানুষ.... তোমরা দেখবে যে, যখন কুকুরেরা যৌনসঙ্গ করে , ওদের কোন লজ্জা নেই অনেক কামুক লোকেরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখে দেখে মানে ওরা ভাবে যে, "আমিও যদি এইভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যৌন সঙ্গ করতে পারতাম" এবং কখনও আবার ওরা তাই করে। এটাই চলছে, পুনঃ পুনশ্চর্বিত চর্বণানাম্‌ (ভাগবত ৭/৫/৩০)