BN/Prabhupada 0596 - আত্মাকে টুকরো করা যায় না



Lecture on BG 2.23 -- Hyderabad, November 27, 1972

যস্যৈকনিশ্বসিতকালমথাবলম্ব্য
জীবন্তি লোমবিলোজা জগদন্ডনাথাঃ
বিষ্ণুর্মহান্‌ স ইহ যস্য কলাবিশেষো
গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি।।

তো এখানে, এই পারমার্থিক উপলব্ধির সুচনায়, এই আত্মা চিন্ময় আত্মাকে টুকরো টুকরো করে কাটা যায় না। নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবকঃ। (শ্রীমদ্ভগবতগীতা 2.23) এখন বোঝার চেষ্টা কর। আমরা ভাবছি, আধুনিক বৈজ্ঞানিকেরা মনে করছে, যে, সূর্য গ্রহে কোন জীবন থাকতে পারেনা। না। সেখানেও জীবন আছে। বৈদিক সাহিত্য থেকে আমরা জানতে পারি যে সেখানেও জীব আছে। সেখানেও আমাদের মতো মানুষ রয়েছে। কিন্তু তারা আগুন দিয়ে তৈরি। এই যা। যেহেতু আমাদের ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা রয়েছে যে " আগুনে কিভাবে জীব বেঁচে থাকতে পারে?" এই সমস্যার উত্তরে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে নৈনম্‌ দহতি পাবকঃ। (একপাশে) তুমি ওখানে বসেছ কেন? এখানে আস। নৈনম্‌ দহতি পাবকঃ। চিন্ময় আত্মাকে পোড়ানো যায়না। যদি এটাকে পোড়ানো যেতো ,তাহলে আমাদের হিন্দু রীতি অনুসারে, আমরা দেহটিকে পুড়িয়ে ফেলি, তখন আত্মাকেও পোড়ানো হতো। আসলে নাস্তিকেরা এভাবেই চিন্তা করে যে, যখন শরীরটিকে পোড়ানো হয় তখন সবকিছুই শেষ হয়ে যায়। মস্ত বড় বড় সব অধ্যাপকেরা তারাও সব এভাবেই চিন্তা করে। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ এখানে বলেছেন, নৈনম্‌ দহতি পাবকঃ (শ্রীমদ্ভগবতগীতা 2.23) " এটিকে পোড়ানো যায়না।" অন্যথায় এটি কিভাবে বিদ্যমান থাকে? ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ২.২০)। সবকিছুই খুব পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আত্মাকে পোড়ানো যায়না কিংবা টুকরো টুকরো করে কাটা যায় না। এরপর ন চৈনং ক্লেদয়ন্ত্যাপো। (শ্রীমদ্ভগবতগীতা 2.23) না এটিকে জলে ভিজানো যায়। এটিকে জল দিয়েও ভিজানো যায় না। এই জড় জগতে আমরা দেখতে পাই তা যত কঠিন জিনিসই হোক না কেন......। ঠিক যেমন পাথর বা লোহা, এগুলোকেও টুকরো করে কাটা যায়। ভিন্ন ধরণের যন্ত্র বা উপকরণ রয়েছে। এটিকে কাটা যায়... যেকোনো জিনিসকে টুকরো টুকরো করে কাটা যায় যেকোনো কিছুকে গলানোও যায়। এতে শুধুমাত্র ভিন্ন ধরণের তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়, কিন্তু সবকিছুকেই পোড়ান বা গলানো যায়। এরপর যেকোনো কিছুকে ভিজানো যায়। কিন্তু এখানে এটি বলা হয়েছে যে, ন চৈনং ক্লেদয়ন্ত্যাপো ন শোষয়টি মারুতঃ। এটিকে বাস্পেও পরিণত করা যায় না। এই হচ্ছে নিত্যতা। এর মানে কোন জাগতিক অবস্থাই আত্মাকে প্রভাবিত করতে পারেনা। অসঙ্গোহয়ম্‌ পুরুষঃ।

বেদে বলা হয়ছে, জীবাত্মা সর্বদাই এই জড় জগতের কোন কিছুর সংস্পর্শ ছাড়াই থাকে। এটি শুধু একটি আবরণ মাত্র। এটি সংস্পর্শে থাকে না। ঠিক যেমন আমার বর্তমান দেহটি, এই দেহটি, যদিও দেহটি শার্ট এবং কোর্ট দ্বারা আবৃত হয়ে রয়েছে কিন্তু এটি সংযুক্ত নয়। এটি মিশে যায়নি। দেহ সর্বদাই স্বতন্ত্র বা আলাদা রয়েছে। একইভাবে আত্মাও সর্বদাই জড় আবরণ থেকে পৃথক থাকে। এটি শুধুমাত্র বিভিন্ন পরিকল্পনা আর বাসনার কারণে যা সে এই জড়া প্রকৃতির ওপর প্রভুত্ত করার জন্য তৈরি করেছিল। প্রত্যেকেই তা দেখতে পারে।