BN/Prabhupada 0650 - কৃষ্ণভাবনামৃতের প্রকৃত যোগ অনুশীলনের দ্বারা এই বদ্ধদশা থেকে বেরিয়ে যাও: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0650 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1969 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 6: Line 6:
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
[[Category:BN-Quotes - in USA, Los Angeles]]
[[Category:BN-Quotes - in USA, Los Angeles]]
[[Category:Hindi Pages - Yoga System]]
[[Category:Bengali Pages - Yoga System]]
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0649 - মন হচ্ছে চালক আর এই দেহটি হচ্ছে রথ বা গাড়ি|0649|BN/Prabhupada 0651 - সম্পূর্ণ যোগপদ্ধতির উদ্দেশ্যই হচ্ছে মনকে আমাদের বন্ধু বানানো|0651}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0649 -मन चालक है । शरीर रथ या गाडी है|0649|HI/Prabhupada 0651 - पूरी योग प्रणाली का मतलब है मन को हमारा दोस्त बनाना|0651}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 21: Line 19:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|db6VfraNA_Y|কৃষ্ণভাবনামৃতের প্রকৃত যোগ অনুশীলনের দ্বারা এই বদ্ধদশা থেকে বেরিয়ে যাও। <br />- Prabhupāda 0650}}
{{youtube_right|aSt0dMwtF-8|কৃষ্ণভাবনামৃতের প্রকৃত যোগ অনুশীলনের দ্বারা এই বদ্ধদশা থেকে বেরিয়ে যাও<br />- Prabhupāda 0650}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 35: Line 33:
ভক্তঃ "জড়া প্রকৃতিতে প্রত্যেকেই তার মন এবং ইন্দ্রিয়ের প্রভাবের অধীন। বাস্তবিকপক্ষে, শুদ্ধ আত্মা এই জড় জগতে আবদ্ধ হয়ে থাকার কারণ হচ্ছে এই জড়া প্রকৃতির ওপর মনের আধিপত্য করার মিথ্যা অহঙ্কার। সেই জন্য মন যাতে জড়া প্রকৃতির চাকচিক্যের দ্বারা আকৃষ্ট না হয় সে ব্যাপারে মনকে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। আর এভাবেই বদ্ধ জীব উদ্ধার পেতে পারে। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে কারো নিজেকে অধঃপতিত করা উচিৎ নয়। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের দ্বারা যতই কেউ আকৃষ্ট হবে, ততই সে এই জড়া প্রকৃতির দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়বে। তাই এই আবদ্ধ হওয়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার সবচাইতে শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে সর্বদা মনকে শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত রাখা। এই বিষয়টির ওপর জোর দেয়ার জন্য এই শ্লোকে সংস্কৃত 'হি' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ এটি অবশ্যই করা উচিৎ। আরও বলা হয়েছে যে, "মনই মানুষের বন্ধনের কারণ আর মনই মানুষের মুক্তির কারণ। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের ওপর নিবদ্ধ মন বন্ধনের কারণ আর ইন্দ্রিয় বিষয়ের থেকে অনাসক্ত মন হচ্ছে মুক্তির কারণ।" অতএব মন যখন সর্বদা কৃষ্ণভাবনামৃতে যুক্ত থাকে তখন তা পরম মুক্তির কারণ হয়।  
