BN/Prabhupada 0615 - ভালোবাসা এবং উৎসাহের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের জন্য কর্ম কর, সেটিই তোমার কৃষ্ণভাবনামৃত: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0615 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1973 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 7: Line 7:
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0614 - আমাদের অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে, একবার অধঃপতন মানে লক্ষ লক্ষ বছরের দূরত্বে পিছিয়ে পড়া।|0614|BN/Prabhupada 0616 - ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শুদ্র - এটি স্বাভাবিক বিভাজন|0616}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0614 - हमें बहुत सावधान रहना चाहिए, पतन का मतलब है लाखों सालों का अंतराल|0614|HI/Prabhupada 0616 - ब्राह्मण, क्षत्रिय, वैश्य, शूद्र, यह प्राकृतिक विभाजन है|0616}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 19: Line 17:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|qRwywbpaIcw|ভালোবাসা এবং উৎসাহের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের জন্য কর্ম কর, সেটিই তোমার কৃষ্ণভাবনামৃত <br />- Prabhupāda 0615}}
{{youtube_right|GGSWDe3sNbs|ভালোবাসা এবং উৎসাহের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের জন্য কর্ম কর, সেটিই তোমার কৃষ্ণভাবনামৃত <br />- Prabhupāda 0615}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 31: Line 29:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
মায়াবাদীরা, দুধরণের মায়াবাদী রয়েছেঃ নির্বিশেষবাদী এবং শূন্যবাদী। তারা সকলেই মায়াবাদী। তাদের দর্শন একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত ভালোই, কেন না মূর্খ লোকেরা এর চেয়ে বেশি বুঝতেই পারে না। একটি মূর্খ লোককে যদি জানানো হয় যে চিন্ময় জগতে এই জগতের চেয়েও উন্নত জীবন রয়েছে, সেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবক হয়ে থাকতে হয়, তাহলে তারা ভাবে, "আমি এই জগতের সেবক হয়েই ছিলাম, অনেক দুঃখভোগ করেছি। আবার শ্রীকৃষ্ণের সেবক হওয়া?" "ওহ্..." তাদের কাঁপুনি উঠে যায়। "ওহ্, না, না। এসব ভাল নয়। এটি ভাল নয়।"  
মায়াবাদীরা, দুধরণের মায়াবাদী রয়েছেঃ নির্বিশেষবাদী এবং শূন্যবাদী। তারা সকলেই মায়াবাদী। তাদের দর্শন একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত ভালোই, কেন না মূর্খ লোকেরা এর চেয়ে বেশি বুঝতেই পারে না। একটি মূর্খ লোককে যদি জানানো হয় যে চিন্ময় জগতে এই জগতের চেয়েও উন্নত জীবন রয়েছে, সেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবক হয়ে থাকতে হয়, তাহলে তারা ভাবে, "আমি এই জগতের সেবক হয়েই ছিলাম, অনেক দুঃখভোগ করেছি। আবার শ্রীকৃষ্ণের সেবক হওয়া?" "ওহ্..." তাদের কাঁপুনি উঠে যায়। "ওহ্, না, না। এসব ভাল নয়। এটি ভাল নয়।" যেই না তারা সেবার কথা শোনে, তারা এই জগতের আজেবাজে সব সেবার কথা মনে করে। তারা এটি ভাবতেই পারে না যে চিন্ময় জগতেও সেবা রয়েছে, কিন্তু সেই সেবায় শুধুই আনন্দ। সেখানে সকলেই আরও বেশি বেশি করে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করতে চান। সেটিই হচ্ছে চিন্ময় জগত। তারা তা বুঝতে পারে না। সুতরাং এইসব নির্বিশেষবাদীরা একে এইভাবে ভেবে নেয়। ঠিক যেমন একজন শয্যাশায়ী রোগগ্রস্ত ব্যক্তি, তাকে যদি জানানো হয় যে, "যখন আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, তখন আপনি ভালোভাবে খেতে পারবেন, আপনি হাঁটতে পারবেন," সে ভাবে "আবারও হাঁটা? আবারও খাওয়া?" কেন না সেই ব্যক্তি শুধু তেতো ঔষধ আর সাগুদানা খেতেই অভ্যস্ত। এসব খুব একটা স্বাদের নয়। এছাড়া আরও কত কি... বিছানাতেই মল-মূত্র ত্যাগ করা। তাই যখনি তাকে জানানো হয় যে, সুস্থ হয়ে গেলে তাকে আবার মল-মূত্র ত্যাগ করতে হবে, খাওয়া-দাওয়া করতে হবে, কিন্তু সেসময় খাওয়া-দাওয়া খুব উপাদেয় হবে," সেই রোগী এসব বুঝতে পারে না। সে বলে, "ওইসব খাওয়া-দাওয়া এরকমই কিছু হবে।"  
 
