BN/Prabhupada 0653 - ভগবান যদি কোন ব্যক্তি না হবেন তাহলে তাঁর সন্তানেরা কিভাবে ব্যক্তি হল: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0653 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1969 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 6: Line 6:
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
[[Category:BN-Quotes - in USA, Los Angeles]]
[[Category:BN-Quotes - in USA, Los Angeles]]
[[Category:Hindi Pages - Yoga System]]
[[Category:Bengali Pages - Yoga System]]
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0652 - পদ্মপুরাণ হচ্ছে সাত্ত্বিক গুণসম্পন্ন মানুষদের জন্য|0652|BN/Prabhupada 0654 - নষ্ট ইন্দ্রিয়ের কারণে তোমাদের চেষ্টার দ্বারা তোমরা ভগবানকে দর্শন করতে পারবে না|0654}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0652 - यह पद्म पुराण सत्व गुण में रहने वाले व्यक्तियों के लिए है|0652|HI/Prabhupada 0654 - तुम अपने प्रयास से भगवान को नहीं देख सकते हो क्योंकि तुम्हारी इन्द्रियॉ अपूर्ण हैं|0654}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 21: Line 19:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|I9vj6baJB6w|ভগবান যদি কোন ব্যক্তি না হবেন তাহলে তাঁর সন্তানেরা কিভাবে ব্যক্তি হল - Prabhupāda 0653}}
{{youtube_right|zvG6mCvn-xc|ভগবান যদি কোন ব্যক্তি না হবেন তাহলে তাঁর সন্তানেরা কিভাবে ব্যক্তি হল<br/> - Prabhupāda 0653}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 35: Line 33:
ভক্তঃ পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে, জড় কলুষিত ইন্দ্রিয়ের দ্বারা কেউ ভগবানের নাম, রূপ, গুণ ও লীলার দিব্য প্রকৃতি উপলব্ধি করতে পারে না। ভগবানের সেবা করার মাধ্যমে যখন দিব্য চেতনার উন্মেষ হয়, তখন ভগবানের নাম, রূপ ও লীলার চিন্ময় স্বরূপ তাঁর কাছে অনুভূত হয়।"  
ভক্তঃ পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে, জড় কলুষিত ইন্দ্রিয়ের দ্বারা কেউ ভগবানের নাম, রূপ, গুণ ও লীলার দিব্য প্রকৃতি উপলব্ধি করতে পারে না। ভগবানের সেবা করার মাধ্যমে যখন দিব্য চেতনার উন্মেষ হয়, তখন ভগবানের নাম, রূপ ও লীলার চিন্ময় স্বরূপ তাঁর কাছে অনুভূত হয়।"  


