BN/Prabhupada 0741 - কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের উদ্দেশ্য - মানব সমাজকে খুঁটিয়ে দেখা
Lecture on BG 4.13 -- Bombay, April 2, 1974
তথা দেহান্তরপ্রাপ্তি। দেহিনোহস্মিন্ যথা দেহে (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ২.১৩)। এটি হচ্ছে জ্ঞানের প্রথম উপলব্ধি, কিন্তু মানুষ বোঝে না যে, দেহের ভিতরে আত্মা রয়েছে। তারা এত বোকা। তাই শাস্ত্রে তাদেরকে বলা হয়েছে, স এব গোখরঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১০.৮৪.১৩)। "এই শ্রেণীর মানুষেরা গরু এবং থেকে কোন অংশে উন্নত নয়।" তাই তুমি কতগুলো পশুর পালের মধ্যে থেকে সুখী হতে পার না। যার কারণে বর্তমান সময়ে মানুষ খুব বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। কোন সংযত জীবন নেই, ধীর। তুমি যদি এই সমাজে শান্তিপূর্ণ জীবন চাও, তাহলে তোমাকে এই সমস্ত কার্যাবলী অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। চাতুর্বর্ণং ময়া সৃষ্টং (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৪.১৩)। এখানে অবশ্যই ব্রাহ্মণ শ্রেণীর মানুষ, ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্য শ্রেণীর মানুষ থাকতে হবে।
বৈশ্য... সাধারণত বৈশ্য বলতে আমরা বুঝি, বৈশ্য বলতে ব্যবসায়ী শ্রেণীর মানুষকে বোঝায়। না। বর্তমান সময়ের বৈশ্যরা হচ্ছে শূদ্র, শূদ্রদের থেকেও নিচে। কেন? কারণ বৈশ্যদের কাজ হচ্ছে কৃষিগৌরক্ষ্যবাণিজ্যং বৈশ্যকর্ম স্বভাবজম্ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৮.৪৪)। বৈশ্য অবশ্যই খাদ্যশস্য উৎপাদন করবে, কিন্তু তারা তাতে আগ্রহী নয় তারা নাট, বল্টু, চাকা, গুডহুইল চাকা, গুডহুইল চাকার জন্য কারখানা খোলার ব্যাপারে আগ্রহী। তাহলে এখন তুমি চাকা আর নাট-বল্টু খাও। না, তুমি তা খেতে পারবে না। তোমাকে অন্ন খেতে হবে আর চাউল হচ্ছে ১০ টাকা কিলো। ব্যাস্। কারণ কোন বৈশ্য খাদ্যশস্য উৎপাদন করছে না।
তারা তাদের ভুলটা দেখতে পারছে না। তারা শুধু চিৎকার, চেঁচামেচি করছে, "ওহ্, এর দাম বেড়ে গিয়েছে"। দাম কেন বাড়বে না? মুম্বাই শহরে লক্ষ লক্ষ লোক আছে। কে খাদ্যশস্য উৎপাদন করছে? কিন্তু তারা বৈশ্য বলে পরিচিত। কি ধরণের বৈশ্য? কোন ব্রহ্মণ্য সংস্কৃতি নেই; কোন মেধা নেই। কোন ক্ষত্রিয় নেই যে তোমাকে সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। অসংখ্য ত্রূটি রয়েছে।
তাই তোমরা যদি তোমাদের জীবনকে পুনর্গঠন করতে চাও, সমাজকে, মানব সমাজকে পুনরায় সাজাতে চাও, জাতীয় অথবা আন্তর্জাতিকভাবে - সবকিছু এখানে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক - তাহলে তোমাদেরকে শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ গ্রহণ করতে হবে। এটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের উদ্দেশ্যঃ সার্বিকভাবে, পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে মানব সমাজকে ঢেলে সাজান। আমরা কোন কিছুই উদ্ভাবন করিনি, বিভিন্ন পদার্থের মিশ্রণ মাত্র। এটি খুবই বিজ্ঞানসম্মত। তুমি যদি প্রকৃতই তোমার জীবনের উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে চাও, তাহলে তোমাকে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার এই উপদেশ গ্রহণ করতে হবে, পরমেশ্বর ভগবান নিজে তা বলেছেন, খুবই বিজ্ঞানসম্মত আর কোন ত্রূটি ছাড়াই।
যদি আমি কিছু বলি তাহলে সেখানে অনেক ভুল-ভ্রান্তি থাকবে, কারণ আমি অসম্পূর্ণ। আমাদের প্রত্যেকেই অসম্পূর্ণ। আমরা ভুল করি। মানুষ মাত্রই ভুল করে। এমন কোন মানুষ নেই যে বড় গলায় বলতে পারবে যে "আমি কখনো ভুল করিনি।" এটি সম্ভব নয়। তুমি অবশ্যই ভুল করবে। আবার কখনও কখনও আমরা বিভ্রান্ত হই, প্রমাদ। আমরা সবাই, কারণ আমরা আমাদের এই দেহটিকেই "আমি" বলে মনে করি, যেটি আমি নই। এটিকে বলে প্রমাদ। ভ্রম, প্রমাদ। এরপর বিপ্রলিপ্সা। আমি ভুলে যাই ,আমি ভুল করি, আমি বুদ্ধিভ্রষ্ট হই, আমি মোহগ্রস্থ হই। তবুও আমি শিক্ষকের পদ গ্রহণ করেছি। এটি হচ্ছে প্রতারণা। তুমি যদি ত্রূটিযুক্ত হও, যদি তুমি তোমার জীবনে অনেক ভুল করে থাক, তাহলে তুমি কি করে শিক্ষক হতে পার? তুমি একজন প্রতারক। কেউই শিক্ষক নয়, কারণ নিখুঁত না হলে তুমি কি করে শিক্ষক হতে পার? তাই এমনটি চলছে।