ভক্তঃ "জড়া প্রকৃতিতে প্রত্যেকেই তার মন এবং ইন্দ্রিয়ের প্রভাবের অধীন। বাস্তবিকপক্ষে, শুদ্ধ আত্মা এই জড় জগতে আবদ্ধ হয়ে থাকার কারণ হচ্ছে এই জড়া প্রকৃতির ওপর মনের আধিপত্য করার মিথ্যা অহঙ্কার। সেই জন্য মন যাতে জড়া প্রকৃতির চাকচিক্যের দ্বারা আকৃষ্ট না হয় সে ব্যাপারে মনকে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। আর এভাবেই বদ্ধ জীব উদ্ধার পেতে পারে। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে কারো নিজেকে অধঃপতিত করা উচিৎ নয়। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের দ্বারা যতই কেউ আকৃষ্ট হবে, ততই সে এই জড়া প্রকৃতির দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়বে। তাই এই আবদ্ধ হওয়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার সবচাইতে শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে সর্বদা মনকে শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত রাখা। এই বিষয়টির ওপর জোর দেয়ার জন্য এই শ্লোকে সংস্কৃত 'হি' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ এটি অবশ্যই করা উচিৎ। আরও বলা হয়েছে যে, "মনই মানুষের বন্ধনের কারণ আর মনই মানুষের মুক্তির কারণ। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের ওপর নিবদ্ধ মন বন্ধনের কারণ আর ইন্দ্রিয় বিষয়ের থেকে অনাসক্ত মন হচ্ছে মুক্তির কারণ।" অতএব মন যখন সর্বদা কৃষ্ণভাবনামৃতে যুক্ত থাকে তখন তা পরম মুক্তির কারণ হয়।  


শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। কোনই সম্ভাবনা নেই। মন যখন সর্বদা কৃষ্ণভাবনামৃতে নিযুক্ত থাকে তখন আর তার মায়া ভাবনায় যুক্ত হওয়ার কোন সুযোগই থাকে না। আমরা যতই আমাদের মনকে কৃষ্ণভাবনামৃতে যুক্ত রাখবো, আমরা ততই আমাদের সূর্যালোকের মধ্যে রাখবো, অন্ধকারের কোন সম্ভাবনাই আর নেই। সেটিই হচ্ছে পন্থা। এটি তুমি গ্রহণ করবে কি না, সেটি তোমার পছন্দ। তুমি তোমাকে অন্ধকার ঘরেই রাখতে পার অথবা উদ্ভাসিত সূর্যালোকেও নিয়ে আসতে পারো। সেটি তোমার পছন্দের ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু যখন তুমি বিশাল সূর্যালোকে আসবে তখন আর অন্ধকারেরDকৃষ্ণ হলেন ঠিক সূর্যের মতো। আর মায়া ঠিক অন্ধকারের মতো। তাই সূর্যালোকের মধ্যে অন্ধকার কি করতে পারবে? তুমি তোমাকে সূর্যালোকে রাখ। অন্ধকার তোমার ওপর কোন ক্রিয়া করতে ব্যর্থ হবে। এটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃতের পূর্ণ দর্শন। সর্বদা কৃষ্ণভাবনাময় কর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখো। মায়া তোমাকে স্পর্শও করতে পারবে না। কারণ আলোর মধ্যে অন্ধকারের প্রভাব বিস্তার করার কোনই সম্ভাবনা নেই।  
শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। কোনই সম্ভাবনা নেই। মন যখন সর্বদা কৃষ্ণভাবনামৃতে নিযুক্ত থাকে তখন আর তার মায়া ভাবনায় যুক্ত হওয়ার কোন সুযোগই থাকে না। আমরা যতই আমাদের মনকে কৃষ্ণভাবনামৃতে যুক্ত রাখবো, আমরা ততই আমাদের সূর্যালোকের মধ্যে রাখবো, অন্ধকারের কোন সম্ভাবনাই আর নেই। সেটিই হচ্ছে পন্থা। এটি তুমি গ্রহণ করবে কি না, সেটি তোমার পছন্দ। তুমি তোমাকে অন্ধকার ঘরেই রাখতে পার অথবা উদ্ভাসিত সূর্যালোকেও নিয়ে আসতে পারো। সেটি তোমার পছন্দের ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু যখন তুমি বিশাল সূর্যালোকে আসবে তখন আর অন্ধকারের কোনই সম্ভাবনা নেই। আলোর