BN/Prabhupada 0718 - পুত্র এবং শিষ্যেদের সবসময় শাসন করা উচিৎ
Morning Walk -- February 1, 1977, Bhuvanesvara
ভক্ত(১)ঃ শ্রীল প্রভুপাদ, ঠিক যেমন সেই ছুরির গল্পটি আমরা কীভাবে বিজ্ঞানীদের শ্রীকৃষ্ণকে স্বীকার করে নিতে জোর করতে পারি? আমরা কীভাবে বিজ্ঞানীদের শ্রীকৃষ্ণকে স্বীকার করতে জোর করতে পারি? সমস্যাটি মনে হচ্ছে...
শ্রীল প্রভুপাদঃ না না। এটি তো বাস্তব সত্য। যদি একটা জিনিস বাস্তব সত্য হয়, তাহলে তুমি তো জোর করতেই পার। আর যদি তা বাস্তব সত্য না হয়, তবে হবে একগুঁয়েমি। যদি এটি বাস্তব হয় তাহলে তুমি জোর করতেই পার, ঠিক যেমন বাবা সন্তানকে জোর করেন, "স্কুলে যাও"। কারণ তিনি জানেন যে শিক্ষাগ্রহণ করা ছাড়া তাঁর সন্তানের জীবনটা হতাশায় ভরে যাবে, তাই তিনি জোর করতে পারেন। আমাকে জোর করা হোত। আমি স্কুলে যেতে চাইতাম না। হ্যাঁ। (হাসি) আমার মা জোর করতেন। আমার বাবা এই বিষয়ে শিথিল ছিলেন। কিন্তু আমার মা জোর করতেন। তিনি এমনকি আমাকে টেনেহিঁচড়ে স্কুলে নিয়ে যাবার জন্য একজন লোকও রেখেছিলেন। তাই জোর করাটা দরকার আছে।
গুরুকৃপাঃ কিন্তু সেখানে তাঁদের কর্তৃত্ব ছিল। তাঁরা তো আপনার কর্তৃপক্ষ ছিলেন।
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ।
গুরুকৃপাঃ কিন্তু ওরা তো আমাদের কর্তৃপক্ষ বলে মেনে নেয় না। তারা বলে "আমি তোমাদের সমান। আসলে আমি বরং তোমার চেয়ে বেশি জানি।"
শ্রীল প্রভুপাদঃ সেটি আরেকটি মূর্খামি। আরেক ধরণের মূর্খামি। পিতা-মাতা, তাঁরা তো স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবক। তাঁরা জোর করতে পারেন।
স্বরূপ দামোদরঃ আমাদের তাঁদেরকে উচ্চতর জ্ঞানের উপলব্ধি দিতে হবে, জ্ঞানের উন্নত স্তরটি জানাতে হবে।
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বাচ্চা ছেলেটি মূর্খ থাকতে পারে, কিন্তু বাবা মা তাঁদের সন্তানকে মূর্খ দেখতে পারেন না। তাঁরা জোর করতে পারেন। সরকারও পারে। নয়তো মিলিটারি শক্তি থাকে কেন? পুলিশ শক্তি থাকে কেন? যদি তুমি আইনের বাইরে যেতে চাও, তোমাকে বাধ্য হতে হবে আইন মানতে। জোর করাটা প্রয়োজন রয়েছে।
ভক্ত (১)ঃ কিন্তু সেই শিশুকে প্রথমে দেখতে হবে যে স্কুলে যাওয়ার মধ্যে তাঁর মঙ্গল রয়েছে।
শ্রীল প্রভুপাদঃ শিশু ওর মঙ্গল দেখতে পায় না। সে তো একটা মূর্খ। তাঁকে জুতো দিয়ে পেটানো উচিত। তখন সে দেখবে। আর নয়তো শিশু তার নিজের ভাল বুঝবে না। পুত্রম্ চ শিষ্যম্ চ তাড়য়েৎ ন তু লালয়েৎ (চাণক্য পণ্ডিত) "সন্তান এবং শিষ্যদেরকে সর্বদা শাসন করতে হয়" চাণক্য পণ্ডিত সেটি বলেছেন। "কখনও ওদের আদর দিয়ে মাথায় তুলতে নেই"। লালনে বহবো দোষাঃ তাড়নে বহবো গুণাঃ ... "যদি তুমি ওদের লাই দাও, তাহলে ও উচ্ছনে যাবে। আর যদি তুমি ওদের শাসন কর, তবে সে ভবিষ্যতে খুব ভাল কেউ হতে পারবে। তাই শিষ্য হোক বা সন্তান, তাদের সবসময় শাসন করা উচিত"। এটিই হচ্ছে চাণক্য পণ্ডিতের নির্দেশ। ওদের লাই দেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
গুরুকৃপাঃ লোকেরা তোষামোদ পেতে ভালবাসে। কেউ তাদের কড়া কথা বলুক ওরা সেটা পছন্দ করে না।
শ্রীল প্রভুপাদঃ সেটিই হচ্ছে শিষ্যের অবস্থান। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেনঃ গুরু মোরে মূর্খ দেখি (চৈতন্য চরিতামৃত আদি ৭/৭১) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ছিলেন স্বয়ং ভগবান। এবং তিনি এই কথা বলেছেন "আমার গুরুমহারাজ আমাকে দেখে বললেন আমি একটা মূর্খ, এক নাম্বার মূর্খ"। শাসন। সেটিই দরকার। চাণক্য পণ্ডিত, একজন মহান নীতিশাস্ত্রকার, তিনি উপদেশ দিয়েছেন, তাড়য়েন্ ন তু লালয়েৎঃ "ওদের সবসময় শাসন করতে হবে। নয়তো ওরা নষ্ট হয়ে যাবে।"
স্বরূপ দামোদরঃ বুদ্ধিমান ছেলে তা জানে যে তার জন্য শাসন উপকারী।
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ হ্যাঁ।