BN/Prabhupada 0712 - শ্রীকৃষ্ণ আদেশ দিলেন - পাশ্চাত্যে যাও, ওদের শিক্ষা দাও



Lecture on SB 1.16.22 -- Hawaii, January 18, 1974

যখন তুমি কৃষ্ণভাবনাময় হবে, তখন তোমার জীবন সার্থক হবে। এবং পূর্ণরূপে কৃষ্ণভাবনাময় হলে, এই দেহ ত্যাগ করার পর ত্যাক্তা দেহম্‌ পুনর্জন্ম নৈতি মামেতি (গীতা ৪/৯), আর কোন জড় দেহ গ্রহণ করতে হবে না। এই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। আর যারা গুরু, পিতা, বা রাষ্ট্রের ন্যায় অভিভাবক আছেন, তাঁদের কর্তব্য হচ্ছে অধীনস্থদের মঙ্গল দেখা যাতে করে সে ভালভাবে কৃষ্ণভাবনামৃতে উন্নতি করতে পারে। সেটিই হচ্ছে আমাদের দায়িত্ব। যখন তা করা হয় না... ঠিক যেমন... আমাদের এতদূর আসার কোন দরকার ছিল না। আমি শ্রীবৃন্দাবন ধামে শান্তিপূর্ণ ভাবে বাস করতে পারতাম, এখনও সেখানে রাধারমণ মন্দিরে আমার জন্য দুটি ঘর আছে। কিন্তু যেহেতু কৃষ্ণভাবনামৃত রয়েছে... কৃষ্ণভাবনামৃত মানে ভগবানের সেবা করা। সেটিই কৃষ্ণ ভাবনামৃত। তাই শ্রীকৃষ্ণ আদেশ করলেন, "তুমি এখানে কোন সমস্যা ছাড়াই শান্তিতে বসে আছ। না, তোমাকে পাশ্চাত্যদেশে যেতে হবে। ওদের শিক্ষা দাও"। তাই সেটিও কৃষ্ণভাবনামৃত, উন্নত কৃষ্ণ চেতনা। অজ্ঞানদের কৃষ্ণভাবনামৃত বিতরণের সেবা করা। সেটি আরও উন্নত। কারণ ব্যাসদেব দেখেছিলেন যে মায়া বা ছায়াশক্তি বা অন্ধকার ... যয়া সম্মোহিত জীবা। সারা জগতের বদ্ধ জীবেরা মায়ার দ্বারা বিমোহিত হয়ে আছে। যয়া সম্মোহিত জীবা আত্মানম্‌ ত্রিগুণাত্মকম্‌ (ভাগবত ১/৭/৫) এই দেহকে নিজের স্বরূপ মনে করা হল মূর্খতা, বোকামি। যস্যাত্মা বুদ্ধি কুণপে ত্রিধাতুকে (ভাগবত ১০/৮৪/১৩) যে মনে করে "আমি আমার এই দেহ" তাহলে সে একটা কুকুর বেড়ালের চেয়ে উন্নত নয়। যত ভালভাবেই সে পোশাক পড়ুক না কেন, সে একটা কুকুর, সে একটা বেড়াল। ব্যাস্‌। পশুর চেয়ে উন্নত নয়। কারণ তার নিজের সম্পর্কে কোন জ্ঞানই নেই। (পাশ থেকে) - ওটা কোর না। যস্যাত্মা বুদ্ধি কুণপে ত্রিধাতুকে ... (পাশ থেকে) - ওভাবে বসা উচিত নয়? হ্যাঁ। স্বধী কলত্রাদিষু ভৌমইজ্যধী। এসবই এখন চলছে। লোকেরা ভুল ধারনা নিয়ে বসে আছে যে "আমি এই দেহ " ঠিক কুকুর বেড়ালের মতো। "আর আমার দেহের সাথে সম্পর্কিত সবকিছুই আমার"। স্বধী কলত্রাদিষু। "আমার সাথে এদের সম্পর্ক আছে, এই মহিলার। তাই সে আমার স্ত্রী অথবা আমার রক্ষণাবেক্ষণে আছে।" এইরকম কিছু ধারণা। সন্তানেরাও -একইভাবে দেহগত ধারণা। চিন্ময় আত্মা সম্পর্কে ওদের কোন ধারণাই নেই। কেবল দেহ আর দেহ। "যেহেতু এই দেহটি এই নির্দিষ্ট ভূমিতে জন্ম নিয়েছে , তাই এটি আমার দেশ"। ভৌম ইজ্যধী। এই কারণে সেই দেশের জন্য নিজের কত কত মূল্যবান শক্তি তারা উপচয় করে কারণ ঘটনাক্রমে ঐ দেশে তাদের জন্ম হয়েছে এই সবকিছু শ্রীমদ্ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে। যস্যাত্মা বুদ্ধি কুণপে ত্রিধাতুকে স্বধী কলত্রাদিষু ভৌম ইজ্যধী (ভাগবত ১০.৮৪.১৩) ভৌম মানে ভূমি। তো এসবই চলছে। একে বলে মায়া। এই সবকিছুর সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে তার কোন সম্পর্কই নেই। যখন কেউ বুঝতে পারে যে, "এই সব বস্তুর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, এই দেশ, এই স্ত্রী, এই সন্তান, এই সমাজ,... এসবই মায়া।" এই চেতনাকেই বলা হয় মুক্তি।