BN/Prabhupada 0966 - ভক্তিরূপ অঞ্জনের দ্বারা রঞ্জিত চোখ হলেই কেবল ভগবানকে দর্শন করা যায়



720527 - Lecture BG The Yoga System - Los Angeles

কেউ ভগবানকে তখন দেখতে পারবেন যখন তিনি তার চোখে ভক্তির কাজল পরিধান করবেন এই যোগ প্রক্রিয়াটি, ভক্তি যোগ, কীভাবে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্তি বৃদ্ধি করতে হয়, তা আমাদের কৃষ্ণ ভাবনাময় আন্দোলনে শেখানো হচ্ছে। ময্যাসক্তমনাঃ পার্থ যোগং যুঞ্জন্মদাশ্রয়ঃ (ভগবদ্গী‌তা ৭.১) এই সম্পর্কে, এই যৌগিক পন্থা সরাসরি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অথবা তার প্রতিনিধির থেকে শিখতে হবে। এটিই হচ্ছে মদাশ্রয় কথাটির অর্থ। কাওকে অবশ্যই আশ্রয় নিতে হবে।

এই সময়, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের কাছে সরাসরি আশ্রয় নেয়া সম্ভব না। তাই তার খাঁটি প্রতিনিধির কাছে আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে। চার ধরণের বৈষ্ণব সম্প্রদায় রয়েছে। ব্রহ্ম সম্প্রদায়, রুদ্র সম্প্রদায়, শ্রী সম্প্রদায় এবং কুমার সম্প্রদায়। এই সম্প্রদায় গুলোর যে কোন একটির আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে, গুরু পরম্পরা, এবং তাঁর থেকে ভক্তি যোগ প্রক্রিয়া শিখতে হবে। তখন সে ভগবানকে বুঝতে পারবে, অথবা ভগবানকে দেখতে পারবে। ভগবানকে দেখার মানে সরাসরি ভগবানকে চোখ দিয়ে দেখা নয়। ভগবানের আরেক নাম হল অনুভব, উপলব্ধি। প্রকাশ। উপলব্ধি। সেটাই চাই। সেই প্রকাশ শ্রীকৃষ্ণ নিজে করেন তার খাঁটি ভক্তের নিকট। সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ স্বয়মেব স্ফুরত্যদ (চৈতন্য চরিতামৃত ১৭.১৩৬)। ভগবান কৃষ্ণ নিজেকে প্রকাশ করেন। ঠিক যেমন তুমি রাতের অন্ধকারে সূর্যকে দেখতে পার না। সূর্য আকাশেই আছে, তবে কোনও না কোনওভাবে, যখন তোমার গ্রহটি অন্য দিকে আছে, এবং এটি অন্ধকারে আছে, তুমি সূর্যকে দেখতে পাবে না। এমন নয় যে সূর্য সেখানে নেই, কিন্তু তুমি দেখতে পাচ্ছ না। তেমনি, শ্রীকৃষ্ণ সবসময়ই আমাদের সামনে আছেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণ যখন তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন, হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ তখন এই পৃথিবীতে ছিলেন, মাত্র কিছু সংখ্যক তাকে দেখতে পাচ্ছিলেন, যে তিনি হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাই এমনকি ভগবান, পরমেশ্বর ভগবান, শ্রীকৃষ্ণ যদি কারও সামনে আসেন, তাকে দেখা সম্ভব নয়। দেখার প্রক্রিয়াটা ভিন্ন। প্রেমাঞ্জন-চ্ছুরিত-ভক্তি-বিলোচনেন (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৮)। কেউ ভগবানকে তখন দেখতে পারবেন যখন তিনি তার চোখে ভক্তির কাজল পরিধান করবেন ভগবানকে দেখার জন্য চোখ পরিষ্কার করতে হবে। সেটিই প্রকাশ।