BN/Prabhupada 0610 - যতক্ষণ না কেউ বর্ণ ও আশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, সে মানুষ নয়: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0610 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1973 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 8: Line 8:
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0609 - तुम कई हो जो हरे कृष्ण का जाप कर रहे हो । यही मेरी सफलता है|0609|HI/Prabhupada 0611 - जैसे ही तुम सेवा की भावना को खो दोगे, यह मंदिर एक बड़ा निराशजनक बन जाएगा|0611}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0609 - আপনারা অনেকে হরেকৃষ্ণ জপ করছেন, এটা আমার সাফল্য|0609|BN/Prabhupada 0611 - যদি তোমরা সেবার উদ্যমটি হারিয়ে ফেল, তাহলে এইসব বিশাল মন্দিরগুলি গুদামঘর হয়ে যাবে|0611}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 18: Line 18:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|XY3Sv1ImSjU|যতক্ষণ না কেউ বর্ণ ও আশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, সে মানুষ নয়। - Prabhupāda 0610}}
{{youtube_right|5HZzrQMalzc|যতক্ষণ না কেউ বর্ণ ও আশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, সে মানুষ নয়<br/> - Prabhupāda 0610}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 30: Line 30:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
যদি আপনি শ্রীকৃষ্ণকে কোন জল্পনা-কল্পনার পন্থার দ্বারা জানতে চান, শুধু এক বছর বা দু' বছর নয়... পন্থাস্তু কোটি-শত-বতসর-সংপ্রগম্য বায়োঃ অথাপি। মানসিক জল্পনা নয়, কিন্তু বায়ুর বেগে চলছে এমন কোন  বিমানে, অথবা বায়ু, কিংবা মন, মনের বেগে, তবু কোটি কোটি বৎসর পার হয়ে গেলেও, আপনি পৌঁছাতে পারবেন না। তবুও তা অবিচিন্ত্য, অচিন্তনীয় হয়েই থাকবে।
যদি আপনি শ্রীকৃষ্ণকে কোন জল্পনা-কল্পনার পন্থার দ্বারা জানতে চান, শুধু এক বছর বা দু' বছর নয়... পন্থাস্তু কোটি-শত-বতসর-সংপ্রগম্য বায়োঃ অথাপি। মানসিক জল্পনা নয়, কিন্তু বায়ুর বেগে চলছে এমন কোন  বিমানে, অথবা বায়ু, কিংবা মন, মনের বেগে, তবু কোটি কোটি বৎসর পার হয়ে গেলেও, আপনি পৌঁছাতে পারবেন না। তবুও তা অবিচিন্ত্য, অচিন্তনীয় হয়েই থাকবে। কিন্তু যদি আপনি এই কৃষ্ণ-যোগ বা ভক্তিযোগের পন্থা গ্রহণ করেন, তাহলে খুব সহজেই আপনি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারবেন। ভক্ত্যা মাম-অভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ ([[Vanisource:BG 18.55 (1972)|গীতা ১৮.৫৫]]) শ্রীকৃষ্ণকে কোনরকম ভাসাভাসা ভাবে জানাটাই যথেষ্ট নয়। সেটিও ভাল, কিন্তু আপনার তত্ত্বতঃ জানতে হবে, শ্রীকৃষ্ণ আসলে কে? সেই জ্ঞানটি 'ভক্ত্যা' - কৃষ্ণভক্তিযোগের দ্বারা অর্জন হবে। অন্যথায়,


কিন্তু যদি আপনি এই কৃষ্ণ-যোগ বা ভক্তিযোগের পন্থা গ্রহণ করেন, তাহলে খুব সহজেই আপনি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারবেন। ভক্ত্যা মাম-অভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ ([[Vanisource:BG 18.55 (1972)|গীতা ১৮.৫৫]]) শ্রীকৃষ্ণকে কোনরকম ভাসাভাসা ভাবে জানাটাই যথেষ্ট নয়। সেটিও ভাল, কিন্তু আপনার তত্ত্বতঃ জানতে হবে, শ্রীকৃষ্ণ আসলে কে? সেই জ্ঞানটি 'ভক্ত্যা' - কৃষ্ণভক্তিযোগের দ্বারা অর্জন হবে। অন্যথায়,  
:মনুষ্যাণাং সহস্রেষু,  


