BN/Prabhupada 0597 - আমারা জীবনে একটু আনন্দ পেতে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছি

Revision as of 17:03, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.23 -- Hyderabad, November 27, 1972

প্রত্যেকটি জীব জড় জগতের উপর প্রভুত্ব করার চেষ্টা করছে । এটিই তার ব্যাধি। সে প্রভু হতে চায়। সে হচ্ছে দাস, কিন্তু কৃত্রিমভাবে সে প্রভু হতে চায়। এটিই হচ্ছে রোগ। প্রত্যেকেই.... কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে সে যখন জড় জগতের উপর আধিপত্য করতে ব্যর্থ হয়, তখন সে বলে, " ওহ্‌, এই জড় জগত মিথ্যা। এখন আমি ভগবানের সঙ্গে এক হয়ে যাব।" ব্রহ্ম সত্যম্‌ জগন্মিথ্যা। কিন্তু চিন্ময় আত্মা যেহেতু শ্রীকৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাই প্রকৃতিগত ভাবেই সে আনন্দময়। সে আনন্দ খুঁজছে। আমাদের প্রত্যেকেই কঠোর পরিশ্রম করছি জীবনে কিছু আনন্দ খুঁজে পাওয়ার জন্য।

কিন্তু জীবনের এই আনন্দ ব্রহ্মজ্যোতিতে পাওয়া যায়না। তাই শ্রীমদ্ভা‌গবত থেকে আমরা এই তথ্য পাই যে, আরুহ্য কৃচ্ছেণ পরং পদং(শ্রীমদ্ভাগবত ১০.২.৩২)। কৃচ্ছেণ, কঠোর তপশ্চর্যা আর কৃচ্ছতা সাধন করার পর কেউ একজন ব্রহ্মজ্যোতিতে মিশে যেতে পারে। সাযুজ্য মুক্তি। একে বলে সাযুজ্য মুক্তি। সাযুজ্য, মিশে যাওয়া। সুতরাং আরুহ্য কৃচ্ছেণ পরং পদং। প্রত্যেকেই ব্রহ্মের অস্তিত্বের সাথে মিশে যাওয়ার জন্য এই পর্যায়ে যায়। কঠোর তপশ্চর্যা আর কৃচ্ছতা সাধন করার পর, তবুও তারা অধপতিত হয়। পতন্ত্য অধঃ। অধঃ মানে পুনরায় এই জড় জগতে ফিরে আসে। আরুহ্য কৃচ্ছেণ পরং পদং ততঃ পতন্ত্যধোঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১০.২.৩২)। কেন অধপতিত হয়? অনাদৃত যুশ্মাদঅঙ্ঘ্রইয়ঃ। তারা কখনও স্বীকার করে না যে ভগবান একজন ব্যক্তি। তারা কখনও এটা মানে না। তাদের ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক কখনও এটা মানতে পারেনা যে ভগবান একজন ব্যক্তি হতে পারেন। কারণ তার শুধু নিজের অথবা অন্য মানুষের ব্যাপারে অভিজ্ঞতা আছে। ভগবান যদি তোমার আমার মতো মানুষই হয়, তাহলে তিনি কিভাবে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড, অসংখ্য বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেন?

তাই ভগবানকে উপলব্ধি করার জন্য যথেষ্ট পুণ্য কর্মের প্রয়োজন হয়। তাই শ্রীমদ্ভগবতগীতায় বলা হয়েছে, বহুনাং জন্মনামন্তে (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৭.১৯)। নির্বিশেষ দার্শনিক উপায়ে চিন্তা ভাবনা করার পর, যখন কেউ পরিপক্ক হয়, বহুনাং জন্মনামন্তে জ্ঞানবান, যখন সে প্রকৃতই জ্ঞানী হয়... এর আগ পর্যন্ত সে উপলব্ধি করতে পারে না যে পরম সত্য একজন ব্যক্তি, সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.১)। ব্রহ্মেতি পরমাত্মেতি ভগবান ইতি শব্দতে। ভগবান, এই বদন্তি তৎ তত্ত্ব-বিদঃতত্ত্বম যৎ জ্ঞানম্‌ অদ্বয়ম্‌ (শ্রীমদ্ভা‌গবতম ১.২.১১)। শ্রীমদ্ভাগবতমে এটি উল্লেখ আছেঃ " যারা পরম সত্যকে জানেন তাঁরা জানেন যে, ব্রহ্ম, পরমাত্মা এবং ভগবান , তাঁরা একই। এটি উপলব্ধির বিভিন্ন পর্যায় মাত্র।" ঠিক যেমন যদি তুমি একটি পাহাড়কে অনেক দূর থেকে দেখ তাহলে, অব্যক্ত, অস্পষ্ট আর মেঘাচ্ছন্ন কিছু একটা রূপে দেখতে পাবে। যদি তুমি আরও সামনে এগিয়ে যেতে থাক, তখন তুমি দেখতে পাবে এটি সবুজ কিছু একটা। আর যদি তুমি প্রকৃতই পাহাড়ের মধ্যে যাও, তাহলে তুমি দেখতে পাবে সেখানে অনেক পশু পাখি, গাছপালা আর মানুষ রয়েছে। একই ভাবে যারা পরম সত্যকে বহুদূর থেকে জানার চেষ্টা করছে, তারা অনুমানের মাধ্যমে উপলব্ধি করছে, অব্যক্ত ব্রহ্ম। যারা আরও উন্নত, যোগীরা, তাঁরা ভগবানের পরমাত্মা রূপের দর্শন করতে পারেন। ধ্যানাবস্থিততদ্‌গতেন মনসা পশ্যন্তি যং যোগীনো (শ্রীমদ্ভা‌গবতম ১২.১৩.১)। তাঁরা দেখতে পারেন, ধ্যানাবস্থিত, তাঁদের নিজেদের হৃদয়ে অবস্থিত। যা হচ্ছে ভগবানের পরমাত্মা রূপ। আর যারা ভক্ত তাঁরা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দেখেন, চোখের সামনে, একজন অন্যজনকে। নিত্যো নিত্যানাম্‌ চেতনশ্চেতনানাম ( কঠোপনিষদ্‌ ২.২.১৩)।