BN/Prabhupada 0847 - শ্রীমদ্ভাগবতে কলিযুগের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে



731224 - Lecture SB 01.15.46 - Los Angeles

গতকাল আমরা কলিযুগ নিয়ে আলোচনা করছিলাম সবচেয়ে অধঃপতিত যুগ। মানুষেরা সবচেয়ে পতিত তুলনামূলকভাবে, শতকরা পচাত্তর ভাগ লোক অধার্মিক এবং অন্যান্য যুগের তুলনায় পঁচিশ ভাগ মানুষ ধর্মপরায়ণ। কিন্তু সেই পঁচিশ ভাগ ধর্মটাই আরও হ্রাস পাচ্ছে এই শ্লোক ব্যাখ্যা করার আগে, আমি তোমাদের কলিযুগ সম্পর্কে কিছু ব্যাখ্যা দেব এসব শ্রীমদ্ভাগবতের দ্বাদশ স্কন্ধের তৃতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত আছে (পাশ থেক) - কোথায় ওটা? বইটা আমাকে দাও। আমরা এখনও সেটা ছাপাই নি। তাই আমি প্রসঙ্গ ধরে বলছি অন্যোনযতো রাজভিশ্চ ক্ষয়ম্‌ যস্যান্তি পীড়িতাঃ (শ্রীমদ ভাগবত 12.1.41) ভাগবতের (দ্বাদশ স্কন্ধের দ্বিতীয় অধ্যায়ে) তা বর্ণনা আছে

ততশ্চানুম্‌ দীনম্‌ ধর্মাঃ
সত্যম্‌ শৌচম্‌ ক্ষমা দয়া
কালেন বলিনা রাজন্‌
নাংক্ষ্যতি আয়ুর্বলম্‌ স্মৃতিঃ
(শ্রীমদ ভাগবত 12.2.1)

শ্রীমদ্ভাগবতে কলিযুগের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সেটি শাস্ত্র কলিযুগ যখন শুরু হবে, সেই পাঁচ হাজার বছর আগে এই শ্রীমদ্ভাগবতম্‌ রচনা হয়েছিল এখন কি হবে, ভবিষ্যতে কি ঘটতে চলেছে তা সবকিছু শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে শাস্ত্র মানে... তাই আমরা শাস্ত্রকে স্বীকার করি। ত্রিকালজ্ঞ শাস্ত্রকার বা শাস্ত্রের রচয়িতা অবশ্যই একজন মুক্ত পুরুষ হবেন যাতে করে তিনি ভূত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ব্যাখ্যা করতে পারেন ভাগবতে তুমি অনেক কিছু পাবে যেখানে বলা হয়েছে ভবিষ্যতে হবে ঠিক যেমন শ্রীমদ্ভাগবতে ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাবের কথা বলা হয়েছে তেমনই, কল্কি অবতারের বর্ণনা আছে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাবের কথা বলা আছে। যদিও তা পাঁচ হাজার বছর আগে রচিত ত্রিকালজ্ঞ। তাঁরা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জানতেন

কলিযুগের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে শুকদেব গোস্বামী এই যুগের প্রধান লক্ষণগুলি বলছেন প্রথম লক্ষণ তিনি বলছেন, ততশ্চানুম্‌ দীনম্‌ এই কলিযুগ যত বাড়বে ধর্ম - ধর্মীয় অনুশাসন, সত্যম্‌ - সত্য , শৌচম্ - পবিত্রতা ক্ষমা, দয়া আয়ু , বলম্‌ বা দৈহিক বল, স্মৃতি গুণে দেখ কতগুলো - ধর্ম, সত্যম্‌ শৌচম্‌ ক্ষমা, দয়া, আয়ু, বলম্‌, স্মৃতি - আটটি এইসব কিছু ক্রমে ক্রমে হ্রাস পেতে থাকবে, একদম শুন্য হয়ে যাবে। প্রায় শুন্য যেমনটা আমি বলেছিলাম যে কলিযুগে ঠিক যেমন সত্যযুগে - সত্যযুগের আয়ু ছিল ১৮ লক্ষ বছর এবং মানুষ এক লক্ষ বছর পর্যন্ত বাঁচত এক লক্ষ বছর এর পরের যুগের আয়ু হল ১২ লক্ষ বছর এবং মানুষ তখন এক হাজার বছর বাঁচত এক হাজার না, দশ হাজার বছর। দশ গুণ কমে গেল তারপরের যুগে দ্বাপরে - আবারও দশগুণ কমল তা সত্ত্বেও তাঁরা এক হাজার বছর বেঁচে থাকতেন এবং যুগের আয়ু ছিল আট লক্ষ বছর এখন এই কলিযুগে মানুষের আয়ু হচ্ছে একশ বছর আমরা বড়জোর একশ বছর বাঁচতে পারি আমরা একশ বছর বাঁচি না, কিন্তু তবু সর্বোচ্চ সীমা হচ্ছে একশ বছর তো দেখ, এই একশ বছরের মধ্যে... এখন ভারতবর্ষে গড় আয়ু প্রায় ৩৫ বছরের মতো হয়ে গেছে। তোমাদের দেশে নাকি ৭০ বছর, ওরা বলছিল? অর্থাৎ এটি কমছে। আর এটা এতোই কমতে থাকবে যে মানুষ যদি এক সময় কুড়ি ত্রিশ বছর বাঁচে তো তাঁকে বৃদ্ধ লোক ধরা হবে, এই কলিযুগে। আয়ু কমে যাবে।