দ্বারা অন্ধকারকে অপসারিত করা যায়, কিন্তু অন্ধকার দিয়ে আলোকে ঢেকে দেয়া যায় না। ধর তুমি কোন অন্ধকার কক্ষে রয়েছ। তুমি একটি প্রদীপ নিয়ে এসো। অন্ধকার চলে যাবে। কিন্তু তুমি অন্ধকার কিছু নিয়ে সূর্যালোকে যাও, সেই জিনিসটিই ম্লান হয়ে যাবে। সুতরাং কৃষ্ণ সূর্যসম মায়া অন্ধকার। শ্রীকৃষ্ণ হলেন ঠিক সূর্যের মতো। আর মায়া ঠিক অন্ধকারের মতো। তাই সূর্যালোকের মধ্যে অন্ধকার কি করতে পারবে? তুমি তোমাকে সূর্যালোকে রাখ। অন্ধকার তোমার ওপর কোন ক্রিয়া করতে ব্যর্থ হবে। এটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃতের পূর্ণ দর্শন। সর্বদা কৃষ্ণভাবনাময় কর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখো। মায়া তোমাকে স্পর্শও করতে পারবে না। কারণ আলোর মধ্যে অন্ধকারের প্রভাব বিস্তার করার কোনই সম্ভাবনা নেই। সে কথা শ্রীমদ্ভাগবতে প্রতিপন্ন করা হয়েছে। ব্যাসদেব তাঁর গুরুদেব নারদ মুনির অধীনে, ভক্তিযোগের দ্বারা... "ভক্তিযোগেন প্রণিহিতে সম্যক্, প্রণিহিতে'মালে। ভক্তিযোগেন মনসি। ([[Vanisource:SB 1.7.4|ভাগবত ১.৭.৪]]) সেই একই মন, মনসি মানে মন। যখন ভক্তিযোগের আলোর দ্বারা উদ্ভাসিত হয়েছে, ভক্তিযোগেন মনসি সম্যক্ প্রণিহিতে অমলে... মন যখন সব ধরণের কলুষতা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়। সেটি কেবল ভক্তিযোগের দ্বারাই সম্ভব। ভক্তিযোগেন মনসি সম্যক্ প্রণিহিতে অমলে অপশ্যৎ পুরুষং পূর্ণং... তিনি পরমেশ্বর ভগবানকে দর্শন করেছিলেন। মায়াং চ তদ্ অপাশ্রয়াং। এবং তিনি তখন মায়াকে পেছনে দেখলেন। অপাশ্রয়াং। আলো এবং অন্ধকার, একই সঙ্গে ঠিক যেমন এখানে আলো রয়েছে, অন্ধকারও আছে। অল্প অন্ধকারও আছে। সুতরাং আলোর আশ্রয়েই অন্ধকার থাকে। কিন্তু আলো কখনও অন্ধকারের আশ্রয়ে থাকে না। তাই ব্যাসদেব পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দেখেছিলেন, এবং মায়াকে, অন্ধকারকে, অপাশ্রয়াং, ঠিক তাঁর আশ্রয়েই দেখেছিলেন।
 
সে কথা শ্রীমদ্ভাগবতে প্রতিপন্ন করা হয়েছে। ব্যাসদেব তাঁর গুরুদেব নারদ মুনির অধীনে, ভক্তিযোগের দ্বারা... "ভক্তিযোগেন প্রণিহিতে সম্যক্, প্রণিহিতে'মালে। ভক্তিযোগেন মনসি। ([[Vanisource:SB 1.7.4|ভাগবত ১.৭.৪]]) সেই একই মন, মনসি মানে মন। যখন ভক্তিযোগের আলোর দ্বারা উদ্ভাসিত হয়েছে, ভক্তিযোগেন মনসি সম্যক্ প্রণিহিতে অমলে... মন যখন সব ধরণের কলুষতা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়। সেটি কেবল ভক্তিযোগের দ্বারাই সম্ভব। ভক্তিযোগেন মনসি সম্যক্ প্রণিহিতে অমলে অপশ্যৎ পুরুষং পূর্ণং... তিনি পরমেশ্বর ভগবানকে দর্শন করেছিলেন। মায়াং চ তদ্ অপাশ্রয়াং। এবং তিনি তখন মায়াকে পেছনে দেখলেন। অপাশ্রয়াং। আলো এবং অন্ধকার, একই সঙ্গে ঠিক যেমন এখানে আলো রয়েছে, অন্ধকারও আছে। অল্প অন্ধকারও আছে। সুতরাং আলোর আশ্রয়েই অন্ধকার থাকে। কিন্তু আলো কখনও অন্ধকারের আশ্রয়ে থাকে না।  


তাই ব্যাসদেব পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দেখেছিলেন, এবং মায়াকে, অন্ধকারকে, অপাশ্রয়াং, ঠিক তাঁর আশ্রয়েই দেখেছিলেন। আর এই মায়া কে? সেটি ব্যখ্যা করা হয়েছে... যয়া সম্মোহিতা জীবা। সেই একই মায়াশক্তি যা বদ্ধ জীবদের আবৃত করে রেখেছে। আর সেই বদ্ধজীবেরা কারা?  