:মনুষ্যাণাং সহস্রেষু,
:কশ্চিদ্ যততি সিদ্ধয়ে,  
:কশ্চিদ্ যততি সিদ্ধয়ে,  
:যততাং অপি সিদ্ধানাং  
:যততাং অপি সিদ্ধানাং  
:কশ্চিন্ মাম বেত্তি তত্ত্বতঃ
::([[Vanisource:BG 7.3 (1972)|গীতা ৭.৩]])


সারা বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ রয়েছে। অধিকাংশই পশুর ন্যায় - সংস্কৃতিহীন। কারণ, আমাদের বৈদিক সংস্কৃতি অনুযায়ী, যতক্ষণ না কেউ বর্ণ এবং আশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ না করছে, সে মানুষের মধ্যেই গণ্য নয়। তাকে মানুষ বলে গ্রহণ করা হয় নি। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, মনুষ্যাণাং সহস্রেষু। কে বর্ণাশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে? কেউ না। একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। সুতরাং সেই রকম একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে ভগবান কে, শ্রীকৃষ্ণ-ই বা কে, আপনি তা বুঝতে পারবেন না।
:কশ্চিন্ মাম বেত্তি তত্ত্বতঃ


তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন 'মনুষ্যাণাং সহস্রেষু'। হাজার লক্ষ মানুষের মধ্যে কেবল একজন এই বর্ণাশ্রম ধর্ম ব্যবস্থাটি গ্রহণ করে। অর্থাৎ তাঁরা কঠোরভাবে বেদের অনুগামী। যারা বৈদিক অনুশাসন মেনে চলে তাঁদের মাঝে, অধিকাংশই কর্মকাণ্ডের প্রতি, আনুষ্ঠানিক নিয়ম-কানুনের প্রতি আসক্ত। এইরকম বহু লক্ষ মানুষ, যারা আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের প্রতি আসক্ত, তাঁদের মধ্যে কেউ একজন জ্ঞানে উন্নত হন। তাঁদের বলা হয় জ্ঞানী, অথবা জল্পনাকারী দার্শনিক। কর্মীরা নয়, জ্ঞানীরা। সুতরাং এই রকম লক্ষ লক্ষ জ্ঞানীর মধ্যে কেউ একজন 'মুক্ত' হন। ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি ([[Vanisource:BG 18.54 (1972)|গীতা ১৮.৫৪]]) এটি হল মুক্তাবস্থা।
:([[Vanisource:BG 7.3 (1972)|গীতা .]])  