যেই না তারা সেবার কথা শোনে, তারা এই জগতের আজেবাজে সব সেবার কথা মনে করে। তারা এটি ভাবতেই পারে না যে চিন্ময় জগতেও সেবা রয়েছে, কিন্তু সেই সেবায় শুধুই আনন্দ। সেখানে সকলেই আরও বেশি বেশি করে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করতে চান। সেটিই হচ্ছে চিন্ময় জগত। তারা তা বুঝতে পারে না। সুতরাং এইসব নির্বিশেষবাদীরা একে এইভাবে ভেবে নেয়।  
 
ঠিক যেমন একজন শয্যাশায়ী রোগগ্রস্ত ব্যক্তি, তাকে যদি জানানো হয় যে, "যখন আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, তখন আপনি ভালোভাবে খেতে পারবেন, আপনি হাঁটতে পারবেন," সে ভাবে "আবারও হাঁটা? আবারও খাওয়া?" কেন না সেই ব্যক্তি শুধু তেতো ঔষধ আর সাগুদানা খেতেই অভ্যস্ত। এসব খুব একটা স্বাদের নয়। এছাড়া আরও কত কি... বিছানাতেই মল-মূত্র ত্যাগ করা। তাই যখনি তাকে জানানো হয় যে, সুস্থ হয়ে গেলে তাকে আবার মল-মূত্র ত্যাগ করতে হবে, খাওয়া-দাওয়া করতে হবে, কিন্তু সেসময় খাওয়া-দাওয়া খুব উপাদেয় হবে," সেই রোগী এসব বুঝতে পারে না। সে বলে, "ওইসব খাওয়া-দাওয়া এরকমই কিছু হবে।"  
 
সুতরাং মায়াবাদীরা বুঝতে পারে না যে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা শুধুই সুখ আর আনন্দময়। তারা সেটি বুঝতে পারে না। তাই তারা মায়াবাদীতে পরিণত হয়, তারা ভাবে "না, পরম সত্য একজন ব্যক্তি হতে পারেন না।" এটি বৌদ্ধ দর্শনের আরেকটি দিক। নির্বিশেষ মানে শুন্য। বৌদ্ধ মতবাদটিও শুন্য। সুতরাং বৌদ্ধ মতবাদে তাদের চরম লক্ষ্য শুন্য এবং এই মায়াবাদীদেরও পরম লক্ষ্য শুন্য। ন তে বিদুঃ স্বার্থগতিং হি বিষ্ণুং ([[Vanisource:SB 7.5.31|ভাগবত ৭.৫.৩১]])। তারা বুঝতে পারে না যে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার মধ্য দিয়ে এক অপূর্ব আনন্দময় জীবন রয়েছে।
 