শ্রীল প্রভুপাদঃ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলে গ্রহণ করে নিয়েছি। আমরা কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে ভগবান বলে গ্রহণ করেছি? কারণ বৈদিক শাস্ত্রে সে কথা প্রতিপন্ন করা হয়েছে, ঠিক যেমন ব্রহ্মসংহিতায় বলা হচ্ছে ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.১) কল্পনা... যারা রজো ও তমোগুণে আচ্ছন্ন তারা ভগবানের রূপ কল্পনা করে। আর যখন তারা বিভ্রান্ত হয়, তখন বলে, "ওহ, ভগবান কোন ব্যক্তি নন। তিনি নির্বিশেষ বা শুন্য।" সেটি হচ্ছে হতাশা। কিন্তু আসলে ভগবানের রূপ আছে। কেন থাকবে না?  
শ্রীল প্রভুপাদঃ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলে গ্রহণ করে নিয়েছি। আমরা কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে ভগবান বলে গ্রহণ করেছি? কারণ বৈদিক শাস্ত্রে সে কথা প্রতিপন্ন করা হয়েছে, ঠিক যেমন ব্রহ্মসংহিতায় বলা হচ্ছে ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.১) কল্পনা... যারা রজো ও তমোগুণে আচ্ছন্ন তারা ভগবানের রূপ কল্পনা করে। আর যখন তারা বিভ্রান্ত হয়, তখন বলে, "ওহ, ভগবান কোন ব্যক্তি নন। তিনি নির্বিশেষ বা শুন্য।" সেটি হচ্ছে হতাশা। কিন্তু আসলে ভগবানের রূপ আছে। কেন থাকবে না? বেদান্ত বলছেন, "জন্মাদস্য যতঃ ([[Vanisource:SB 1.1.1|শ্রীমদ্ভাগবত ১.১.১]]) পরম সত্য হচ্ছেন সেই ব্যক্তি বা বস্তু যার থেকে সবকিছুই প্রকাশিত হয়েছে। আমাদে রূপ আছে। আমাদের অবশ্যই... শুধু আমরাই নই, বিভিন্ন ধরণের জীব দেহ রয়েছে। তারা সব কোথা থেকে এসেছে? কোথা থেকে এই সমস্ত রূপগুলো সৃষ্টি হল? এটি খুবই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন। যদি ভগবান কোন ব্যক্তিই না হবেন তাহলে তাঁর সন্তানেরা কিভাবে ব্যক্তিত্ব পেল? যদি তোমার পিতা একজন ব্যক্তি না হন, তাহলে তুমি কিভাবে একজন ব্যক্তি হলে? খুবই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন। যদি আমার পিতার এই ধরণের রূপ না ছিল, তাহলে আমি কিভাবে এই রূপ বা শরীরটি পেলাম। কিন্তু লোকেরা কল্পনা করছে। কারণ তারা যখন হতাশ হয়ে যায়... যখন তারা দেখে যে এই দেহ বা রূপটি কষ্টদায়ক, তখন ওরা সিদ্ধান্ত করে তাহলে ভগবান নিশ্চয়ই নিরাকার হবেন। সেটি হচ্ছে এই বর্তমান রূপের বিরোধী একটি মতবাদ। কিন্তু ব্রহ্মসংহিতায় বলা হচ্ছে, না। ভগবানের রূপ আছে। কিন্তু তিনি সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ। ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.১) সৎ, চিৎ, আনন্দ। সৎ মানে নিত্য। সৎ মানে নিত্য। চিৎ মানে জ্ঞান, এবং আনন্দ মানে আনন্দ। তাই ভগবানের রূপ রয়েছে। কিন্তু তাঁর রূপটি হচ্ছে আনন্দময়, জ্ঞানময় এবং নিত্য। এখন তোমার শরীরটি তুলনা কর। তোমার শরীরটি না নিত্য, না আনন্দপূর্ণ আর না সেটি পূর্ণ জ্ঞানময়। তাই ভগবানের রূপ রয়েছে। কিন্তু তাঁর রূপটি ভিন্ন ধরণের। কিন্তু আমরা যখনই রূপ বা আকারের কথা বলি, তখনই আমরা ভাবি সেটি নিশ্চয়ই এই রূপের মতোই। অতএব উল্টোটা। কোন রূপ নেই। কিন্তু সেটি জ্ঞানের কথা হল না। অতএব পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে, এই জড় ইন্দ্রিয় দিয়ে ভগবানের নাম, রূপ, গুণ, লীলা তুমি বুঝতে পারবে না। অতঃ শ্রীকৃষ্ণ নামাদি ন ভবেদ্ গ্রাহ্যম্ ইন্দ্রিয়ৈঃ ([[Vanisource:CC Madhya 17.136|CC Madhya 17.136]]) তোমার ইন্দ্রিয়জাত কল্পনার দ্বারা... যেহেতু তোমার ইন্দ্রিয়গুলো অপূর্ণ তাই তুমি কিভাবে পরম পূর্ণকে বুঝতে পারবে? সেটি সম্ভব নয়। তাহলে তা কিভাবে সম্ভব? সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ। যদি তুমি তোমার ইন্দ্রিয়গুলোকে প্রশিক্ষিত কর। যদি তুমি ইন্দ্রিয়গুলোকে পরিশুদ্ধ কর সেই শুদ্ধ ইন্দ্রিয়গুলোই তোমাকে ভগবানকে দেখতে সাহায্য করবে।  
 