যিনি ব্রহ্মকে উপলব্ধি করেছেন, তাঁর শোক করারও কিছু নেই, আকাঙ্ক্ষা করারও কিছু নেই। কারণ, কর্মী থাকাবস্থায় আমাদের দুটি রোগ থাকে, আমরা হয় কিছুর জন্য আকাঙ্ক্ষা করি নয়তো কিছুর জন্য শোক করি। যা কিছু আমার রয়েছে, যদি তা হারিয়ে যা, তাহলে আমি শোক করি। "ওহ, আমার এটি পেয়েছিলাম এখন আবার সেটি হারিয়ে গেল" আর যা কিছু আমার নেই, তা পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা করি। তাই সেটি পাওয়ার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করি। আর যখনই সেটি হারিয়ে যায়, আমরা আবার তার জন্য
সারা বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ রয়েছে। অধিকাংশই পশুর ন্যায় - সংস্কৃতিহীন। কারণ, আমাদের বৈদিক সংস্কৃতি অনুযায়ী, যতক্ষণ না কেউ বর্ণ এবং আশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ না করছে, সে মানুষের মধ্যেই গণ্য নয়। তাকে মানুষ বলে গ্রহণ করা হয় নি। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, মনুষ্যাণাং সহস্রেষু। কে বর্ণাশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে? কেউ না। একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। সুতরাং সেই রকম একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে ভগবান কে, শ্রীকৃষ্ণ-ই বা কে, আপনি তা বুঝতে পারবেন না। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন 'মনুষ্যাণাং সহস্রেষু'। হাজার লক্ষ মানুষের মধ্যে কেবল একজন এই বর্ণাশ্রম ধর্ম ব্যবস্থাটি গ্রহণ করে। অর্থাৎ তাঁরা কঠোরভাবে বেদের অনুগামী। যারা বৈদিক অনুশাসন মেনে চলে তাঁদের মাঝে, অধিকাংশই কর্মকাণ্ডের প্রতি, আনুষ্ঠানিক নিয়ম-কানুনের প্রতি আসক্ত। এইরকম বহু লক্ষ মানুষ, যারা আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের প্রতি আসক্ত, তাঁদের মধ্যে কেউ একজন জ্ঞানে উন্নত হন। তাঁদের বলা হয় জ্ঞানী, অথবা জল্পনাকারী দার্শনিক। কর্মীরা নয়, জ্ঞানীরা। সুতরাং এই রকম লক্ষ লক্ষ জ্ঞানীর মধ্যে কেউ একজন 'মুক্ত' হন। ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি ([[Vanisource:BG 18.54 (1972)|গীতা ১৮.৫৪]]) এটি হল মুক্তাবস্থা। যিনি ব্রহ্মকে উপলব্ধি করেছেন, তাঁর শোক করারও কিছু নেই, আকাঙ্ক্ষা করারও কিছু নেই। কারণ, কর্মী থাকাবস্থায় আমাদের দুটি রোগ থাকে, আমরা হয় কিছুর জন্য আকাঙ্ক্ষা করি নয়তো কিছুর জন্য শোক করি। যা কিছু আমার রয়েছে, যদি তা হারিয়ে যা, তাহলে আমি শোক করি। "ওহ, আমার এটি পেয়েছিলাম এখন আবার সেটি হারিয়ে গেল" আর যা কিছু আমার নেই, তা পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা করি। তাই সেটি পাওয়ার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করি। আর যখনই সেটি হারিয়ে যায়, আমরা আবার তার জন্য
শোক এবং কান্না করি। এটি হচ্ছে কর্মীদের স্তর।  
শোক এবং কান্না করি। এটি হচ্ছে কর্মীদের স্তর। সুতরাং ব্রহ্ম-ভূত স্তর... জ্ঞানের স্তর মানে হল তার আর কোনও আকাঙ্ক্ষাও নেই, শোকও নেই। প্রসন্নাত্মা। "ওহ, আমি হচ্ছি, অহম্ ব্রহ্মাস্মি। এই দেহের সাথে সম্পর্কিত কিছুতে আমার আর কিইবা করার আছে? আমার কর্তব্য হল চিন্ময় জ্ঞানের চর্চা করা, ব্রহ্মজ্ঞান। সুতরাং সেই স্তরেই, ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি, সম সর্বেষু ভূতেষু ([[Vanisource:BG 18.54 (1972)|গীতা ১৮.৫৪]]) সেটি হচ্ছে পরীক্ষা। তাঁর কোনও কিছুতে শোক নেই, কিছুর জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষাও নেই। তিনি সকলের প্রতি সমদর্শী। পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ।


সুতরাং ব্রহ্ম-ভূত স্তর... জ্ঞানের স্তর মানে হল তার আর কোনও আকাঙ্ক্ষাও নেই, শোকও নেই। প্রসন্নাত্মা। "ওহ, আমি হচ্ছি, অহম্ ব্রহ্মাস্মি। এই দেহের সাথে সম্পর্কিত কিছুতে আমার আর কিইবা করার আছে? আমার কর্তব্য হল চিন্ময় জ্ঞানের চর্চা করা, ব্রহ্মজ্ঞান। সুতরাং সেই স্তরেই, ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি, সম সর্বেষু ভূতেষু  ([[Vanisource:BG 18.54 (1972)|গীতা ১৮.৫৪]]) সেটি হচ্ছে পরীক্ষা। তাঁর কোনও কিছুতে শোক নেই, কিছুর জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষাও নেই। তিনি সকলের প্রতি সমদর্শী। পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ।
:বিদ্যাবিনয়সম্পন্নে,  