অতএব এখানে অর্জুন একজন মানুষের মতো আচরণ করছেন, তিনি শ্রীকৃষ্ণকে বলছেন, "তুমি আমাকে সুখী হবার জন্য, রাজ্য পাবার জন্য যুদ্ধ  করতে বলছ, কিন্তু আমারই আত্মীয়দের হত্যা করে?" ওহ্, নিমিত্তানি বিপরীতানি। তুমি আমাকে বিপথে চালিত করছ। নিমিত্তানি চ পশ্যামি বিপরীতানি। "আমি আমার আত্মীয়দের হত্যা করে সুখী হব না।  তা সম্ভব নয়। তুমি কিভাবে আমাকে এমন কাজে প্ররোচিত করতে পারো?" তাই তিনি বললেন, নিমিত্তানি চ পশ্যামি বিপরীতানি। "না, না"। ন চ শক্নোমি অবস্থাতুম্ঃ আমি এখানে আর দাঁড়াতে পারছি না। আমি ফিরে যাব। আমার রথ ঘুরিয়ে নাও। আমি এখানে থাকব না। ন চ শক্নোমি অবস্থাতুম্ ভ্রমতীবা চ মে মনঃ। ([[Vanisource:BG 1.30 (1972)|গীতা ১.৩০]])। "আমি হতবুদ্ধি, আমি এখন সংশয়গ্রস্ত।"
 
সুতরাং এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। এই জড় জগতে আমরা সকলেই সবসময়ই সমস্যাগ্রস্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়। আর যখনই জড়বাদী লোকেদের কাছে উন্নত কিছুর প্রস্তাব করা হয় যে, "আপনি এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত গ্রহণ করুন, আপনি সুখী হবেন।" তিনি তখন তার উল্টোটা দেখেন, নিমিত্তানি বিপরীতানি। এই কৃষ্ণভাবনামৃত দিয়ে আমি কিই বা আর সুখী হতে পারব? আমার পরিবার সমস্যায় রয়েছে অথবা আমি কত কত ঝামেলায় রয়েছি। এই কৃষ্ণভাবনামৃত দিয়ে আর কি সাহায্য হবে?" নিমিত্তানি চ বিপরীতানি।  এই হচ্ছে জড় জাগতিক অবস্থা। সুতরাং সময়ের প্রয়োজন, এটি বুঝতে একটু সময় লাগবে। তা হচ্ছে ভগবদ্গীতা।
 
সেই একই অর্জুন। তিনি এখন দেখছেন, নিমিত্তানি চ বিপরীতানি। যখন তিনি ভগবদ্গীতা বুঝবেন, তখন তিনিই বলবেন, "হ্যাঁ, কৃষ্ণ, তুমি যা বলছ তাই-ই ঠিক, সেটিই ঠিক।" কারণ অর্জুনকে উপদেশ দেয়ার পর শ্রীকৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করবেন, "এখন তুমি  কি করতে চাও?" যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ জোর করেন না, তাই শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "আমার শরণাগত হও।" তিনি বলছেন না, "তোমাকে আমার শরণাগত হতেই হবে। আমি ভগবান, তুমি আমার নিত্য অবিচ্ছেদ্য অংশ।" না, তিনি কখনই তা বলবেন না। কারণ তিনি আপনাকে ক্ষুদ্র স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাতে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না। তা না হলে একটি পাথর আর জীবসত্ত্বার পার্থক্য কি থাকল?
 
জীবসত্ত্বার অবশ্যই স্বাধীনতা থাকবে, যদিও তা অত্যন্ত ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র। শ্রীকৃষ্ণ তাতে হস্তক্ষেপ করেন না। কখনই না। আপনাকে রাজী হতে হবে, "হ্যাঁ কৃষ্ণ, আমি তোমার কাছে শরণাগত হব। হ্যাঁ, সেটি আমারই মঙ্গলের জন্য।" সেটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত। আপনাকে অবশ্যই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাজি হতে হবে, গতানুগতিকভাবে নয়, কৃত্রিমভাবে নয়। "পারমার্থিক গুরুদেব কোনও কিছুকে সঠিক বললেন। ঠিক আছে, আমি এটি করব।" না। আপনাকে ভালো করে তা বুঝতে হবে।
 
তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাম্ প্রীতিপূর্বকম্। ([[Vanisource:BG 10.10 (1972)|গীতা ১০.১০]])। প্রীতি, ভালোবাসার সাথে। যখন তোমরা শ্রীকৃষ্ণ-এর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসা আর উৎসাহ নিয়ে কাজ করবে, সেটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনাময় জীবন। যদি আপনি ভাবেন, "এটি একটি গৎবাধা কিছু, সমস্যাপূর্ণ, কিন্তু আমি কি করতে পারব? এই লোকগুলি আমাদের এসব করতে বলেছে, তাই আমাকে করতে হচ্ছে।" না, কৃষ্ণভাবনামৃত এমন নয়। আপনাকে এটি স্বেচ্ছায় এবং অতি আনন্দের সঙ্গে করতে হবে। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন। উৎসাহান্ নিশ্চয়াদ্ ধৈর্যাৎ তৎ তৎ কর্ম প্রবর্তণাৎ, সতোবৃত্তে সাধুসঙ্গে ষড়ভিঃ ভক্তি প্রসিধ্যতি।


এটি আপনারা উপদেশামৃতে (শ্লোক ৩) পাবেন। আপনাকে সর্বদাই উৎসাহী থাকতে হবে। উৎসাহাৎ। ধৈর্যাৎ, অত্যন্ত সহিষ্ণুভাবে। তৎ তৎ কর্মপ্রবর্তনাৎ। নিশ্চয়াৎ। নিশ্চয়াৎ কথাটির অর্থ হচ্ছে দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে। "যখন আমি শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত, কৃষ্ণকর্ম করছি, শ্রীকৃষ্ণ নিশ্চই আমাকে তাঁর ধামে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন... নিশ্চয়াৎ... এবং শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ([[Vanisource:BG 18.65 (1972)|গীতা ১৮.৬৫]]) "আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব" এটি উল্লেখ করা রয়েছে। শ্রীকৃষ্ণ মিথ্যাবাদী নন তাই আমাদেরকে উৎসাহের সঙ্গে করে যেতে হবে। 'বিপরীতানি' মনোভাবে নয়।
সুতরাং মায়াবাদীরা বুঝতে পারে না যে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা শুধুই সুখ আর আনন্দময়। তারা সেটি বুঝতে পারে না। তাই তারা মায়াবাদীতে পরিণত হয়, তারা ভাবে "না, পরম সত্য একজন ব্যক্তি হতে পারেন না।" এটি বৌদ্ধ দর্শনের আরেকটি দিক। নির্বিশেষ মানে শুন্য। বৌদ্ধ মতবাদটিও শুন্য। সুতরাং বৌদ্ধ মতবাদে তাদের চরম লক্ষ্য শুন্য এবং এই মায়াবাদীদেরও পরম লক্ষ্য শুন্য। ন তে বিদুঃ স্বার্থগতিং হি বিষ্ণুং ([[Vanisource:SB 7.5.31|ভাগবত ৭.৫.৩১]])। তারা বুঝতে পারে না যে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার মধ্য দিয়ে এক অপূর্ব আনন্দময় জীবন রয়েছে। অতএব এখানে অর্জুন একজন মানুষের মতো আচরণ করছেন, তিনি শ্রীকৃষ্ণকে বলছেন, "তুমি আমাকে সুখী হবার জন্য, রাজ্য পাবার জন্য যুদ্ধ  করতে বলছ, কিন্তু আমারই আত্মীয়দের হত্যা করে?" ওহ্, নিমিত্তানি বিপরীতানি। তুমি আমাকে বিপথে চালিত করছ। নিমিত্তানি চ পশ্যামি বিপরীতানি। "আমি আমার আত্মীয়দের হত্যা করে সুখী হব না।  তা সম্ভব নয়। তুমি কিভাবে আমাকে এমন কাজে প্ররোচিত করতে পারো?" তাই তিনি বললেন, নিমিত্তানি চ পশ্যামি বিপরীতানি। "না, না"। ন চ শক্নোমি অবস্থাতুম্ঃ আমি এখানে আর দাঁড়াতে পারছি না। আমি ফিরে যাব। আমার রথ ঘুরিয়ে নাও। আমি এখানে থাকব না। ন চ শক্নোমি অবস্থাতুম্ ভ্রমতীবা চ মে মনঃ। ([[Vanisource:BG 1.30 (1972)|গীতা .৩০]])"আমি হতবুদ্ধি, আমি এখন সংশয়গ্রস্ত।"  


