BN/Prabhupada 0740 - আমাদের শাস্ত্রের দ্বারা দেখতে হবে



Lecture on CC Adi-lila 1.7 -- Mayapur, March 31, 1975

অদ্বৈতমচ্যুতমনাদিমনন্তরূপম। এই ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু হচ্ছেন সেই ব্যাক্তি যিনি প্রত্যেকের হৃদয়ে, প্রতিটি জীবের হৃদয়ে অবস্থিত। ঈশ্বরঃ সর্বভূতাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি (শ্রীমদ্ভগবদ্গী‌তা ১৮.৬১)। অন্তর্যামী ঈশ্বর, যিনি প্রত্যেকের হৃদয়ে অবস্থিত, তিনি হচ্ছেন এই ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু। শুধুমাত্র প্রতিটি জীবের হৃদয়েই নয়, তিনি প্রতিটি পরমাণুর মধ্যেও রয়েছেন। অণ্ডান্তরস্থপরমাণুচয়ান্তরন্তরস্থং... পরমাণু। পরমাণু মানে অতি ক্ষুদ্র কণা। এইভাবে বিষ্ণুর বিস্তার রয়েছে। এটি আমাদের জন্য অকল্পনীয়, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় আমরা শাস্ত্র থেকে এর আংশিক অনুধাবন করতে পারি। অন্যথায়, আমরা কল্পনাও করতে পারব না এই ব্যাপার গুলো কিভাবে ঘটছে, কিন্তু ঘটছে। আমাদেরকে গ্রহণ করতে হবে। শাস্ত্র চক্ষু। আমাদেরকে শাস্ত্রের পাতার মধ্য দিয়ে দেখতে হবে। অন্যথায় এটি সম্ভব নয়।

যদি আমরা বিষ্ণতত্ত্ব সম্পর্কে জানতে চাই, শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে জানতে চাই, তাঁর সুমহান অবস্থান সম্পর্কে, তাহলে শাস্ত্রে এ সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে। আর এগুলোকে যদি আমরা যথাযথভাবে গ্রহণ করি, কোন ভুল ব্যাখ্যা ছাড়াই, নিজেদের কোন অতি বুদ্ধি না দেখিয়ে ... এটি সম্ভব নয়। আমাদেরকে স্বীকার করতেই হবে। তাই শাস্ত্রের নির্দেশ হচ্ছে যে, তোমাকে শাস্ত্র বাক্য গ্রহণ করতে হবে। ভগবতগীতায়ও বলা হয়েছে যে, যঃ শাস্ত্রবিধিমুৎসৃজ্য বর্ততে কামকারতঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গী‌তা ১৬.২৩)। "তুমি যদি শাস্ত্রের নির্দেশ না মান, আর নিজে নিজেই কিছু তৈরি কর," তাহলে ন সিদ্ধিম্‌ স অবাপ্নোতি, "তাহলে তুমি কখনই সিদ্ধি লাভ করতে পারবে না।" আমাদেরকে শাস্ত্রের অনুশাসন মেনে চলতে হবে; অন্যথায় শ্রীকৃষ্ণের মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানকে জানার কোনই বিকল্প নেই। তিনি কিভাবে বিভিন্ন রূপে নিজেকে বিস্তার করেন, বিষ্ণু রূপে, নারায়ণ রূপে, মাঝে মাঝে তারা তর্ক করে যে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন শ্রীবিষ্ণুর অবতার। এটিও সত্য। চৈতন্য চরিতামৃতে আমরা পাই... এইভাবে সত্য যে, যখন কোন অবতার আসেন, তিনি ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণুর মধ্য দিয়ে আসেন। কিন্তু ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণের আংশাবতার। বিষয়টি খুব জটিল, কিন্তু আমরা যদি শাস্ত্রকে অনুসরণ করি আর তা গ্রহণ করি, তাহলে কিছু পরিষ্কার ধারণা আমরা পাব।

তাই নিত্যানন্দ রাম..... যস্যাংশ স নিত্যানন্দ রামঃ। নিত্যানন্দ হচ্ছেন বলরাম। তাই তাঁকে বলা হয় নিত্যানন্দাখ্যা রামঃ। ঠিক যেমন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু... কৃষ্ণায় কৃষ্ণ চৈতন্য নাম্নে। "আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম নিবেদন করি শ্রীকৃষ্ণকে, যিনি অধুনা শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য নামে আবির্ভূত হয়েছেন।" তিনি শ্রীকৃষ্ণ। একইভাবে নিত্যানন্দ প্রভু হচ্ছেন বলরাম। বলরাম হইল নিতাই। তাই এখানে বলা হয়েছে, নিত্যানন্দাখ্যা রামঃ। "তিনি হচ্ছেন রাম, বলরাম, কিন্তু অধুনা তিনি নিত্যানন্দ নামে আবির্ভূত হয়েছেন।"

অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ হরিবল! (সমাপ্ত)