:বিদ্যাবিনয়সম্পন্নে,
:ব্রাহ্মণে গবি হস্তিনি,  
:ব্রাহ্মণে গবি হস্তিনি,  
:শুনিচৈব শ্বপাকে চ,  
:শুনিচৈব শ্বপাকে চ,  
:পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ  
:পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ  
:([[Vanisource:BG 5.18 (1972)|গীতা ৫.১৮]])  
:([[Vanisource:BG 5.18 (1972)|গীতা ৫.১৮]])  


তিনি কোন ভেদভাব করেন না। অতএব, এই স্তরে যখন কেউ স্থিত হন, তাহলে মদ্ভক্তি লভতে পরাম্ ([[Vanisource:BG 18.54 (1972)|গীতা ১৮.৫৪]]), তিনি তখন ভক্তির স্তরে উপনীত হন। এবং যখন তিনি ভক্তির স্তরে আসেন, ভক্ত্যা মাম্ অভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ ([[Vanisource:BG 18.55 (1972)|গীতা ১৮.৫৫]]), তবেই কেবল তিনি তত্ত্বতঃ জানতে সক্ষম।  
তিনি কোন ভেদভাব করেন না। অতএব, এই স্তরে যখন কেউ স্থিত হন, তাহলে মদ্ভক্তি লভতে পরাম্ ([[Vanisource:BG 18.54 (1972)|গীতা ১৮.৫৪]]), তিনি তখন ভক্তির স্তরে উপনীত হন। এবং যখন তিনি ভক্তির স্তরে আসেন, ভক্ত্যা মাম্ অভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ ([[Vanisource:BG 18.55 (1972)|গীতা ১৮.৫৫]]), তবেই কেবল তিনি তত্ত্বতঃ জানতে সক্ষম।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:07, 29 June 2021



Lecture on BG 7.1 -- Calcutta, January 27, 1973

যদি আপনি শ্রীকৃষ্ণকে কোন জল্পনা-কল্পনার পন্থার দ্বারা জানতে চান, শুধু এক বছর বা দু' বছর নয়... পন্থাস্তু কোটি-শত-বতসর-সংপ্রগম্য বায়োঃ অথাপি। মানসিক জল্পনা নয়, কিন্তু বায়ুর বেগে চলছে এমন কোন বিমানে, অথবা বায়ু, কিংবা মন, মনের বেগে, তবু কোটি কোটি বৎসর পার হয়ে গেলেও, আপনি পৌঁছাতে পারবেন না। তবুও তা অবিচিন্ত্য, অচিন্তনীয় হয়েই থাকবে। কিন্তু যদি আপনি এই কৃষ্ণ-যোগ বা ভক্তিযোগের পন্থা গ্রহণ করেন, তাহলে খুব সহজেই আপনি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারবেন। ভক্ত্যা মাম-অভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ (গীতা ১৮.৫৫) শ্রীকৃষ্ণকে কোনরকম ভাসাভাসা ভাবে জানাটাই যথেষ্ট নয়। সেটিও ভাল, কিন্তু আপনার তত্ত্বতঃ জানতে হবে, শ্রীকৃষ্ণ আসলে কে? সেই জ্ঞানটি 'ভক্ত্যা' - কৃষ্ণভক্তিযোগের দ্বারা অর্জন হবে। অন্যথায়,

মনুষ্যাণাং সহস্রেষু,
কশ্চিদ্ যততি সিদ্ধয়ে,
যততাং অপি সিদ্ধানাং
কশ্চিন্ মাম বেত্তি তত্ত্বতঃ
(গীতা ৭.৩)