সেটি অর্জুন সবশেষে মেনে নেবেন। শ্রীকৃষ্ণ তাকে বললেন, "হে প্রিয় অর্জুন, তোমার কি সিদ্ধান্ত?" অর্জুন বলবেন, হ্যাঁ, তৎ প্রসাদাৎ কেশব নষ্ট-মোহঃ "আমার সব সন্দেহ দূর হয়েছে"। ব্যাস্।
সুতরাং এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। এই জড় জগতে আমরা সকলেই সবসময়ই সমস্যাগ্রস্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়। আর যখনই জড়বাদী লোকেদের কাছে উন্নত কিছুর প্রস্তাব করা হয় যে, "আপনি এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত গ্রহণ করুন, আপনি সুখী হবেন।" তিনি তখন তার উল্টোটা দেখেন, নিমিত্তানি বিপরীতানি। এই কৃষ্ণভাবনামৃত দিয়ে আমি কিই বা আর সুখী হতে পারব? আমার পরিবার সমস্যায় রয়েছে অথবা আমি কত কত ঝামেলায় রয়েছি। এই কৃষ্ণভাবনামৃত দিয়ে আর কি সাহায্য হবে?" নিমিত্তানি চ বিপরীতানি।  এই হচ্ছে জড় জাগতিক অবস্থা। সুতরাং সময়ের প্রয়োজন, এটি বুঝতে একটু সময় লাগবে। তা হচ্ছে ভগবদ্গীতা। সেই একই অর্জুন। তিনি এখন দেখছেন, নিমিত্তানি চ বিপরীতানি। যখন তিনি ভগবদ্গীতা বুঝবেন, তখন তিনিই বলবেন, "হ্যাঁ, কৃষ্ণ, তুমি যা বলছ তাই-ই ঠিক, সেটিই ঠিক।" কারণ অর্জুনকে উপদেশ দেয়ার পর শ্রীকৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করবেন, "এখন তুমি  কি করতে চাও?" যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ জোর করেন না, তাই শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "আমার শরণাগত হও।" তিনি বলছেন না, "তোমাকে আমার শরণাগত হতেই হবে। আমি ভগবান, তুমি আমার নিত্য অবিচ্ছেদ্য অংশ।" না, তিনি কখনই তা বলবেন না। কারণ তিনি আপনাকে ক্ষুদ্র স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাতে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না। তা না হলে একটি পাথর আর জীবসত্ত্বার পার্থক্য কি থাকল? জীবসত্ত্বার অবশ্যই স্বাধীনতা থাকবে, যদিও তা অত্যন্ত ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র। শ্রীকৃষ্ণ তাতে হস্তক্ষেপ করেন না। কখনই না। আপনাকে রাজী হতে হবে, "হ্যাঁ কৃষ্ণ, আমি তোমার কাছে শরণাগত হব। হ্যাঁ, সেটি আমারই মঙ্গলের জন্য।" সেটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত। আপনাকে অবশ্যই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাজি হতে হবে, গতানুগতিকভাবে নয়, কৃত্রিমভাবে নয়। "পারমার্থিক গুরুদেব কোনও কিছুকে সঠিক বললেন। ঠিক আছে, আমি এটি করব।" না। আপনাকে ভালো করে তা বুঝতে হবে। তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাম্ প্রীতিপূর্বকম্। ([[Vanisource:BG 10.10 (1972)|গীতা ১০.১০]])। প্রীতি, ভালোবাসার সাথে। যখন তোমরা শ্রীকৃষ্ণ-এর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসা আর উৎসাহ নিয়ে কাজ করবে, সেটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনাময় জীবন। যদি আপনি ভাবেন, "এটি একটি গৎবাধা কিছু, সমস্যাপূর্ণ, কিন্তু আমি কি করতে পারব? এই লোকগুলি আমাদের এসব করতে বলেছে, তাই আমাকে করতে হচ্ছে।" না, কৃষ্ণভাবনামৃত এমন নয়। আপনাকে এটি স্বেচ্ছায় এবং অতি আনন্দের সঙ্গে করতে হবে। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন। উৎসাহান্ নিশ্চয়াদ্ ধৈর্যাৎ তৎ তৎ কর্ম প্রবর্তণাৎ, সতোবৃত্তে সাধুসঙ্গে ষড়ভিঃ ভক্তি প্রসিধ্যতি। এটি আপনারা উপদেশামৃতে ([[Vanisource:NOI 3|শ্লোক ৩]]) পাবেন। আপনাকে সর্বদাই উৎসাহী থাকতে হবে। উৎসাহাৎ। ধৈর্যাৎ, অত্যন্ত সহিষ্ণুভাবে। তৎ তৎ কর্মপ্রবর্তনাৎ। নিশ্চয়াৎ। নিশ্চয়াৎ কথাটির অর্থ হচ্ছে দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে। "যখন আমি শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত, কৃষ্ণকর্ম করছি, শ্রীকৃষ্ণ নিশ্চই আমাকে তাঁর ধামে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন... নিশ্চয়াৎ... এবং শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ([[Vanisource:BG 18.65 (1972)|গীতা ১৮.৬৫]]) "আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব" এটি উল্লেখ করা রয়েছে। শ্রীকৃষ্ণ মিথ্যাবাদী নন তাই আমাদেরকে উৎসাহের সঙ্গে করে যেতে হবে। 'বিপরীতানি' মনোভাবে নয়। সেটি অর্জুন সবশেষে মেনে নেবেন। শ্রীকৃষ্ণ তাকে বললেন, "হে প্রিয় অর্জুন, তোমার কি সিদ্ধান্ত?" অর্জুন বলবেন, হ্যাঁ, তৎ প্রসাদাৎ কেশব নষ্ট-মোহঃ "আমার সব সন্দেহ দূর হয়েছে"।  


