BN/Prabhupada 0918 - শ্রীকৃষ্ণের শত্রু হওয়াতে লাভের কিছু নেই, বরং তাঁর বন্ধু হও



730421 - Lecture SB 01.08.29 - Los Angeles

এখানে বলা হয়েছেঃ ন বেদ কশ্চিদ্‌ ভগবংশ্চিকীর্ষিতম্‌ (ভাগবত ১/৮/২৯) "তাঁর আবির্ভাব এবং অন্তর্ধানের উদ্দেশ্য কেউই জানে না, কেউই জানে না।" তব ঈহমানস্য নৃণাম্‌ বিড়ম্বনম্‌ (ভাগবত ১/৮/২৯) তা বিভ্রান্তিজনক। কেউ তার প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে পারে না। প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁর স্বাধীন ইচ্ছা, "আমি অবতরণ করব এবং দেখব" অসুরদের মারার জন্য তাঁর অবতরণের কোন প্রয়োজন নেই। অনেক কিছুই আছে একটা বিশাল ঘূর্ণিবাতই যথেষ্ট হাজার হাজার অসুরদের এক মুহূর্তেই হত্যা করতে। তাই অসুরদের হত্যা করতে শ্রীকৃষ্ণকে আসতে হয় না। আর তাঁকে তাঁর ভক্তদের সুরক্ষা দিতেও আসতে হয় না। কেবল তাঁর ইচ্ছার দ্বারাই তা সবকিছুই সম্ভব। কিন্তু তিনি লীলা করে আনন্দ পান, "যাই গিয়ে দেখে আসি"।

কখনও বা যুদ্ধ করতে চান। কারণ শ্রীকৃষ্ণের মধ্যেও যুদ্ধ করার ইচ্ছা আছে। অন্যথায় আমরা তা পেলাম কোথা থেকে? কারণ আমরা ভগবানের অংশ, তাই ভগবানের সমস্ত গুণের কিছু মাত্রায় আমাদের মধ্যেও আছে। আমরা শ্রীকৃষ্ণের নমুনা। আমরা তাহলে এই যুদ্ধ করার মনোবৃত্তি পেলাম কোথা থেকে? শ্রীকৃষ্ণের মাঝেও তা আছে। সেই জন্য, কখনও দেখা যায় যে কোন একজন বিশাল কেউ বা রাজা, তিনি কুস্তি করার জন্য লোক নিয়োগ করেন রাজার সাথে কুস্তি করার জন্য সেই কুস্তিগীরকে টাকা দেয়া হয়, কিন্তু সে শত্রু নয়। সে কুস্তি করে রাজাকে কেবল আনন্দ দান করছে, নমুনা যুদ্ধ।

তেমনই, শ্রীকৃষ্ণ যখন যুদ্ধ করবেন, তখন কে আছেন যে তাঁর সাথে লড়বেন? তাঁর কোন মহান ভক্তই তাঁর সাথে লড়বেন? কোন সাধারণ কেউ নয়। ঠিক যেমন কোন রাজা যদি তিনি নমুনা যুদ্ধ করতে চান, তাহলে কোন একজন খুব নামীদামী বিশেষ কোন কুস্তিগীরকে নিয়োগ করেন সেইটিও সেবা, কারণ কৃষ্ণ যুদ্ধ করতে চাইছেন, তাই তাঁর কোন কোন ভক্ত তাঁর শত্রু হয়ে অবতীর্ণ হন। যেমন জয়-বিজয়। হিরণ্যকশিপু এবং হিরণ্যক্ষ। তোমরা কি মনে করছ তাঁরা কোন সাধারণ জীব ছিল? যাকে মারতে ভগবান নৃসিংহদেব অবতরণ করেছেন। ভাবছ সে কোন সাধারণ কেউ? না, তাঁরা সাধারণ নন। তাঁরা ভক্ত। কিন্তু যেহেতু কৃষ্ণ যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন বৈকুণ্ঠলোকে যুদ্ধ করার কোন সম্ভাবনা নেই, কারণ সেখানে সকলেই ভগবানের সেবায় নিযুক্ত। তিনি কার সাথে যুদ্ধ করবেন? (হাসি) তাই তিনি কোন কোন ভক্তকে শত্রুর বেশে পাঠান। এবং কৃষ্ণ নিজে অবতরণ করেন তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করতে।

