BN/Prabhupada 0751 - কেবল সুস্থ থাকার জন্য আহার গ্রহণ করতে হবে



Lecture on SB 1.8.37 -- Los Angeles, April 29, 1973

প্রভুপাদঃ সবাই কাশছে কেন? সমস্যাটা কি? গতকালও আমি শুনতে পেয়েছি। কি সমস্যা হয়েছে?

ভক্তঃ মনে হয় সবার ঠাণ্ডা লেগেছে।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ?

ভক্তঃ মনে হচ্ছে চারদিকে সবার সর্দিকাশি হচ্ছে, অনেক মানুষের।

প্রভুপাদঃ কিন্তু তোমাদের কি যথেষ্ট গরম কাপড় নেই, যার কারণে তোমাদের ঠাণ্ডা লাগছে? তোমাদের অবশ্যই এগুলোর ব্যবস্থা করা উচিত। তোমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া উচিত। যুক্তাহারবিহারস্য যোগ ভবতি সিদ্ধি (শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৬.১৭)। শ্রীমদ্ভগবদগীতায় বলা হয়েছে, যুক্তাহার। শুধু স্বাস্থ্যকে সুন্দর রাখার জন্য তোমাদের খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। একইভাবে, শরীরের অন্যান্য প্রয়োজন গুলোরও যত্ন নেয়া উচিত। যদি তুমি অসুস্থ হয়ে পড়, তাহলে কিভাবে কৃষ্ণভাবনামৃত চালিয়ে যাবে? ঠিক যেমন ব্রহ্মানন্দ আজ যেতে পারে নি। তাই আমাদের সাবধান থাকতে হবে। আমাদের কম বা বেশী খাওয়া উচিত নয়। বেশী খাওয়ার থেকে বরং কম খাওয়া ভালো। কম খেলে তুমি মারা যাবে না। কিন্তু বেশী খেয়ে তুমি মারা যাবে। মানুষ অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য মরে, কম খাওয়ার জন্য মরে না। এটি একটি নীতি হওয়া উচিত। চিকিৎসা বিজ্ঞান সবসময় নিষেধ করে, তোমার প্রয়োজনের অতিরিক্ত আহার করো না। পেটুকের মতো আহার ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগের কারণ, আবার পুষ্টিহীনতা ক্ষয় রোগের কারণ। এটি হচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞান। কাজেই আমাদের কম বা বেশী কোনটিই করা উচিত নয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে, তারা বেশী খওয়ার মতো ভুল করে ফেলতে পারে, কিন্তু বয়স্কদের ক্ষেত্রে তারা বেশী খাওয়ার মতো ভুল করতে পারে না। বাচ্চারা হজম করতে পারে। তারা সারাদিন খেলাধুলা করে।

যাইহোক, আমাদেরকে আমাদের স্বাস্থ্যেরও যত্ন নিতে হবে। সনাতন গোস্বামী, তিনি খুব চুলকানি রোগে ভুগছিলেন। আর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁকে আলিঙ্গন করেছিলেন। তো সেই চুলকানির ঘা গুলো ছিল ভেজা। দুই ধরণের চুলকানি আছে, শুকনো আর ভেজা। মাঝে মাঝে চুলকানির জায়গাটা শুকনো থাকে, আবার মাঝে মাঝে ভেজা থাকে। চুলকানোর পড় এটা ভেজা যায়। তো সনাতন গোস্বামীর সারা গা ভেজা চুলকানিতে ভরা ছিল, আর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁকে আলিঙ্গন করেছিলেন। আর সেই ভেজা ক্লেদ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর গায়ে লেগে গিয়েছিল। তিনি এতে এতো লজ্জা অনুভব করলেন যে, "আমি চুলকানি রোগে ভুগছি, আর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আলিঙ্গন করলেন, আর এই ভেজা ঘা তাঁর সারা শরীরে লেগে গেল। আমি কতো দুর্ভাগা।" তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে "আগামীকাল আমি আত্মহত্যা করবো। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু কর্তৃক আলিঙ্গিত হওয়ার পরিবর্তে।" তো পরের দিন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু জিজ্ঞাসা করছেন যে "তুমি আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছ? তুমি কি মনে কর এই দেহ তোমার?" তিনি চুপ হয়ে গেলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বললেন যে "তুমি ইতোমধ্যেই এই দেহ আমাকে দান করেছ। তুমি কিভাবে এটিকে হত্যা করতে পার?" একইভাবে... অবশ্যই, সেই দিন থেকেই তাঁর সমস্ত চুলকানি ভাল হয়ে গিয়েছিল আর... কিন্তু এটি হচ্ছে সিদ্ধান্ত, যে তোমাদের দেহ, যারা কৃষ্ণভাবনাময়, যারা শ্রীকৃষ্ণের জন্য কর্ম করছে, তাঁদের মনে করা উচিত নয় যে দেহটি তাঁদের নিজেদের অধিকারে রয়েছে। এটি ইতোমধ্যেই শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গ করা হয়ে গেছে। তাই এটিকে খুব যত্নের সাথে রাখা উচিত, কোন প্রকার অবহেলা না করে। ঠিক যেমন তোমরা মন্দিরের দেখভাল করছ কারণ এটি শ্রীকৃষ্ণের জায়গা বলে। একইভাবে... আমাদের অতিরিক্ত যত্ন করা উচিত নয়, কিন্তু কিছু যত্ন করা উচিৎ যাতে করে আমরা রোগগ্রস্ত না হয়ে পড়ি।