সবাইকে ধন্যবাদ। হরে কৃষ্ণ।  
ব্যাস্। সবাইকে ধন্যবাদ। হরে কৃষ্ণ।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:09, 29 June 2021



Lecture on BG 1.30 -- London, July 23, 1973

মায়াবাদীরা, দুধরণের মায়াবাদী রয়েছেঃ নির্বিশেষবাদী এবং শূন্যবাদী। তারা সকলেই মায়াবাদী। তাদের দর্শন একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত ভালোই, কেন না মূর্খ লোকেরা এর চেয়ে বেশি বুঝতেই পারে না। একটি মূর্খ লোককে যদি জানানো হয় যে চিন্ময় জগতে এই জগতের চেয়েও উন্নত জীবন রয়েছে, সেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবক হয়ে থাকতে হয়, তাহলে তারা ভাবে, "আমি এই জগতের সেবক হয়েই ছিলাম, অনেক দুঃখভোগ করেছি। আবার শ্রীকৃষ্ণের সেবক হওয়া?" "ওহ্..." তাদের কাঁপুনি উঠে যায়। "ওহ্, না, না। এসব ভাল নয়। এটি ভাল নয়।" যেই না তারা সেবার কথা শোনে, তারা এই জগতের আজেবাজে সব সেবার কথা মনে করে। তারা এটি ভাবতেই পারে না যে চিন্ময় জগতেও সেবা রয়েছে, কিন্তু সেই সেবায় শুধুই আনন্দ। সেখানে সকলেই আরও বেশি বেশি করে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করতে চান। সেটিই হচ্ছে চিন্ময় জগত। তারা তা বুঝতে পারে না। সুতরাং এইসব নির্বিশেষবাদীরা একে এইভাবে ভেবে নেয়। ঠিক যেমন একজন শয্যাশায়ী রোগগ্রস্ত ব্যক্তি, তাকে যদি জানানো হয় যে, "যখন আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, তখন আপনি ভালোভাবে খেতে পারবেন, আপনি হাঁটতে পারবেন," সে ভাবে "আবারও হাঁটা? আবারও খাওয়া?" কেন না সেই ব্যক্তি শুধু তেতো ঔষধ আর সাগুদানা খেতেই অভ্যস্ত। এসব খুব একটা স্বাদের নয়। এছাড়া আরও কত কি... বিছানাতেই মল-মূত্র ত্যাগ করা। তাই যখনি তাকে জানানো হয় যে, সুস্থ হয়ে গেলে তাকে আবার মল-মূত্র ত্যাগ করতে হবে, খাওয়া-দাওয়া করতে হবে, কিন্তু সেসময় খাওয়া-দাওয়া খুব উপাদেয় হবে," সেই রোগী এসব বুঝতে পারে না। সে বলে, "ওইসব খাওয়া-দাওয়া এরকমই কিছু হবে।"