আর এই মায়া কে? সেটি ব্যখ্যা করা হয়েছে... যয়া সম্মোহিতা জীবা। সেই একই মায়াশক্তি যা বদ্ধ জীবদের আবৃত করে রেখেছে। আর সেই বদ্ধজীবেরা কারা? যয়া সম্মোহিতা জীবা আত্মানাং ত্রিগুণাত্মকং ([[Vanisource:SB 1.7.5|ভাগবত ১.৭.৫]]) যদিও ক্ষুদ্র জীবাত্মা শ্রীকৃষ্ণের ন্যায়ই উজ্জ্বল, কিন্তু সে নিজেকে এই জড় জগতের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে পরিচয় দিচ্ছে। যয়া সম্মোহিতাঃ। যখন আমরা আমাদের জড় বস্তু বলে মনে করি তখন তার নাম মায়া। যয়া সম্মোহিতাঃ জীবা আত্মানাং ত্রিগুণাত্মকং, পরোহপি মনুতেহনর্থং যদিও আত্মা চিন্ময় কিন্তু সে নিম্নস্তরের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে, পরোহপি মনুতে অনর্থং তৎ কৃতং চাভিপদ্যতে এবং সে মায়ার দ্বারা নির্দেশিত হয়ে কর্ম করে। এই বিষয়টি শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধে সপ্তম অধ্যায়ে অত্যন্ত সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।


যয়া সম্মোহিতা জীবা আত্মানাং ত্রিগুণাত্মকং ([[Vanisource:SB 1.7.5|ভাগবত ১.৭.৫]]) যদিও ক্ষুদ্র জীবাত্মা শ্রীকৃষ্ণের ন্যায়ই উজ্জ্বল, কিন্তু সে নিজেকে এই জড় জগতের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে পরিচয় দিচ্ছে। যয়া সম্মোহিতাঃ। যখন আমরা আমাদের জড় বস্তু বলে মনে করি তখন তার নাম মায়া। যয়া সম্মোহিতাঃ জীবা আত্মানাং ত্রিগুণাত্মকং, পরোহপি মনুতেহনর্থং যদিও আত্মা চিন্ময় কিন্তু সে নিম্নস্তরের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে, পরোহপি মনুতে অনর্থং তৎ কৃতং চাভিপদ্যতে এবং সে মায়ার দ্বারা নির্দেশিত হয়ে কর্ম করে। এই বিষয়টি শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধে সপ্তম অধ্যায়ে অত্যন্ত সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এটি হচ্ছে আমাদের স্থিতি। আমরা চিন্ময় কণ, উজ্জ্বল স্ফুলিঙ্গ। কিন্তু এখন আমরা এই মায়াশক্তির দ্বারা আবৃত হয়ে আছি এবং মায়ার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আমরা বিভিন্ন কার্যকলাপে যুক্ত হচ্ছি এবং আরও বেশি করে এই জড়া প্রকৃতিতে জড়িয়ে পড়ছি। এই জাল থেকে তোমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এই কৃষ্ণভাবনামৃতের সর্বোৎকৃষ্ট যোগপন্থার মাধ্যমে। সেটি হচ্ছে যোগপদ্ধতি।  
এটি হচ্ছে আমাদের স্থিতি। আমরা চিন্ময় কণ, উজ্জ্বল স্ফুলিঙ্গ। কিন্তু এখন আমরা এই মায়াশক্তির দ্বারা আবৃত হয়ে আছি এবং মায়ার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আমরা বিভিন্ন কার্যকলাপে যুক্ত হচ্ছি এবং আরও বেশি করে এই জড়া প্রকৃতিতে জড়িয়ে পড়ছি। এই জাল থেকে তোমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এই কৃষ্ণভাবনামৃতের সর্বোৎকৃষ্ট যোগপন্থার মাধ্যমে। সেটি হচ্ছে যোগপদ্ধতি।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:19, 29 June 2021



