BN/Prabhupada 0746 - আমরা কয়েক প্রজন্ম চাই যারা কৃষ্ণভাবনামৃতকে প্রচার করবে
Lecture on SB 1.8.22 -- Los Angeles, April 14, 1973
যেই মাত্র তুমি হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করতে শুরু করবে, তৎক্ষণাৎ তুমি শ্রীকৃষ্ণকে অনুভব করতে পারবে। যখনই তুমি পদ্ম ফুল দেখবে, যদি তুমি এই শ্লোকটি শুনো... এই সংস্কৃত শ্লোকটির অর্থ হচ্ছে আত্মোপলব্ধি করা। এটি এমন নয় যে শুধুমাত্র আমাদের গ্রন্থগুলো বিক্রি করা হচ্ছে কথা। তোমাদের প্রত্যেককেই...... আমরা বার বার এই শ্লোকটি আলোচনা করি, যাতে করে তোমরা এই মন্ত্রগুলো জপ করতে আগ্রহী হও। এমন নয় যে শুধু গ্রন্থগুলো ধরে রাখা...... "আমি খুব বিজ্ঞ পণ্ডিত।" কি ধরণের বিজ্ঞ পণ্ডিত? "যদি আমি গ্রন্থ পাই ,তাহলে আমি কথা বলতে পারব।" এটি পাণ্ডিত্য নয়। তোমাকে কীর্তন করতে হবে।
তাই আমরা আমাদের ডালাসের শিশুদের শুধু সংস্কৃত বলতে শিখাচ্ছি। তাদের অন্য আর কিছু করার নেই। তাদেরকে প্রযুক্তিবিদ হতে যেতে হবে না, অথবা প্রত্যেকের দাস। না। আমরা কিছু প্রজন্ম চাই যারা কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করবে। তাই তারা যদি শুধু ইংরেজি আর সংস্কৃত শিখতে পারে , তাহলে তারা এই গ্রন্থগুলো পড়তে সক্ষম হবে, আর এটাই যথেষ্ট। আমরা আর কিছু চাই না। সব জ্ঞান এর মধ্যে রয়েছে। সারা পৃথিবী জুড়ে যে জ্ঞান রয়েছে, শ্রীমদ্ভাগবতমে তার সব কিছুই রয়েছে। এখানে রয়েছে সাহিত্য, কবিতা, দর্শন, এখানে আছে ধর্ম, ভগবানের প্রতি ভালোবাসা, জ্যোতির্বিদ্যা। সব কিছুই এখানে আছে। শ্রীমদ্ভাগবত হচ্ছে অমল পুরাণ। বিদ্যা ভাগবতাবধিঃ। যদি কেউ শুধুমাত্র ভাগবত অধ্যয়ন করে, তবে তাঁর জ্ঞান হবে সর্বোচ্চ। বিদ্যা ভাগবতাবধিঃ। এখানে সর্বোচ্চ বা চূড়ান্ত কিছু আছে। তাই বিদ্যা শিক্ষার জন্য এই শ্রীমদ্ভাগবতম। যদি কেউ শ্রীমদ্ভাগবতম অধ্যয়ন করে , তবে সে প্রত্যেকটি বিষয়ে বুদ্ধিমান হবে।
তাই আমরা তোমাদের দেশে একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে চাই। যাতে করে ভবিষ্যতে শ্রীমদ্ভাগবতমের ওপর তাঁরা অনর্গল প্রবচন দিতে পারে আর সারা পৃথিবী জুড়ে প্রচার করতে পারে। এবং তোমাদের দেশ রক্ষা পায়। এটিই আমাদের কর্মসূচী। আমরা তোমাদের দেশকে শোষণ করেত আসিনি বরং সারগর্ভ কিছু দিতে এসেছি। এই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। তাই শ্রীমদ্ভাগবতম অধ্যয়ন কর, শ্লোকগুলো সুন্দরভাবে উচ্চারণ কর। তাই আমরা পুনরাবৃত্তি করছি। তোমরা রেকর্ড শোন এবং পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা কর। শুধু মন্ত্র জপ করার মাধ্যমে তোমরা পবিত্র হবে। শুধু জপের মাধ্যমে...... যদি তুমি এর একটি অক্ষরও নাও বুঝ, শুধু জপ করে যাও, এই শব্দ তরঙ্গের এমন ক্ষমতা রয়েছে। শৃন্বতাং স্বকথাঃ কৃষ্ণঃ পুণ্যশ্রবণকীর্তনঃ। (শ্রীমদ্ভাগবত ১.২.১৭)। তুমি যদি শুধু এই শ্লোকগুলো কীর্তন কর, উচ্চারণ কর, তাহলে তা পুণ্যশ্রবণকীর্তনঃ। বোঝার তো প্রশ্নই আসেনা। পুণ্যশ্রবণকীর্তনঃ- পুণ্য মানে পুণ্য, শ্রবণ মানে শোনা, আর কীর্তনঃ মানে কীর্তন করা। যিনি এই শ্লোকগুলো শ্রবণ এবং কীর্তন করেন, তিনি আপনা থেকেই পুণ্যবান হচ্ছেন। ধার্মিক। পুণ্যবান হওয়ার জন্য একজনকে অনেক চেষ্টা বা প্রয়াস করতে হয়, এটা করতে হয়, সেটা করতে হয়, কিন্তু তুমি যদি শুধুমাত্র শ্রীমদ্ভাগবত আর ভগবতগীতার এই শ্লোকগুলো শ্রবণ কর। তাই প্রতিটি মন্দিরে কঠোর নীতি অনুসারে, শ্রবণ এবং কীর্তনের জন্য পাঠের আয়োজন করা উচিত। শ্রবণ এবং কীর্তন ছাড়া নেতা হওয়া অসম্ভব। পার, জড়-জগতে তুমি নেতা হতে পার, কিন্তু চিন্ময় জগতে নয়।