BN/Prabhupada 0905 - প্রকৃত চেতনায় আসো যে সবকিছুই ভগবানের



730418 - Lecture SB 01.08.26 - Los Angeles

যারা প্রমত্ত তারা এই কথা বুঝবে না, তারা বুঝতে পারবে না। তারা মনে করে, "এটা আমার সম্পত্তি" আমি রেড ইন্ডিয়ানদের থেকে এই আমেরিকা ভূখণ্ড চুরি করেছি, এখন এটা আমার সম্পত্তি।" কিন্তু সে জানে না যে, সে একটা চোর। সে একটা চোর। স্তেন এব স উচ্যতে (গীতা ৩/১২) । ভগবদ্গীতায় তা বলা হয়েছে। যে ভগবানের সম্পত্তি নিয়ে যায় এবং নিজের বলে দাবী করে সে একটা চোর। স্তেন এব স উচ্যতে। তাই আমাদের এই সাম্যবাদী ধারণা, কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি। আমাদের কৃষ্ণভাবনাময় সাম্যবাদী কর্মসূচী। সেট কি? সবকিছুই ভগবানের সম্পত্তি। ঠিক যেমন তারা মনে করে যে সবকিছুই রাষ্ট্রের সম্পত্তি। এইসব কম্যুনিস্টবাদীরা, মস্কোবাদীরা অথবা রাশিয়ানরা, চাইনীজরা, তারা রাষ্ট্রের ভিত্তিতে চিন্তা করছে কিন্তু রাষ্ট্রের ভিত্তিতে দেখছি না, আমরা দেখছি ভগবানের ভিত্তিতে। সবকিছুই ভগবানের সম্পত্তি। সেই একই দর্শন। তুমি বিস্তার করলে এটাই পাবে। কেবল সামান্য একটু বুদ্ধি থাকা চাই। তোমরা কেন মনে করছ যে দেশটি কেবল কয়েকজন জনগণের জন্য? যদি তুমি মনে কর যে জনসাধারণ আছে, আমেরিকান জনসাধারণ। এই আমেরিকা ভূমিটি এই জনসাধারণের। তোমরা কেন এমনটা ভাবছ? তোমার ভাবা উচিৎ এটা ভগবানের সম্পত্তি।

সমস্ত জীবেরাই ভগবানের সন্তান। ভগবান সকলের পরম পিতা। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, অহম্‌ বীজপ্রদ পিতা "আমি হচ্ছি সকল জীবের বীজপ্রদানকারী পিতা"। সর্ব যোনিষু কৌন্তেয় (গীতা ১৪/৪) "তারা যে কোন যোনিতেই থাকুক না কে, তারা সবাই জীব এবং আমার সন্তান।" প্রকৃতপক্ষে সেটিই হচ্ছে বাস্তব সত্য। আমরা জীবেরা হচ্ছি ভগবানের সন্তান। কিন্তু আমরা তা ভুলে গিয়েছি। তাই আমরা যুদ্ধ করছি। ঠিক যেমন একটি ভাল পরিবারে, যদি কেউ জানে যে "বাবা আমাদের খাবার যোগাচ্ছেন তাহলে আমরা ভাইয়ে ভাইয়ে কেন যুদ্ধ করব?" তেমনই আমরা যদি কৃষ্ণভাবনাময় হই, ভগবৎভাবনাময় হই আমাদের সমস্ত যুদ্ধসংঘাত শেষ হয়ে যাবে। "আমি আমেরিকান, আমি ভারতীয়, আমি রাশিয়ান, আমি চাইনিজ" - এইসব আজেবাজে জিনিস দূর হয়ে যাবে। কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন এতোই চমৎকার যেই মাত্র মানুষ কৃষ্ণ ভাবনাময় হবে, এই যুদ্ধ, এই রাজনৈতিক সংঘর্ষ, জাতীয় সংঘর্ষ তৎক্ষণাৎ দূর হয়ে যাবে। কারণ তখন তারা সবাই আসল চেতনায় আসবে যে সবকিছুই ভগবানের সম্পত্তি। এবং একজন সন্তান হিসেবে, পরিবারের সদস্য হিসেবে আমাদের যেমন অধিকার আছে পিতার থেকে সুযোগসুবিধা পাবার তেমনই আমরা সকলেই ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে, সকলেই ভগবানের সন্তান হলে সকলেরই পিতার সম্পত্তি ব্যবহার করার অধিকার আছে সেই অধিকার কেবল মানুষের জন্য নয়, ভগবদগীতা অনুসারে, সেই অধিকার সকল জীবের জন্যই। সেই জীব পশু, না গাছপালা, না পাখি বা কীটপতঙ্গ বলে কোন কথা নেই সেটিই কৃষ্ণ ভাবনামৃত। আমরা এইভাবে ভাবি না যে কেবল আমি ভাল, আমার ভাই ভাল, আর সবাই খারাপ। এই ধরণের সঙ্কীর্ণ, কৃপণ মানসিকতাকে আমরা ঘৃণা করি, সেটা আমরা ছুঁড়ে মারি। আমরা ভাবি, পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ (গীতা ৫/১৮) ভগবদগীতায় তোমরা পাবে

বিদ্যা বিনয়ে সম্পন্নে
ব্রাহ্মণে গবি হস্তিনি
শুনি চৈব স্বপাকে চ
পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ
(গীতা ৫/১৮)

যে ব্যক্তি পণ্ডিত, তিনি সকল জীবকে সম দৃষ্টিতে দেখেন তাই একজন বৈষ্ণব করুণাময়। লোকানাম্‌ হিতকারিণৌ তাঁরাই আসলে মানব সমাজের জন্য সত্যিকারের কল্যাণ কাজ করতে পারেন তাঁরা দেখছেন তাঁরা অনুভব করছেন যে সমস্ত জীবেরাই ভগবানের অংশ যে কোন ভাবেই হোক এরা এই জড় জগতের সংস্পর্শে এসে পড়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন কর্ম অনুযায়ী তারা বিভিন্ন দেহ ধারণ করেছেন তাই পণ্ডিত ব্যক্তির কোন বৈষম্য নেই এমন না যে, "এটি পশু, তাই একে কসাইখানায় পাঠানো হোক এবং এ হচ্ছে মানুষ, তাই এরা একে খাবে"। না। একজন কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি সকলের প্রতি করুণাপূর্ণ। পশুদের কেন হত্যা করা হবে? তাই আমাদের দর্শন হচ্ছে কোন মাংসাহার নয়, তুমি তা করতে পার না ওরা আমাদের কথা শুনবে না, বলবে, "ওহ্‌ এইসব কি আজেবাজে কথা? আমরা কেন ওদের খাব না?" কারণ এধমানমদঃ (ভাগবত ১/৮/২৬)। সে একটা উন্মত্ত বদমাশ। সে আসল বাস্তব কথা শুনবে না