BN/Prabhupada 0977 - এই জড় দেহ আমাদের চিন্ময় দেহ অনুযায়ী তৈরি হয়
730408 - Lecture BG 04.13 - New York
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেনঃ চাতুর্বণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ (গীতা ৪.১৩) এখন... যখন আমরা পশু...আমাদের পশুর দেহের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বিবর্তনের মাধ্যমে, আমরা এই মনুষ্য দেহে এসেছি। এখন এটিই একটি সুযোগ এই জন্ম মৃত্যুর চক্র থেকে বেরিয়ে আসার। এটিই আমাদের প্রকৃত সমস্যা। কিন্তু লোকেরা, তাদের কোন শিক্ষা নেই, ক্ষুদ্র জ্ঞান... এখানে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, কিভাবে আত্মার স্থানান্তর ঘটে শেখানোর... তারা জানে না। বড় বড় এম এ, পিএইচডি - রা। কিন্তু তারা জানে না জীবের প্রকৃত সত্ত্বা কি। কিন্তু সেটাই প্রকৃত সমস্যা। তারা প্রকৃত সমস্যাটা কি তা জানে না।
প্রকৃত সমস্যাটি হচ্ছে... এটি ভগবদ্গীতায় উল্লেখ করা আছেঃ জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি (গীতা ১৩.৯), জন্ম, মৃত্যু, জরা এবং ব্যাধি। এটাই প্রকৃত সমস্যা। কেউ জন্ম নিতে চায় না। অন্তত কেউ মরতে চায় না। জন্ম এবং মৃত্যু। যেখানে জন্ম আছে, সেখানে মৃত্যু থাকবেই। যার জন্ম হয়েছে তার অবশ্যই মৃত্যু হবে। তাই জন্ম-মৃত্যু এবং জরা। যতদিন তুমি বেঁচে থাকবে, তোমাকে তোমার অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। একটি অবস্থা হচ্ছে এই বার্ধক্য। ঠিক যেমন আমরা বৃদ্ধ হয়ে গেছি। অনেক অভিযোগ রয়েছে। জরা এবং ব্যাধি। এবং যখন আমরা ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে যাই। সবাইকে ব্যাধিগ্রস্ত হতে হবে। সবাইকে বৃদ্ধ হতে হবে। সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। এটাই সমস্যা। জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি দুঃখ-দোষানুদর্শনম্। আমরা আমাদের জীবনের সমস্ত দুর্বিসহ পরিস্থিতি প্রশমিত করার চেষ্টা করছি। এটিই আমাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। আমরা বিজ্ঞানী। এই পীড়িত অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা অনেক পাল্টা প্রক্রিয়া আবিষ্কার করছি। কিন্তু এই কঠিন অবস্থাটি, জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি, আমরা উপেক্ষা করছি। কারণ আমরা এই ব্যাপারে কিছু করতে পারি না। আমরা এমনকি...তথাকথিত বিজ্ঞান, তারা এই সমস্যার সমাধান করতে পারে না। যদিও মাঝে মাঝে তারা মিথ্যা গর্ব করে যে বিজ্ঞানের দ্বারা আমরা অমর হয়ে যাব। এই জিনিসগুলো পূর্বেও চেষ্টা করা হয়েছিল রাবণ এবং হিরণ্যকশিপুর দ্বারা। কিন্তু এতে সফল হওয়া সম্ভব না, জন্ম, মৃত্যু, জরা এবং ব্যাধি বন্ধ করা। এটা সম্ভব নয়। যদি কোন সম্ভাব্য পন্থা থেকে থাকে সেটা হল কৃষ্ণভাবনামৃত। সেটাই কৃষ্ণভবনামৃত। যদি তুমি কৃষ্ণভাবনাময় হও, তবে তুমি একটি দেহ পেতে পার। পার না...তুমি ইতিমধ্যে সেই দেহ পেয়ে গেছ, চিন্ময় দেহ। এবং সেই চিন্ময় দেহের ওপর, এই জড় দেহ গড়ে উঠেছে। ঠিক যেমন পোশাক। তোমার দেহ অনুযায়ী তোমার জামা কাটা আছে। একইরকমভাবে, এই জড় দেহটি তৈরি হয়েছে চিন্ময় দেহের ভিত্তিতে। তো আমরা আমাদের চিন্ময় দেহ প্রাপ্ত হয়েছি। এই জড় দেহটি একটি আবরণ। বাসাংসি জীর্ণানি। ঠিক যেমন পোশাক। তোমার জামা এবং কোট হচ্ছে তোমার মূল শরীরের আবরণ। তেমনি এই দেহ, স্থূল দেহ এবং সূক্ষ্ম দেহ, জড় বস্তু দিয়ে তৈরি... স্থূল দেহ পৃথিবী, জল, বাতাস, আগুন দিয়ে তৈরি। এবং সূক্ষ্ম দেহ মন, বুদ্ধি এবং অহঙ্কার দিয়ে তৈরি। এটি শার্ট এবং কোট এর মত। এই শার্ট এবং কোট এর ভেতরে আত্মা রয়েছে। আত্মাটি এখন এই জড় দেহের ভেতরে বদ্ধ হয়ে আছে। এবং আমাদের কাজ হচ্ছে এই মনুষ্য দেহে...পশুদেহে, আমরা এটি করতে পারি না। কিন্তু এই মনুষ্য দেহে আমরা বুঝতে পারি যে " আমি এই দেহ নই।" দেহটি, এই জড় দেহটি, একটি বাহ্যিক আবরণ, এবং যেহেতু আমি এই দেহ পেয়েছি, আমি জন্ম, মৃত্যু, জরা এবং ব্যাধিতে আক্রান্ত।
এখন, মনুষ্য দেহে আমি এটা বুঝতে পারছি। সুতরাং আমি যদি এই প্রক্রিয়াটি গ্রহণ করি কীভাবে জন্ম ও মৃত্যুর এই চক্র থেকে বের হতে হয়, তবে আমাদের মনুষ্য জন্ম সার্থক। এটি কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। আমরা লোকদের সাহায্য করছি কীভাবে জড় দেহ থেকে বেরিয়ে আসতে হয়; এবং নিজের পারমার্থিক দেহের পুনরুদ্ধার করতে হয়, এবং সেই পারমার্থিক দেহে, তুমি নিজ আলয়ে ফিরে যাবে, ভগবদ্ধামে ফিরে যাবে। এটিই পন্থা।