BN/Prabhupada 0986 - ভগবানের থেকে বিজ্ঞ কেও হতে পারে না



720905 - Lecture SB 01.02.07 - New Vrindaban, USA

ঠিক যেমন, তোমাদের পাশ্চাত্য দেশে, প্রভু যীশুখ্রিষ্ট ভগবানের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ... তার বিরুদ্ধে ঈশ্বর নিন্দার অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ভগবানের একজন ভক্ত ছিলেন, তিনি মানুষের কাছে প্রচার করেছিলেন, যে ভগবানের একটি ধাম আছে, তোমরা ভগবানকে ভালবাস, এবং ভগবানের ধামে ফিরে যাও। সরল সত্য। এটাই মনুষ্য জীবনের একমাত্র কাজ। এই মনুষ্য জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভগবানকে জানা কারণ আমরা ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আমরা তা ভুলে গেছি। আমি বহুবার এর উদাহরণ দিয়েছি, একজন ব্যক্তি, তিনি একজন ধনী পিতার পুত্র, কিন্তু যেভাবেই হোক সে বাড়ি ত্যাগ করেছে এবং সে যত্র তত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। তোমাদের দেশে এই উদাহরণটি অত্যন্ত প্রযোজ্য। অনেক ছেলে, তারা তাদের ধনী বাবা, ধনী পরিবার ছেড়ে চলে গেছে, এবং রাস্তায় শুয়ে আছে। আমি দেখেছি। কেন? হয়তো কিছু কারণ হতে পারে তবে তার রাস্তায় শুয়ে থাকা আশা করা যায় না কারণ সে সমৃদ্ধ পিতা, অন্তত ধনী দেশ, তোমাদের আমেরিকান জাতি পেয়েছে। একইভাবে আমরা যখন বিস্মিত ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি তখন আমরা ভগবানের কাছ থেকে স্বাধীনভাবে বাঁচতে চাই, সবচেয়ে ধনী পিতা - ভগবানের চেয়ে ধনী আর কে হতে পারে? ভগবান হচ্ছেন সবথেকে ধনী। ওনার থেকে ধনী কেও হতে পারে না। সেটা ভগবানের আর একটি সংজ্ঞা।

ঐশ্বর্যস্য সমগ্রস্য
বীর্যস্য যশস্য শ্রিয়ঃ
জ্ঞান- বৈরাগ্য চৈব
ষণ্ণাং ভগ ইতীঙ্গনা
(বিষ্ণু পুরাণ ৬.৫.৪৭)

ভগ, ভগ মানে ভাগ্য। যিনি ছয় ধরণের ঐশ্বর্যে পূর্ণ। আমরা এটি খুব ভালভাবেই বুঝতে পারি। ঠিক যেমন আমাদের ক্ষেত্রে, এই জড় জগতে, যদি কেও ধনী হয়, তিনি আকর্ষণীয়। সবাই তার কথা বলে। যদি সে এক নম্বর মূর্খ হয়, যদি তার টাকা থাকে, তবে সবাই তার কথা বলবে। অন্তত এই যুগে এটাই চলছে। কেউ কিছু বিবেচনা করে না, তবে যদি কোনওরকম বা অন্য কেউ খুব ধনী হয়ে যায় তবে সে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠে। অবশ্যই ভগবানকে সবথেকে ধনী হতে হবে। এখানে, এই জড় জগতের মধ্যে আমরা দাবি করতে পারি, "আমি এর চেয়ে ধনী," তবে কেউ আমার চেয়ে ধনী। আমি দাবি করতে পারি না যে "আমার চেয়ে বেশি ধনী কেউ নেই।" সেটা সম্ভব না.। আমরা নিজের চেয়ে কম ধনী খুঁজে পেতে পারি এবং আমরা নিজের চেয়ে বেশি ধনী খুঁজে পেতে পারি। দুটো জিনিস আমরা পারি। কিন্তু যখন তুমি ভগবানের কাছে আসবে, তুমি দেখবে তার থেকে ধনী আর কেউ নেই।

তাই ভগবানকে মহান বলা হয়, ভগবান মহান। একইরকমভাবে, শুধু ধনীই নয়, ঐশ্বর্য, স সমগ্রস্য, বীর্যস্য, ক্ষমতাতেও। ঐশ্বর্যস্য, সমগ্রস্য বীর্যস্য যশঃ, খ্যাতিতেও, সুখ্যাতিতেও। ঠিক সবার মত, তুমি হয়ত কোন ধর্মের অন্তর্ভুক্ত হতে পার, আমি অন্তর্ভুক্ত হতে পারি, কিন্তু সবাই জানে যে ভগবান মহান। সেটা তার খ্যাতি। ঐশ্বর্যস্য, সমগ্রস্য বীর্যস্য যশঃ, এবং শ্রী, শ্রী মানে সৌন্দর্য। ভগবান সবথেকে সুন্দর। ঠিক যেমন, কৃষ্ণকে এখানে দেখ, তুমি এখানে কৃষ্ণের আকার দেখতে পার, তিনি কত সুন্দর। ভগবানকে অবশ্যই সবসময় যুবক হতে হবে।একজন বৃদ্ধ মানুষ সুন্দর হতে পারে না। সেটা ব্রহ্মসংহিতায় উল্লেখ করা আছে, অদ্বৈতমচ্যুতমনাদিমনন্তরূপ- মাদ্যং পুরাণপুরুষং নবযৌবনঞ্চ ( ব্রহ্মসংহিতা ৫.৩৩) সেটাই আদ্যম পুরাণের ব্যাখ্যা, তিনি মুখ্য ব্যক্তি, সবার মধ্যে প্রাচীনতম কিন্তু তিনি নব যৌবনম্‌, ঠিক একটি সুন্দর ছেলের মতো, ষোল বা বিশ বছর বয়সী। সুতরাং সে সুন্দর, সবচেয়ে সুন্দর। এবং সবথেকে বিজ্ঞ, জ্ঞান। ভগবানের থেকে বিজ্ঞ কেও হতে পারে না। এগুলি ব্যাসদেবের পিতা পরাশর মুনির বিবরণ। ঐশ্বর্যস্য সমগ্রস্য বীর্যস্য যশস্য শ্রিয়ঃ (বিষ্ণু পুরাণ ৬.৫.৪৭) জ্ঞান- বৈরাগ্য এবং একই সময়ে বৈরাগ্যবান।