BN/Prabhupada 0923 - এই চারটি নিয়ম ভঙ্গ করা মানে পাপময় জীবনের ছাদ তোমার ওপর পড়বে



730422 - Lecture SB 01.08.30 - Los Angeles

যদি কেউ শ্রীকৃষ্ণকে কোন সাধারণ মানুষ বা বালক রূপে ভাবে কৃষ্ণও তার সাথে সেইভাবেই আচরণ করবেন । যদি কৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলে গ্রহণ করা হয় তাহলে ভক্ত ভগবানের সান্নিধ্যের আনন্দ উপভোগ করবে এবং যদি নির্বিশেষবাদীরা ব্রহ্মজ্যোতি খুব পছন্দ করে, তাহলে কৃষ্ণ তাঁর উৎস। অতএব তিনি সবকিছুই। ব্রহ্মেতি পরমাত্মেতি ভগবানিতি শব্দ্যতে (ভাগবত ১/২/১১)

তো সেই সর্বশ্রেষ্ঠ ভগবানের সঙ্গে এই সব বালকেরা খেলা করছে কীভাবে, কেন , কীভাবে তাঁরা এত ভাগ্যবান হলেন যে তাঁরা ভগবানের সঙ্গে খেলা করলেন?

ইত্থম্‌ সতাম্‌ ব্রহ্মসুখানুভূত্যা
দাস্যম্‌ গতানাম্‌ পরদৈবতেন
মায়াশ্রিতানাম্‌ নরদারকেন
সাকম্‌ বিজাহ্রু কৃতপুণ্যপুঞ্জাঃ
(ভাগবত ১০/১২/১১)

যেই সমস্ত বালকেরা কৃষ্ণের সাথে খেলা করছেন, তাঁরা সাধারণ কেউ নন তাঁরাও এতোটাই সর্বোচ্চ স্থিতিতে আছেন যে তাঁরা পরমেশ্বর ভগবানের সঙ্গে খেলা করতে পেরেছেন তাঁরা কীভাবে এই সৌভাগ্য পেলেন? কৃতপুণ্যপুঞ্জাঃ। অনেক অনেক জীবনের পুণ্যকর্ম কারণ এই সব বালকেরা অনেক অনেক জন্ম ধরে তপস্যা করেছেন জীবনের এই সর্বোচ্চ সিদ্ধি লাভ করার জন্য। এখন তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে একই স্তরে থেকে খেলার সৌভাগ্য লাভ করেছেন তাঁরা জানেন না যে কৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান এটাই বৃন্দাবন লীলা এই সব গোপ বালকেরা কৃষ্ণকে সরল চিত্তে ভালবাসেন তাঁদের ভালবাসা অসীম। বৃন্দাবনের সবাই ঠিক যশোদা মাতা এবং নন্দ মহারাজের মতো। তাঁরা যেমন বাৎসল্য প্রেমে আছেন পিতা মাতারা কৃষ্ণকে ভালবাসেন, বন্ধুরা কৃষ্ণকে ভালবাসেন গোপিকারা কৃষ্ণকে ভালবাসেন, বৃক্ষরাজি কৃষ্ণকে ভালবাসেন জল কৃষ্ণকে ভালবাসে, ফুল, ফল, গাভী, গোবৎস, প্রত্যেকেই কৃষ্ণকে ভালবাসে। সেটিই হচ্ছে বৃন্দাবন। তাই আমরা যদি কৃষ্ণকে ভালবাসতে পারি, তবে আমরা এই জগতকে তৎক্ষণাৎ বৃন্দাবন বানাতে পারি। এটিই হচ্ছে মুখ্য বিষয়। কীভাবে কৃষ্ণকে ভালবাসা যায়। প্রেমা পুমার্থো মহান্‌।

তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন যে ধর্ম , অর্থ, কাম, মোক্ষ (ভাগবত ৪/৮/৪১, চৈতন্য চরিতামৃত আদি ১.১৯০) মানুষেরা এই চারটি জিনিসের পেছনে পড়ে আছে। ধর্ম অর্থ কাম মোক্ষ। চৈতন্য মহাপ্রভু এইসব বাদ নিয়েছেন, "এইগুলো জীবনের পরম প্রাপ্তি নয়" অবশ্যই, মনুষ্য জীবনে... ধর্মের ধারণা ছাড়া মনুষ্য জীবন শুরুই হয় না কিন্তু বর্তমানে এই কলিযুগে ধর্ম বলতে গেলে শুন্য। তাই বৈদিক সভ্যতা অনুযায়ী বর্তমান মানব সভ্যতা এমনকি মানুষও নয়। কারণ কোন ধর্ম নেই, কোন ধর্মই নেই। কোন নৈতিকতা নেই। কোন পুণ্য কর্ম নেই, কেউ এসবের পরোয়া করে না কিছু পরোয়া না করেই লোকেরা যা খুশি তাই করতে পারে পূর্বে এসব নৈতিকতা, অনৈতিকতা, ধর্ম, অধর্ম, এসব ছিল কিন্তু কলিযুগের প্রভাব বৃদ্ধির দ্বারা সি সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে বলা হয়েছে, কলিযুগে প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ লোকই পাপী আর আমরা বাস্তবেও তা দেখছি। এই পাপপূর্ণ জীবন , আমরা যে চারটি পাপকর্মের কথা বলেছি অবৈধ সঙ্গ, নেশা, মাংসাহার এবং দ্যূতক্রীড়া এইগুলো পাপ জীবনের ভিত্তি

তাই আমরা আমাদের ছাত্রদের অনুরোধ করি এই পাপের ভিত্তিগুলো ভেঙ্গে দিতে তাতে করে পাপময় জীবনের ছাদ ভেঙ্গে যাবে এরপর হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন, তাহলে তুমি চিন্ময় স্তরে দৃঢ়নিষ্ঠ থাকতে পারবে। সহজ পন্থা। কারণ জীবন পাপময় হলে কেউ কৃষ্ণকে উপলব্ধি করতে পারে না। তা সম্ভব নয়। তাই কৃষ্ণ বলেছেন, যেষাম্‌ তু অন্তগতম্‌ পাপম্‌ (গীতা ৭/২৮) অন্তগতম্‌ মানে শেষ।