Lecture on BG 6.2-5 -- Los Angeles, February 14, 1969

ভক্তঃ "জড়া প্রকৃতিতে প্রত্যেকেই তার মন এবং ইন্দ্রিয়ের প্রভাবের অধীন। বাস্তবিকপক্ষে, শুদ্ধ আত্মা এই জড় জগতে আবদ্ধ হয়ে থাকার কারণ হচ্ছে এই জড়া প্রকৃতির ওপর মনের আধিপত্য করার মিথ্যা অহঙ্কার। সেই জন্য মন যাতে জড়া প্রকৃতির চাকচিক্যের দ্বারা আকৃষ্ট না হয় সে ব্যাপারে মনকে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। আর এভাবেই বদ্ধ জীব উদ্ধার পেতে পারে। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে কারো নিজেকে অধঃপতিত করা উচিৎ নয়। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের দ্বারা যতই কেউ আকৃষ্ট হবে, ততই সে এই জড়া প্রকৃতির দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়বে। তাই এই আবদ্ধ হওয়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার সবচাইতে শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে সর্বদা মনকে শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত রাখা। এই বিষয়টির ওপর জোর দেয়ার জন্য এই শ্লোকে সংস্কৃত 'হি' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ এটি অবশ্যই করা উচিৎ। আরও বলা হয়েছে যে, "মনই মানুষের বন্ধনের কারণ আর মনই মানুষের মুক্তির কারণ। ইন্দ্রিয়ের বিষয়ের ওপর নিবদ্ধ মন বন্ধনের কারণ আর ইন্দ্রিয় বিষয়ের থেকে অনাসক্ত মন হচ্ছে মুক্তির কারণ।" অতএব মন যখন সর্বদা কৃষ্ণভাবনামৃতে যুক্ত থাকে তখন তা পরম মুক্তির কারণ হয়।

শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। কোনই সম্ভাবনা নেই। মন যখন সর্বদা কৃষ্ণভাবনামৃতে নিযুক্ত থাকে তখন আর তার মায়া ভাবনায় যুক্ত হওয়ার কোন সুযোগই থাকে না। আমরা যতই আমাদের মনকে কৃষ্ণভাবনামৃতে যুক্ত রাখবো, আমরা ততই আমাদের সূর্যালোকের মধ্যে রাখবো, অন্ধকারের কোন সম্ভাবনাই আর নেই। সেটিই হচ্ছে পন্থা। এটি তুমি গ্রহণ করবে কি না, সেটি তোমার পছন্দ। তুমি তোমাকে অন্ধকার ঘরেই রাখতে পার অথবা উদ্ভাসিত সূর্যালোকেও নিয়ে আসতে পারো। সেটি তোমার পছন্দের ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু যখন তুমি বিশাল সূর্যালোকে আসবে তখন আর অন্ধকারের কোনই সম্ভাবনা নেই। আলোর দ্বারা অন্ধকারকে অপসারিত করা যায়, কিন্তু অন্ধকার দিয়ে আলোকে ঢেকে দেয়া যায় না। ধর তুমি কোন অন্ধকার কক্ষে রয়েছ। তুমি একটি প্রদীপ নিয়ে এসো। অন্ধকার চলে যাবে। কিন্তু তুমি অন্ধকার কিছু নিয়ে সূর্যালোকে যাও, সেই জিনিসটিই ম্লান হয়ে যাবে। সুতরাং কৃষ্ণ সূর্যসম মায়া অন্ধকার। শ্রীকৃষ্ণ হলেন ঠিক সূর্যের মতো। আর মায়া ঠিক অন্ধকারের মতো। তাই সূর্যালোকের মধ্যে অন্ধকার কি করতে পারবে? তুমি তোমাকে সূর্যালোকে রাখ। অন্ধকার তোমার ওপর কোন