BN/Prabhupada 0976 - অতিরিক্ত জনসংখ্যার কোন প্রশ্নই নেই। এটি একটি মিথ্যা তত্ত্ব
Lecture on BG 4.13 -- New York, April 8, 1973
অতিরিক্ত জনসংখ্যার কোন প্রশ্নই নেই। এটি একটি মিথ্যা তত্ত্ব। যদি ভগবান সৃষ্টি করতে পারেন, তবে তিনি পালনও করতে পারেন। এবং আসলে, এটাই সত্য। আমি সারা বিশ্বে ভ্রমণ করছি। পৃথিবীর পৃষ্ঠে অনেকগুলি শূন্য স্থান রয়েছে সেগুলো বর্তমান জনসংখ্যার দশগুণ বেশি সহজেই বজায় রাখা যায়. কিন্তু আমরা জানি না কীভাবে এগুলো ব্যবহার করবো। আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকায় এখনও যথেষ্ট ভূমি রয়েছে। কিন্তু আমরা কৃষ্ণের জমি অবৈধভাবে নিয়েছি তাই এত সমস্যা হচ্ছে। চীন অতিরিক্ত জনসংখ্যাযুক্ত। ভারত অতিরিক্ত জনসংখ্যাযুক্ত। কিন্তু আমরা যদি কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ করি, এই সমস্যাগুলো মুহূর্তের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।
কৃষ্ণভাবনামৃত মানে সবকিছু কৃষ্ণের বলে গ্রহণ করা। আমিও কৃষ্ণের। সেটাই কৃষ্ণভাবনামৃত। আসলে, সেটাই সত্যি। সবকিছু... কৃষ্ণ মানে ভগবান। সবকিছু ভগবানের। আমিও ভগবানের। ঈশাবাস্যম্ ইদম্ সর্বম্ (ঈশোপনিষদ মন্ত্র ১) সবকিছু ভগবানের। এটাই সত্য। কিন্তু আমরা সত্যটা মেনে নেই না। আমরা অলীক কিছু গ্রহণ করি। তাই একে বলা হয় মায়া।
ঠিক আমেরিকানদের মতো। তারা দাবি করছে যে এই জমিটি আমেরিকান দলের জন্য। একইরকমভাবে, অন্যান্য জাতি, তারাও...কিন্তু আসলে এই জমিটি ভগবানের। ভূমি, আকাশ, জল এবং ভুমির উমাদান সমূহ, আকাশে, জলে, সবকিছু ভগবানের। এবং আমরা ভগবানের সন্তান। আমরা বাবার ব্যয়ে বেঁচে থাকার অধিকার পেয়েছি। ঠিক যেমন ছোট শিশুরা। তারা বাবার ব্যয়ে বেঁচে থাকে। একইভাবে, আমরাও ভগবানের ব্যবস্থায় বেঁচে আছি। আমরা কেন দাবি করবো যে এটা আমাদের সম্পত্তি? এটি পারমার্থিক সাম্যবাদের ধারণা। ভাগবতে এই বিষয়গুলোর উল্লেখ করা আছে, কীভাবে পারমার্থিক সাম্যবাদ উপলব্ধি করতে হয়। পারমার্থিক সাম্যবাদে.... বর্তমান সাম্যবাদীরা, তারা শুধু মনুষ্য জাতির কথা চিন্তা করছে। এবং পশুদের কসাইখানায় পাঠানো হচ্ছে। যদিও মানুষ ও পশুরা একই ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছে... প্রকৃতপক্ষে তারাও নাগরিক। নাগরিক মানে যারা কোন নির্দিষ্ট ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছে। তাহলে এই প্রাণীরা, তারা নাগরিক নয় কেন? কিন্তু যেহেতু তাদের কৃষ্ণভাবনামৃত নেই, তারা এত বিস্তৃতভাবে চিন্তা করতে পারে না। তারা ভাবে নাগতিকত্ব মানে এটা শুধু মনুষ্য জাতিতেই সীমাবদ্ধ, প্রাণীরা নয়, গাছপালাও নয়। কিন্তু যখন তুমি কৃষ্ণভাবনাময় হবে তুমি বুঝবে যে বৃক্ষসমূহ, গাছপালা, সরীসৃপ, জলজ, মানুষ, জন্তু, সবকিছু, প্রত্যেকে এবং সবাই, ভগবানের অংশ। তারা তাদের কর্ম অনুসারে বিভিন্ন দেহ, রং পেয়েছে, যেমন আমি বলেছিলাম। কারণং গুণসঙ্গোহস্য সদসদ্যোনিজন্মসু (গীতা ১৩.২২)। এই বিষয়গুলো ভগবদ্গীতাতে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রত্যেকে নিজের কর্ম অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন দেহ প্রাপ্ত হয়েছে। কর্মণা দৈবনেত্রেণ জন্তোর্দেহ উপপত্তয়ে (শ্রীমদ ভাগবত ৩.৩১.১ ) কর্মের দ্বারা আমরা পরবর্তী দেহ নির্ধারণ করি।
তাই এটি একটি মহৎ বিজ্ঞান। মানুষ জানে না কীভাবে জিনিসগুলি হচ্ছে, কীভাবে জীবনের অনেক প্রজাতি রয়েছে, কীভাবে একজন তথাকথিত সুখী, একজন তথাকথিত দুর্দশাগ্রস্ত। কেন একজন ধনী, আবার একজন দরিদ্র? কেন অসংখ্য গ্রহ রয়েছে? কেন তাদের মধ্যে কেউ দেবতা, কেউ বা মানুষ, কেউ আবার পশু? এটি একটি মহৎ বিজ্ঞান, কিন্তু এই জ্ঞানের কোন চর্চা হয় না আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। সম্ভবত আমরাই একমাত্র দল, আমরা এই কৃষ্ণভাবনামৃতের বিজ্ঞানকে প্রচার করতে চেষ্টা করছি। নিজের অবস্থান বোঝার জন্য এটি একটি যথাযথ বিজ্ঞান।