বেদান্ত বলছেন, "জন্মাদস্য যতঃ ([[Vanisource:SB 1.1.1|শ্রীমদ্ভাগবত ১.১.১]]) পরম সত্য হচ্ছেন সেই ব্যক্তি বা বস্তু যার থেকে সবকিছুই প্রকাশিত হয়েছে। আমাদে রূপ আছে। আমাদের অবশ্যই... শুধু আমরাই নই, বিভিন্ন ধরণের জীব দেহ রয়েছে। তারা সব কোথা থেকে এসেছে? কোথা থেকে এই সমস্ত রূপগুলো সৃষ্টি হল? এটি খুবই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন। যদি ভগবান কোন ব্যক্তিই না হবেন তাহলে তাঁর সন্তানেরা কিভাবে ব্যক্তিত্ব পেল?  
 
যদি তোমার পিতা একজন ব্যক্তি না হন, তাহলে তুমি কিভাবে একজন ব্যক্তি হলে? খুবই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন। যদি আমার পিতার এই ধরণের রূপ না ছিল, তাহলে আমি কিভাবে এই রূপ বা শরীরটি পেলাম। কিন্তু লোকেরা কল্পনা করছে। কারণ তারা যখন হতাশ হয়ে যায়... যখন তারা দেখে যে এই দেহ বা রূপটি কষ্টদায়ক, তখন ওরা সিদ্ধান্ত করে তাহলে ভগবান নিশ্চয়ই নিরাকার হবেন। সেটি হচ্ছে এই বর্তমান রূপের বিরোধী একটি মতবাদ। কিন্তু ব্রহ্মসংহিতায় বলা হচ্ছে, না। ভগবানের রূপ আছে। কিন্তু তিনি সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ।  
 
ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.১)  
 
সৎ, চিৎ, আনন্দ। সৎ মানে নিত্য। সৎ মানে নিত্য। চিৎ মানে জ্ঞান, এবং আনন্দ মানে আনন্দ। তাই ভগবানের রূপ রয়েছে। কিন্তু তাঁর রূপটি হচ্ছে আনন্দময়, জ্ঞানময় এবং নিত্য। এখন তোমার শরীরটি তুলনা কর। তোমার শরীরটি না নিত্য, না আনন্দপূর্ণ আর না সেটি পূর্ণ জ্ঞানময়। তাই ভগবানের রূপ রয়েছে। কিন্তু তাঁর রূপটি ভিন্ন ধরণের। কিন্তু আমরা যখনই রূপ বা আকারের কথা বলি, তখনই আমরা ভাবি সেটি নিশ্চয়ই এই রূপের মতোই। অতএব উল্টোটা। কোন রূপ নেই। কিন্তু সেটি জ্ঞানের কথা হল না। অতএব পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে, এই জড় ইন্দ্রিয় দিয়ে ভগবানের নাম, রূপ, গুণ, লীলা তুমি বুঝতে পারবে না।  
 
অতঃ শ্রীকৃষ্ণ নামাদি ন ভবেদ্ গ্রাহ্যম্ ইন্দ্রিয়ৈঃ  
 
তোমার ইন্দ্রিয়জাত কল্পনার দ্বারা... যেহেতু তোমার ইন্দ্রিয়গুলো অপূর্ণ তাই তুমি কিভাবে পরম পূর্ণকে বুঝতে পারবে? সেটি সম্ভব নয়। তাহলে তা কিভাবে সম্ভব? সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ। যদি তুমি তোমার ইন্দ্রিয়গুলোকে প্রশিক্ষিত কর। যদি তুমি ইন্দ্রিয়গুলোকে পরিশুদ্ধ কর সেই শুদ্ধ ইন্দ্রিয়গুলোই তোমাকে ভগবানকে দেখতে সাহায্য করবে।  
 
