BN/Prabhupada 0062 - ২৪ ঘন্টা কৃষ্ণকে দেখুন

Revision as of 07:16, 4 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 1.8.18 -- Chicago, July 4, 1974

শ্রীল প্রভুপাদঃ আরাধিতো যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্ যদি তুমি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করতে পার, তাহলে আর কোনও তপস্যা বা কৃচ্ছতার দরকার নেই। কারণ আত্মোপলব্ধি বা ভগবানকে জানার জন্য বহু রকমের পন্থা, তপস্যা কৃচ্ছতা রয়েছে। ভগবান কোথায় আছেন তা দেখতে কখনও কখনও আমরা বনে যাই, বিভিন্ন ধরণের পন্থা রয়েছে, কিন্তু শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা কর, আরাধিতো যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্, তাহলে আর কোনও কঠোর তপস্যা বা কৃচ্ছতা সাধনের প্রয়োজনীয়তা নেই। এবং নারাধিতো, নারাধিতো যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্। চরমে অনেক অনেক কঠোর থেকে কঠোরতম তপস্যা বা কৃচ্চছতার পরও যদি তুমি এটাই না জান যে শ্রীকৃষ্ণ কে, তাহলে এর কি অর্থ রয়েছে? এটি মূল্যহীন। নারাধিতো যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্, অন্তর্বাহির্যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্। একই ভাবে, যদি তুমি ২৪ ঘণ্টাই অন্তরে এবং বাহিরে শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পারো তাহলে সেটিই সমস্ত ধরণের তপস্যার অন্ত। এখানে শ্রীকৃষ্ণ আবারো বলছেন, কুন্তীদেবী বলেছেন, যে "যদিও শ্রীকৃষ্ণ অন্তরে এবং বাহিরে বিদ্যমান, যেহেতু তাঁকে দেখার মতো চোখ আমাদের নেই, "অলক্ষ্যম্" - অদৃশ্য। ঠিক যেমন এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে শ্রীকৃষ্ণ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন কেবল মাত্র পাঁচ পাণ্ডবেরা এবং তাঁদের মাতা কুন্তীদেবী বুঝতে পেরেছিলেন যে শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান। আর অল্প কিছু ব্যক্তিরা (তাঁকে বুঝেছিলেন)। যদিও শ্রীকৃষ্ণ সেখানে উপস্থিৎ ছিলেন, অন্য অনেকেই তাঁকে সাধারণ মানুষ বলে মনে করেছিলেন। অবজানন্তি মাম্ মূঢ়া মানুষীং তনুমাশ্রিতং। যেহেতু তিনি মানব সমাজের প্রতি অত্যন্ত কৃপাপরায়ণ ছিলেন তাই তিনি স্বয়ং অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেহেতু তাঁকে দেখার মতো চোখ ওদের ছিল না, তাই ওরা দেখতে পায় নি। তাই কুন্তী দেবী বলছেন 'অলক্ষ্যম্' "আপনি অদৃশ্য'। যদিও আপনি "অন্তঃবহিঃ, সর্বভূতানাং" তিনি কেবল ভক্তদেরই অন্তঃবহিঃ নন, সকলেরই। প্রত্যেকেরই হৃদয়ে শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান। ঈশ্বর সর্বভূতানাং হৃদ্দেশে। এইখানে, হৃদ্দেশে, হৃদয়ে শ্রীকৃষ্ণ বিরাজ করেন। তাই এই ধ্যান বা যোগ পন্থা হচ্ছে কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে হৃদয়ে খুঁজে বের করা যায়। তাকেই বলা হয় ধ্যান। তাই শ্রীকৃষ্ণের অবস্থান সর্বদাই চিন্ময়। যদি আমরা কৃষ্ণভাবনামৃতের এই চিন্ময় পন্থাটি গ্রহণ করি, বিধিবদ্ধ নিয়মগুলো পালন করি এবং পাপময় জীবন থেকে মুক্ত থাকতে চেষ্টা করি, কারণ পাপময় কর্মে লিপ্ত থাকা অবস্থায় তুমি শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে বা বুঝতে পারবে না। তা সম্ভব নয়। ন মাম্ দুষ্কৃতিনো মূঢ়াঃ প্রপদ্যন্তে নরাধমাঃ যারা দুষ্কৃতিনঃ - কৃতি মানে সুমেধা, সুমেধাসম্পন্ন; কিন্তু দুষ্কৃতি মানে যারা তাদের মেধাকে পাপকার্যে নিযুক্ত করেছে, তাই আমরা অনুরোধ করি যে এটি আসলে আমাদের অনুরোধ নয়, এইসব বিধি নিয়ম পাপকার্য থেকে মুক্ত থাকতে হলে এগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে। পাপকার্য বা পাপময় জীবনের চারটি স্তম্ভ হচ্ছে অবৈধ যৌনসঙ্গ, আমিষাহার, মাদকনেশা এবং দ্যূতক্রীড়া। তাই আমাদের শিষ্যদের উপদেশ দেয়া হয়, উপদেশ নয়, তাদেরকে অবশ্যই এগুলো মেনে চলতে হবে; অন্যথায় তারা অধঃপতিত হতে পারে। কারণ একজন পাপী লোক ভগবানকে দর্শন করতে পারবে না। একদিকে আমাদের এই বিধিবদ্ধ নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে আর ভগবৎসেবা চালিয়ে যেতে হবে, অন্যদিকে আমাদেরকে এই পাপময় কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে। তবেই শ্রীকৃষ্ণ উপস্থিত হবেন আর তুমি তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারবে। আমরা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গেই থাকতে পারব। শ্রীকৃষ্ণ এতোই দয়ালু। ঠিক যেমন কুন্তী মহারাণী শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর ভাইপো'র মতো কথা বলছেন, ঠিক একই রকম ভাবে তুমিও শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে কথা বলতে পারবে, তাঁকে তোমার পুত্ররূপে, তোমার পতিরূপে, তোমার প্রেমিক রূপে, তোমার বন্ধুরূপে, তোমার প্রভুরূপে; ঠিক যেমন তুমি চাও।

আমি এই শিকাগো মন্দিরটি দেখে অত্যন্ত আনন্দিত। তোমরা খুব ভালোভাবে সবকিছু করছো আর মন্দিরকক্ষটিও খুব সুন্দর। তাই এই সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে এগিয়ে চল এবং শ্রীকৃষ্ণকে উপলব্ধি করতে চেষ্টা কর। তাহলেই তোমার জীবন সার্থক হবে।

সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ জয়। হরি বোল।