সারা বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ রয়েছে। অধিকাংশই পশুর ন্যায় - সংস্কৃতিহীন। কারণ, আমাদের বৈদিক সংস্কৃতি অনুযায়ী, যতক্ষণ না কেউ বর্ণ এবং আশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ না করছে, সে মানুষের মধ্যেই গণ্য নয়। তাকে মানুষ বলে গ্রহণ করা হয় নি। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, মনুষ্যাণাং সহস্রেষু। কে বর্ণাশ্রম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে? কেউ না। একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। সুতরাং সেই রকম একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে ভগবান কে, শ্রীকৃষ্ণ-ই বা কে, আপনি তা বুঝতে পারবেন না। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন 'মনুষ্যাণাং সহস্রেষু'। হাজার লক্ষ মানুষের মধ্যে কেবল একজন এই বর্ণাশ্রম ধর্ম ব্যবস্থাটি গ্রহণ করে। অর্থাৎ তাঁরা কঠোরভাবে বেদের অনুগামী। যারা বৈদিক অনুশাসন মেনে চলে তাঁদের মাঝে, অধিকাংশই কর্মকাণ্ডের প্রতি, আনুষ্ঠানিক নিয়ম-কানুনের প্রতি আসক্ত। এইরকম বহু লক্ষ মানুষ, যারা আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডের প্রতি আসক্ত, তাঁদের মধ্যে কেউ একজন জ্ঞানে উন্নত হন। তাঁদের বলা হয় জ্ঞানী, অথবা জল্পনাকারী দার্শনিক। কর্মীরা নয়, জ্ঞানীরা। সুতরাং এই রকম লক্ষ লক্ষ জ্ঞানীর মধ্যে কেউ একজন 'মুক্ত' হন। ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি (গীতা ১৮.৫৪) এটি হল মুক্তাবস্থা। যিনি ব্রহ্মকে উপলব্ধি করেছেন, তাঁর শোক করারও কিছু নেই, আকাঙ্ক্ষা করারও কিছু নেই। কারণ, কর্মী থাকাবস্থায় আমাদের দুটি রোগ থাকে, আমরা হয় কিছুর জন্য আকাঙ্ক্ষা করি নয়তো কিছুর জন্য শোক করি। যা কিছু আমার রয়েছে, যদি তা হারিয়ে যা, তাহলে আমি শোক করি। "ওহ, আমার এটি পেয়েছিলাম এখন আবার সেটি হারিয়ে গেল" আর যা কিছু আমার নেই, তা পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা করি। তাই সেটি পাওয়ার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করি। আর যখনই সেটি হারিয়ে যায়, আমরা আবার তার জন্য শোক এবং কান্না করি। এটি হচ্ছে কর্মীদের স্তর। সুতরাং ব্রহ্ম-ভূত স্তর... জ্ঞানের স্তর মানে হল তার আর কোনও আকাঙ্ক্ষাও নেই, শোকও নেই। প্রসন্নাত্মা। "ওহ, আমি হচ্ছি, অহম্ ব্রহ্মাস্মি। এই দেহের সাথে সম্পর্কিত কিছুতে আমার আর কিইবা করার আছে? আমার কর্তব্য হল চিন্ময় জ্ঞানের চর্চা করা, ব্রহ্মজ্ঞান। সুতরাং সেই স্তরেই, ব্রহ্মভূত প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি, সম সর্বেষু ভূতেষু (গীতা ১৮.৫৪) সেটি হচ্ছে পরীক্ষা। তাঁর কোনও কিছুতে শোক নেই, কিছুর জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষাও নেই। তিনি সকলের প্রতি সমদর্শী। পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ।

বিদ্যাবিনয়সম্পন্নে,
ব্রাহ্মণে গবি হস্তিনি,
শুনিচৈব শ্বপাকে চ,
পণ্ডিতা সমদর্শিনঃ
(গীতা ৫.১৮)

তিনি কোন ভেদভাব করেন না। অতএব, এই স্তরে যখন কেউ স্থিত হন, তাহলে মদ্ভক্তি লভতে পরাম্ (গীতা ১৮.৫৪), তিনি তখন ভক্তির স্তরে উপনীত হন। এবং যখন তিনি ভক্তির স্তরে আসেন, ভক্ত্যা মাম্ অভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ (গীতা ১৮.৫৫), তবেই কেবল তিনি তত্ত্বতঃ জানতে সক্ষম।