BN/Prabhupada 0969 - যদি তুমি তোমার জিহ্বাকে ভগবানের সেবায় নিযুক্ত কর, তিনি নিজেকে তোমার কাছে প্রকাশ করবেন
730400 - Lecture BG 02.13 - New York
ভারতে, শারীরিক উপভোগ মানে প্রথমে, জিহ্বা। জিহ্বার উপভোগ। সর্বত্র। এখানেও। জিহ্বার উপভোগ। তাই যদি আমরা আমাদের ইন্দ্রিয় সংযত করতে চাই... তাই ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, পূর্বতন আচার্যদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, তিনি বলেছেন যে " তোমার জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করো।" তোমার জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করো। এবং ভাগবতমেও বলা হয়েছে, অতঃ শ্রীকৃষ্ণ নামাদি ন ভবেদ্ গ্রাহ্যম্ ইন্দ্রিয়ৈঃ (ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১.২.২৩৪) আমাদের এই অল্পবুদ্ধি ইন্দ্রিয়ের দ্বারা, আমরা শ্রী কৃষ্ণকে বুঝতে পারব না। এটা সম্ভব নয়। ইন্দ্রিয়গুলো এতটাই অপূর্ণ যে তুমি সঠিক জ্ঞান আহরণ করতে পারবে না, জাগতিক অথবা পারমার্থিক, এই ইন্দ্রিয়ের দ্বারা।সেটা সম্ভব নয়। যদিও তুমি এই জড় জগতের বিষয়বস্তু সঠিকভাবে জানতে পারবে না। ঠিক যেমন তারা চন্দ্র গ্রহ সম্পর্কে গবেষণা করছে, সবথেকে কাছের গ্রহ। এই চন্দ্র গ্রহের পাশে, লক্ষ লক্ষ এবং কোটি কোটি আরও অন্য গ্রহ রয়েছে। তারা সেগুলো সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না। কারণ ইন্দ্রিয়গুলো অপূর্ণ। তুমি কীভাবে বুঝতে পারবে? আমি দেখতে পারি, ধর এক মাইল পর্যন্ত। কিন্তু যখন লক্ষ কোটি মাইলের প্রশ্ন আসে, কীভাবে তুমি তোমার ইন্দ্রিয়গুলো কাজে লাগাতে পার এবং সঠিক জ্ঞান পেতে পার? তাই তুমি এমনকি জাগতিক জ্ঞানও সঠিকভাবে আহরণ করতে পারবে না এই ইন্দ্রিয়গুলোর দ্বারা। ভগবান অথবা পারমার্থিক জ্ঞান এর কথা আর কি বলব? এটা বাইরে, মনসগোচর, তোমার চিন্তার বাইরে। তাই শাস্ত্রে বলা হয়েছেঃ অতঃ শ্রীকৃষ্ণ নামাদি ন ভবেদ্ গ্রাহ্যম্ ইন্দ্রিয়ৈঃ (ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১.২.২৩৪) যদি তুমি ভগবানকে জানতে চাও, মানসিক জল্পনার দ্বারা, সেটা হল ব্যাঙের দর্শন, ডঃ ব্যাঙ, আটলান্টিক মহাসাগর গণনা করছিলেন, কুয়োতে বসে। তাকে বলা হয় ব্যাঙের দর্শন। তুমি বুঝতে পারবে না। তাহলে এটা বোঝা কীভাবে সম্ভব? তার পরের লাইন হল সেবোন্মুখে হি জিহ্বাদৌ স্বয়মেব স্ফুরত্যদঃ তুমি যদি তোমার জিহ্বা ভগবানের সেবায় কাজে লাগাও, তিনি নিজেকে তোমার কাছে প্রকাশিত করবেন তিনি প্রকাশ করবেন, প্রকাশিত হবেন।
তাই আমাদের এই জিহ্বা কে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জিহ্বার কাজ কি? জিহ্বার কাজ স্বাদ আস্বাদন করা এবং কথা বলা। তাই তার কথা বলাকে ভগবান, শ্রী কৃষ্ণের সেবায় কাজে লাগাও। হরে কৃষ্ণ মানে "ও কৃষ্ণ, ও ভগবানের শক্তি, দয়া করে আমাকে আপনার সেবায় নিযুক্ত করুন।" হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে... এটিই হচ্ছে হরে কৃষ্ণের অর্থ।এর অন্য আর কোন অর্থ নেই। "ও আমার ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এবং তার শক্তি, রাধারানী, বিশেষত, দয়া করে আপনারা দুজনে আমাকে আপনাদের সেবায় নিযুক্ত করুন।" নরোত্তম দাস ঠাকুর বলেছেনঃ হা হা প্রভু নন্দ-সূত বৃষভানু-সূতা-যুতঃ "আমার ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, আপনি নন্দ মহারাজের পুত্র রূপে পরিচিত। এবং আপনার নিত্য সঙ্গিনী রাধারানী, তিনি বৃষভানু মহারাজের কন্যা রূপে পরিচিত। আপনারা দুজনেই এখানে আছেন।" হা হা প্রভু নন্দ-সূত বৃষভানু-সূতা...করুণা করহ এই -বার, " এখন আমি তোমাদের কাছে এসেছি। তোমারা দুজনে দয়া করে আমাকে করুণা করো।" এটিই হরে কৃষ্ণঃ " আমার প্রতি করুণা প্রদর্শন করো।" নরোত্তম দাস কয়, না ঠেলিয়ো রাঙ্গা পায়ঃ "তোমার রাঙ্গা চরণ, যা তোমার আছে, আমাকে অবহেলা করো না অথবা তোমার চরণ দ্বারা দূরে ঠেলে দিও না।" আমি মনে করি যদি শ্রীকৃষ্ণ লাথি মারেন অথবা দূরে ঠেলে দেন, সেটা আমাদের মহা সৌভাগ্য। তুমি দেখ। যদি শ্রীকৃষ্ণ তার রাঙ্গা চরণ দিয়ে লাথি মারেনঃ "তুমি চলে যাও," সেটিও মহা সৌভাগ্য। গ্রহণ করলে আর কি কথা? ঠিক যেমন যখন শ্রীকৃষ্ণ কালিয় নাগের ফণাতে লাথি মারছিলেন। তখন কালীয় নাগের স্ত্রীরা প্রার্থনা করেছিলেনঃ "আমার প্রিয় প্রভু, আমি জানি না, এই দুরাচারী, কালীয়, তিনি কীভাবে এত ভাগ্যবান হলেন যে, তিনি তার ফণাতে আপনার পদাঘাত পাচ্ছেন? আপনার রাঙ্গা চরণের স্পর্শ, মহান, মহান মুনিরা, পুণ্যাত্মা মানুষেরা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ধ্যান করছে, কিন্তু এই কালীয়...আমি জানি না, সে তার পূর্ব জন্মে এমন কি করেছে যে সে এত ভাগ্যবান যে তার ফণা আপনার দ্বারা পদাঘাত পাচ্ছে?"