একই সঙ্গে তিনি আমাদের দেখান যে, ভগবানের শত্রু হওয়া কোন ভাল কিছু নয়। বরং তাঁর বন্ধু হওয়া লাভের। তাতে লাভ আছে। (হাসি) তাই বলা হয়েছে, ন বেদ কশ্চিদ্‌ ভগবংশ্চিকীর্ষিতম্‌ (ভাগবত ১/৮/২৯) "তাঁর আবির্ভাব এবং অন্তর্ধানের উদ্দেশ্য কেউই জানে না, কেউই জানে না।" তব ঈহমানস্য নৃণাম্‌ বিড়ম্বনম্‌ (ভাগবত ১/৮/২৯) "আমি এই জগতে সাধারণ মানুষের মতো আসছেন। তা বিভ্রান্তিজনক।" তাই সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করতে পারবে না। "ভগবান কীভাবে সাধারণ মানুষের মতো...?" কৃষ্ণ লহেলা করছেন। যদিও তিনি সাধারণ মানুষের মতো খেলা করছেন না, তিনি ভগবান হয়ে লীলা করছেন। যেখানে যেমন দরকার পড়েছে...

ঠিক যেমন তিনি ১৬,০০০ মহিষী বিবাহ করেছেন। তিনি যখন বিবাহ করলেন তখন তিনি একজন ছিলেন, আর ১৬০০০ রমণী এই বলে তাঁর কাছে শরণাগত হলেন যে, "আমাদের অপহরণ করা হয়েছে। এখন যদি আমরা বাড়ি ফিরে যাই, তাহলে কেউই আমাদের বিয়ে করবে না। খুব কঠোর বৈদিক নিয়ম। যদি একজন অবিবাহিত মেয়ে এক রাতের জন্যও বাড়ির বাইরে থাকে, তাঁকে কেউই বিয়ে করবে না। এখনও সেই নিয়ম চলছে। কেউই বিয়ে করবে না। তো এটা ছিল পুরাকালের নিয়ম। ভৌমাসুরের দ্বারা অপহৃত এই ১৬০০০ রাজকন্যারা... তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা জানিয়েছিল এবং কৃষ্ণ এসে ভৌমাসুরকে হত্যা করে সেই সব মেয়েদের উদ্ধার করেছিলেন তখন কৃষ্ণ তাদের বললেন, "এখন তোমরা নিরাপদে তোমাদের যার যার পিতার কাছে ফিরে যেতে পার" তাঁরা উত্তর দিলেন, "হে ভগবান, আমরা যদি আমাদের পিতৃগৃহে ফিরে যাই, আমাদের ভাগ্যের কি হবে? কেউই আমাদের বিয়ে করবে না। কারণ এই রাক্ষস আমাদের অপহরণ করেছিল।" "তাহলে তোমরা কি চাও"। "আমরা চাই আপনি আমাদের স্বামী হন" তাই শ্রীকৃষ্ণ এতোই করুণাময়, তিনি বললেন, "ঠিক আছে।" তিনি তৎক্ষণাৎ তাদের গ্রহণ করলেন। এই হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ।

তারপর যখন তাঁদের ঘরে নিয়ে আসা হল, তখন এমন নয় যে এই ১৬০০০ মহিষীকে ১৬০০০ রাত অপেক্ষা করতে হবে শ্রীকৃষ্ণের সাথে সাক্ষাৎ করতে। (হাসি) কৃষ্ণ নিজেকে ১৬০০০ রূপে বিভক্ত করলেন এবং ১৬০০০ রাজপ্রাসাদ গড়ে দিলেন, এবং প্রত্যেক রাজপ্রাসাদে এসবের বর্ণনা আছে। এই হচ্ছেন ভগবান। তাই এই সমস্ত বদমাশেরা এগুলো বুঝবে না। তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের সমালোচনা করে বলে যে তিনি খুব কামুক ছিলেন। তিনি ১৬০০০ মহিষীকে বিয়ে করেছেন (হাসি) যদি তিনি কামুকও হন, তিনি অপরিসীমভাবে কামুক। (হাসি) কারণ তিনি অসীম। ১৬০০০ কেন? যদি তিনি ১৬ কোটি বিয়েও করতেন তবুও তা তাঁর কাছে অনেক কম। এই হলেন শ্রীকৃষ্ণ।