ঠিক যেমন তোমার যদি চক্ষুরোগ হয়, যদি ছানি পড়ে, তার মানে এই নয় যে তুমি দেখতে পারবে না। যেহেতু তোমার চোখে ছানি পড়েছে, তাই তুমি দেখতে পারছো না। তার মানে এই নয় যে দেখার কিছুই নেই। তুমি দেখতে পারবে না। তাই ভগবানের রূপ সম্বন্ধে এখন তুমি কোন কল্পনা করতে পার না। কিন্তু যদি তোমার ছানি কেটে ফেলা হয়, তাহলে তুমি দেখতে পারবে। সেটিই দরকার।
 
প্রেমাঞ্জনচ্ছুরিত ভক্তিবিলোচনেন সন্তঃ সদৈব হৃদয়েষু বিলোকয়ন্তি (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৮)
 
ব্রহ্মসংহিতায় বলা হয়েছে, যে সমস্ত ভক্তদের চোখ ভগবৎপ্রেমের অঞ্জন বা কাজল পড়েছে, সেই ধরণের ব্যক্তিরা শ্রীকৃষ্ণকে তাঁদের হৃদয় অভ্যন্তরে সর্বদা, ২৪ ঘণ্টাই দেখতে পারেন। তাই তোমার ইন্দ্রিয়গুলোকে পবিত্র করতে হবে। তখনই তুমি ভগবানের রূপ কেমন তা বুঝতে পারবে, ভগবানের নাম কি রকম, তাঁর গুণ কি রকম, তাঁর লীলা, পরিকর কি রকম তা বুঝতে পারবে। ভগবানের সবই আছে। এই বিষয়গুলো বৈদিক শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়েছে। ঠিক যেমন অপাণি-পাদ-জবনোগ্রহীতা। বলা হয়েছে যে ভগবানের কোনও হাত পা নেই। কিন্তু তুমি যাই তাকে অর্পণ কর না কেন, তিনি তা গ্রহণ করতে পারেন।


ভগবানের কোনও চোখ বা কান নেই। কিন্তু তিনি সবকিছুই দেখতে পারেন , শুনতে পারেন। সুতরাং এগুলো হচ্ছে আপাতবিরোধী। অর্থাৎ যখনই আমরা দেখার বিষয় নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা ভাবি নিশ্চয়ই সেই ব্যক্তিটির আমার মতোই চোখ আছে। সেটি আমাদের জড় ধারণা। ভগবানের চোখ আছে। তিনি এমন কি অন্ধকারেও দেখতে পারেন। তুমি অন্ধকারে দেখতে পারবে না। তাই তাঁর চোখগুলো ভিন্ন ধরণের। ভগবান শুনতে পারেন। যদি তুমি...
ঠিক যেমন তোমার যদি চক্ষুরোগ হয়, যদি ছানি পড়ে, তার মানে এই নয় যে তুমি দেখতে পারবে না। যেহেতু তোমার চোখে ছানি পড়েছে, তাই তুমি দেখতে পারছো না। তার মানে এই নয় যে দেখার কিছুই নেই। তুমি দেখতে পারবে না। তাই ভগবানের রূপ সম্বন্ধে এখন তুমি কোন কল্পনা করতে পার না। কিন্তু যদি তোমার ছানি কেটে ফেলা হয়, তাহলে তুমি দেখতে পারবে। সেটিই দরকার। প্রেমাঞ্জনচ্ছুরিত ভক্তিবিলোচনেন সন্তঃ সদৈব হৃদয়েষু বিলোকয়ন্তি (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৮) ব্রহ্মসংহিতায় বলা হয়েছে, যে সমস্ত ভক্তদের চোখ ভগবৎপ্রেমের অঞ্জন বা কাজল পড়েছে, সেই ধরণের ব্যক্তিরা শ্রীকৃষ্ণকে তাঁদের হৃদয় অভ্যন্তরে সর্বদা, ২৪ ঘণ্টাই দেখতে পারেন। তাই তোমার ইন্দ্রিয়গুলোকে পবিত্র করতে হবে। তখনই তুমি ভগবানের রূপ কেমন তা বুঝতে পারবে, ভগবানের নাম কি রকম, তাঁর গুণ কি রকম, তাঁর লীলা, পরিকর কি রকম তা বুঝতে পারবে। ভগবানের সবই আছে। এই বিষয়গুলো বৈদিক শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়েছে।


