BN/Prabhupada 0798 - তুমি নাচতে আসা মেয়ে। তোমাকে নাচতে হবে, লজ্জা করতে পার না



Lecture on BG 2.36-37 -- London, September 4, 1973

অর্জুনের অবস্থান এখানে খুবই কঠিন। একটি বাংলা প্রবাদ আছে, নাচতে বসে গুণ্ঠন। একটি মেয়ে, সে খুব বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী। আমরা যেমনটা এখানেও করেছি যে, নিয়ম হচ্ছে মেয়েরা এবং মহিলারা তাদের মাথায় ঘোমটা দেবে। ভারতীয় ভাষায় বলা হয় গুণ্ঠন। নাচনেওয়ালী মেয়েটি যখন মঞ্চে ছিল সে দেখল যে, ওখানে তার অনেক আত্মীয়স্বজনও এসেছে দর্শক হিসেবে । তাই সে মাথার ঘোমটা টানতে শুরু করল। এটার দরকার ছিল না। তুমি যখন নাচতে নেমেছ তোমাকে নাচতে হবে। লজ্জা করলে হবে না। তোমাকে স্বাধীনভাবে নাচতে হবে। সেটিই তোমার কর্তব্য। তাই অর্জুন... কিছু বদমাশ লোক কাউকে খুন করেছে এবং পড়ে যুক্তি দিচ্ছে যে খুন করা পাপ কাজ নয় কারণ ভগবদগীতাতেও হত্যা করার কথা আছে। হ্যাঁ। আপাতদৃষ্টিতে বদ্মাশদের কাছে এমনটাই মনে হবে যে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যুদ্ধ করতে প্ররোচিত করছেন। এবং তিনি বলছেন যে এতে কোন পাপ নেই। কিন্তু সেই বদমাশরা এটা দেখছে না যে কৃষ্ণ কোন পরিস্থিতিতে এই উপদেশ করছেন। স্বধর্মম্‌ অপি চাবেক্ষ্য। (BG 2.31) স্বধর্ম। একজন ক্ষত্রিয়ের কর্তব্য হচ্ছে যুদ্ধ করা, যুদ্ধে হত্যা করা। যদি তুমি যুদ্ধ করতে নেমে অনুকম্পা দেখাও, তাহলে সেই একই উদাহরণ, সেই নাচ করতে নামা মেয়েটি যখন মাথার ঘোমটা টানতে শুরু করে। সে কেন লজ্জা পাবে? তাকে নাচতেই হবে। তবেই তার কৃতিত্ব। সেইরকম যুদ্ধক্ষেত্রে তুমি দয়া দেখাতে পার না। সেটির প্রয়োজন নেই। অনেক উপায়ে। অহিংসা, আর্জব - এগুলো সদ্গুণাবলী। ত্রয়োদশ অধ্যায়ে ভগবান অহিংসার কথা বলছেন। সাধারণত অহিংসা গ্রহণ করা হয়। আর আসলে অর্জুন অহিংসই ছিলেন। তিনি কাপুরুষ ছিলেন না, এবং এটাও নয় যে যেহেতু তিনি কাপুরুষ ছিলেন তাই যুদ্ধ করছিলেন না, না। একজন বৈষ্ণব হিসেবে তিনি স্বভাবতই অহিংস ছিলেন। তিনি কাউকে হত্যা করতে চান না। বিশেষ করে তাঁর নিজের পরিবারের কাউকে। তিনি কিছুটা অনুকম্পা করছিলেন। তিনি কাপুরুষ ছিলেন না।

কৃষ্ণ তাঁকে উৎসাহ দিচ্ছেন। অর্জুনকে তাঁর দায়িত্ব পালন করতে। তুমি তোমার দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত হতে পার না। সেটিই ছিল বিষয়। যখন কোন যুদ্ধ হয়, তোমাকে ঠিকঠাক ভাবেই যুদ্ধ করতে হবে। এবং শত্রুদের পরাজিত করতে হবে। তবেই তোমার কৃতিত্ব। যখন তুমি শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করছ, তখন যদি অনুকম্পা দেখাও "আমি কীভাবে এদের মারব?" সেটি হবে কাপুরুষতা। তাই শ্রীকৃষ্ণ এই সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন হতো বা প্রাপ্স্যসি স্বর্গম্‌ জিত্বা বা ভোক্ষস্যে মহীম্‌। (BG 2.37) দুটি বিকল্প আছে। একজন যোদ্ধার পক্ষে যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যু বা বিজয়। এর মাঝ খানে কিছু নেই। যদি পার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যাও, জয়ী হও। অথবা মরে যাও। থামা যাবে না। ঐ সব যুদ্ধ গুলো এই ধরণেরই ছিল। বৈদিক সংস্কৃতি অনুযায়ী, ক্ষত্রিয়রা ... ব্রাহ্মণেরা নয়। ব্রাহ্মণেরা যুদ্ধ করা বা হত্যার জন্য নয়। তাদের অহিংস থাকতে হবে। এমন কি হিংসার দরকার পড়লেও, ব্রাহ্মণ কখনও ব্যক্তিগতভাবে কাউকে হত্যা করবে না। তিনি সেই রকম কিছু ঘটলে সেটি ক্ষত্রিয়দের দৃষ্টিতে আনবেন।