ক্রিয়া করতে ব্যর্থ হবে। এটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃতের পূর্ণ দর্শন। সর্বদা কৃষ্ণভাবনাময় কর্মে নিজেকে নিয়োজিত রাখো। মায়া তোমাকে স্পর্শও করতে পারবে না। কারণ আলোর মধ্যে অন্ধকারের প্রভাব বিস্তার করার কোনই সম্ভাবনা নেই। সে কথা শ্রীমদ্ভাগবতে প্রতিপন্ন করা হয়েছে। ব্যাসদেব তাঁর গুরুদেব নারদ মুনির অধীনে, ভক্তিযোগের দ্বারা... "ভক্তিযোগেন প্রণিহিতে সম্যক্, প্রণিহিতে'মালে। ভক্তিযোগেন মনসি। (ভাগবত ১.৭.৪) সেই একই মন, মনসি মানে মন। যখন ভক্তিযোগের আলোর দ্বারা উদ্ভাসিত হয়েছে, ভক্তিযোগেন মনসি সম্যক্ প্রণিহিতে অমলে... মন যখন সব ধরণের কলুষতা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়। সেটি কেবল ভক্তিযোগের দ্বারাই সম্ভব। ভক্তিযোগেন মনসি সম্যক্ প্রণিহিতে অমলে অপশ্যৎ পুরুষং পূর্ণং... তিনি পরমেশ্বর ভগবানকে দর্শন করেছিলেন। মায়াং চ তদ্ অপাশ্রয়াং। এবং তিনি তখন মায়াকে পেছনে দেখলেন। অপাশ্রয়াং। আলো এবং অন্ধকার, একই সঙ্গে ঠিক যেমন এখানে আলো রয়েছে, অন্ধকারও আছে। অল্প অন্ধকারও আছে। সুতরাং আলোর আশ্রয়েই অন্ধকার থাকে। কিন্তু আলো কখনও অন্ধকারের আশ্রয়ে থাকে না। তাই ব্যাসদেব পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দেখেছিলেন, এবং মায়াকে, অন্ধকারকে, অপাশ্রয়াং, ঠিক তাঁর আশ্রয়েই দেখেছিলেন।

আর এই মায়া কে? সেটি ব্যখ্যা করা হয়েছে... যয়া সম্মোহিতা জীবা। সেই একই মায়াশক্তি যা বদ্ধ জীবদের আবৃত করে রেখেছে। আর সেই বদ্ধজীবেরা কারা? যয়া সম্মোহিতা জীবা আত্মানাং ত্রিগুণাত্মকং (ভাগবত ১.৭.৫) যদিও ক্ষুদ্র জীবাত্মা শ্রীকৃষ্ণের ন্যায়ই উজ্জ্বল, কিন্তু সে নিজেকে এই জড় জগতের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে পরিচয় দিচ্ছে। যয়া সম্মোহিতাঃ। যখন আমরা আমাদের জড় বস্তু বলে মনে করি তখন তার নাম মায়া। যয়া সম্মোহিতাঃ জীবা আত্মানাং ত্রিগুণাত্মকং, পরোহপি মনুতেহনর্থং যদিও আত্মা চিন্ময় কিন্তু সে নিম্নস্তরের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে, পরোহপি মনুতে অনর্থং তৎ কৃতং চাভিপদ্যতে এবং সে মায়ার দ্বারা নির্দেশিত হয়ে কর্ম করে। এই বিষয়টি শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধে সপ্তম অধ্যায়ে অত্যন্ত সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এটি হচ্ছে আমাদের স্থিতি। আমরা চিন্ময় কণ, উজ্জ্বল স্ফুলিঙ্গ। কিন্তু এখন আমরা এই মায়াশক্তির দ্বারা আবৃত হয়ে আছি এবং মায়ার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আমরা বিভিন্ন কার্যকলাপে যুক্ত হচ্ছি এবং আরও বেশি করে এই জড়া প্রকৃতিতে জড়িয়ে পড়ছি। এই জাল থেকে তোমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এই কৃষ্ণভাবনামৃতের সর্বোৎকৃষ্ট যোগপন্থার মাধ্যমে। সেটি হচ্ছে যোগপদ্ধতি।