সুতরাং মায়াবাদীরা বুঝতে পারে না যে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা শুধুই সুখ আর আনন্দময়। তারা সেটি বুঝতে পারে না। তাই তারা মায়াবাদীতে পরিণত হয়, তারা ভাবে "না, পরম সত্য একজন ব্যক্তি হতে পারেন না।" এটি বৌদ্ধ দর্শনের আরেকটি দিক। নির্বিশেষ মানে শুন্য। বৌদ্ধ মতবাদটিও শুন্য। সুতরাং বৌদ্ধ মতবাদে তাদের চরম লক্ষ্য শুন্য এবং এই মায়াবাদীদেরও পরম লক্ষ্য শুন্য। ন তে বিদুঃ স্বার্থগতিং হি বিষ্ণুং (ভাগবত ৭.৫.৩১)। তারা বুঝতে পারে না যে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার মধ্য দিয়ে এক অপূর্ব আনন্দময় জীবন রয়েছে। অতএব এখানে অর্জুন একজন মানুষের মতো আচরণ করছেন, তিনি শ্রীকৃষ্ণকে বলছেন, "তুমি আমাকে সুখী হবার জন্য, রাজ্য পাবার জন্য যুদ্ধ করতে বলছ, কিন্তু আমারই আত্মীয়দের হত্যা করে?" ওহ্, নিমিত্তানি বিপরীতানি। তুমি আমাকে বিপথে চালিত করছ। নিমিত্তানি চ পশ্যামি বিপরীতানি। "আমি আমার আত্মীয়দের হত্যা করে সুখী হব না। তা সম্ভব নয়। তুমি কিভাবে আমাকে এমন কাজে প্ররোচিত করতে পারো?" তাই তিনি বললেন, নিমিত্তানি চ পশ্যামি বিপরীতানি। "না, না"। ন চ শক্নোমি অবস্থাতুম্ঃ আমি এখানে আর দাঁড়াতে পারছি না। আমি ফিরে যাব। আমার রথ ঘুরিয়ে নাও। আমি এখানে থাকব না। ন চ শক্নোমি অবস্থাতুম্ ভ্রমতীবা চ মে মনঃ। (গীতা ১.৩০)। "আমি হতবুদ্ধি, আমি এখন সংশয়গ্রস্ত।"

সুতরাং এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। এই জড় জগতে আমরা সকলেই সবসময়ই সমস্যাগ্রস্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়। আর যখনই জড়বাদী লোকেদের কাছে উন্নত কিছুর প্রস্তাব করা হয় যে, "আপনি এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত গ্রহণ করুন, আপনি সুখী হবেন।" তিনি তখন তার উল্টোটা দেখেন, নিমিত্তানি বিপরীতানি। এই কৃষ্ণভাবনামৃত দিয়ে আমি কিই বা আর সুখী হতে পারব? আমার পরিবার সমস্যায় রয়েছে অথবা আমি কত কত ঝামেলায় রয়েছি। এই কৃষ্ণভাবনামৃত দিয়ে আর কি সাহায্য হবে?" নিমিত্তানি চ বিপরীতানি। এই হচ্ছে জড় জাগতিক অবস্থা। সুতরাং সময়ের প্রয়োজন, এটি বুঝতে একটু সময় লাগবে। তা হচ্ছে ভগবদ্গীতা। সেই একই অর্জুন। তিনি এখন দেখছেন, নিমিত্তানি চ বিপরীতানি। যখন তিনি ভগবদ্গীতা বুঝবেন, তখন তিনিই বলবেন, "হ্যাঁ, কৃষ্ণ, তুমি যা বলছ তাই-ই ঠিক, সেটিই ঠিক।" কারণ অর্জুনকে উপদেশ দেয়ার পর শ্রীকৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করবেন, "এখন তুমি কি করতে চাও?" যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ জোর করেন না, তাই শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "আমার শরণাগত হও।" তিনি বলছেন না, "তোমাকে আমার শরণাগত হতেই হবে। আমি ভগবান, তুমি আমার নিত্য অবিচ্ছেদ্য অংশ।" না, তিনি কখনই তা বলবেন না। কারণ তিনি আপনাকে ক্ষুদ্র স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাতে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না। তা না হলে একটি পাথর আর জীবসত্ত্বার পার্থক্য কি থাকল? জীবসত্ত্বার অবশ্যই স্বাধীনতা থাকবে, যদিও তা অত্যন্ত ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র। শ্রীকৃষ্ণ তাতে হস্তক্ষেপ করেন না। কখনই না। আপনাকে রাজী হতে হবে, "হ্যাঁ কৃষ্ণ, আমি তোমার কাছে শরণাগত হব। হ্যাঁ, সেটি আমারই মঙ্গলের জন্য।" সেটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত। আপনাকে অবশ্যই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাজি হতে হবে, গতানুগতিকভাবে নয়, কৃত্রিমভাবে নয়। "পারমার্থিক গুরুদেব কোনও কিছুকে সঠিক বললেন। ঠিক আছে, আমি এটি করব।" না। আপনাকে ভালো করে তা বুঝতে হবে। তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাম্ প্রীতিপূর্বকম্। (গীতা ১০.১০)। প্রীতি, ভালোবাসার সাথে। যখন তোমরা শ্রীকৃষ্ণ-এর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসা আর উৎসাহ নিয়ে কাজ করবে, সেটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনাময় জীবন। যদি আপনি ভাবেন, "এটি একটি গৎবাধা কিছু, সমস্যাপূর্ণ, কিন্তু আমি কি করতে পারব? এই লোকগুলি আমাদের এসব করতে বলেছে, তাই আমাকে করতে হচ্ছে।" না, কৃষ্ণভাবনামৃত এমন নয়। আপনাকে এটি স্বেচ্ছায় এবং অতি আনন্দের সঙ্গে করতে হবে। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন। উৎসাহান্ নিশ্চয়াদ্ ধৈর্যাৎ তৎ তৎ কর্ম প্রবর্তণাৎ, সতোবৃত্তে সাধুসঙ্গে ষড়ভিঃ ভক্তি প্রসিধ্যতি। এটি আপনারা উপদেশামৃতে (শ্লোক ৩) পাবেন। আপনাকে সর্বদাই উৎসাহী থাকতে হবে। উৎসাহাৎ। ধৈর্যাৎ, অত্যন্ত সহিষ্ণুভাবে। তৎ তৎ কর্মপ্রবর্তনাৎ। নিশ্চয়াৎ। নিশ্চয়াৎ কথাটির অর্থ হচ্ছে দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে। "যখন আমি শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত, কৃষ্ণকর্ম করছি, শ্রীকৃষ্ণ নিশ্চই আমাকে তাঁর ধামে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন... নিশ্চয়াৎ... এবং শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু (গীতা ১৮.৬৫) "আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাব" এটি উল্লেখ করা রয়েছে। শ্রীকৃষ্ণ মিথ্যাবাদী নন তাই আমাদেরকে উৎসাহের সঙ্গে করে যেতে হবে। 'বিপরীতানি' মনোভাবে নয়। সেটি অর্জুন সবশেষে মেনে নেবেন। শ্রীকৃষ্ণ তাকে বললেন, "হে প্রিয় অর্জুন, তোমার কি সিদ্ধান্ত?" অর্জুন বলবেন, হ্যাঁ, তৎ প্রসাদাৎ কেশব নষ্ট-মোহঃ "আমার সব সন্দেহ দূর হয়েছে"।

ব্যাস্। সবাইকে ধন্যবাদ। হরে কৃষ্ণ।