ভগবান তাঁর ধামে থাকেন যেটি এখান থেকে কোটি কোটি মাইল দূরে অবস্থিত কিন্তু যদি তুমি এখান থেকে কিছু বলছো, ফিসফিস করছো কিংবা ষড়যন্ত্র করছ, তিনি তা শুনতে পারছেন। কারণ তিনি তোমার ভেতরেই বসে আছেন। তুমি কখনই ভগবানের দর্শন, শোনা কিংবা তাঁর স্পর্শ থেকে নিজেকে এড়িয়ে রাখতে পারবে না।  
ঠিক যেমন অপাণি-পাদ-জবনোগ্রহীতা। বলা হয়েছে যে ভগবানের কোনও হাত পা নেই। কিন্তু তুমি যাই তাকে অর্পণ কর না কেন, তিনি তা গ্রহণ করতে পারেন। ভগবানের কোনও চোখ বা কান নেই। কিন্তু তিনি সবকিছুই দেখতে পারেন , শুনতে পারেন। সুতরাং এগুলো হচ্ছে আপাতবিরোধী। অর্থাৎ যখনই আমরা দেখার বিষয় নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা ভাবি নিশ্চয়ই সেই ব্যক্তিটির আমার মতোই চোখ আছে। সেটি আমাদের জড় ধারণা। ভগবানের চোখ আছে। তিনি এমন কি অন্ধকারেও দেখতে পারেন। তুমি অন্ধকারে দেখতে পারবে না। তাই তাঁর চোখগুলো ভিন্ন ধরণের। ভগবান শুনতে পারেন। যদি তুমি... ভগবান তাঁর ধামে থাকেন যেটি এখান থেকে কোটি কোটি মাইল দূরে অবস্থিত কিন্তু যদি তুমি এখান থেকে কিছু বলছো, ফিসফিস করছো কিংবা ষড়যন্ত্র করছ, তিনি তা শুনতে পারছেন। কারণ তিনি তোমার ভেতরেই বসে আছেন। তুমি কখনই ভগবানের দর্শন, শোনা কিংবা তাঁর স্পর্শ থেকে নিজেকে এড়িয়ে রাখতে পারবে না।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:20, 29 June 2021



Lecture on BG 6.6-12 -- Los Angeles, February 15, 1969

ভক্তঃ পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে, জড় কলুষিত ইন্দ্রিয়ের দ্বারা কেউ ভগবানের নাম, রূপ, গুণ ও লীলার দিব্য প্রকৃতি উপলব্ধি করতে পারে না। ভগবানের সেবা করার মাধ্যমে যখন দিব্য চেতনার উন্মেষ হয়, তখন ভগবানের নাম, রূপ ও লীলার চিন্ময় স্বরূপ তাঁর কাছে অনুভূত হয়।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলে গ্রহণ করে নিয়েছি। আমরা কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে ভগবান বলে গ্রহণ করেছি? কারণ বৈদিক শাস্ত্রে সে কথা প্রতিপন্ন করা হয়েছে, ঠিক যেমন ব্রহ্মসংহিতায় বলা হচ্ছে ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.১) কল্পনা... যারা রজো ও তমোগুণে আচ্ছন্ন তারা ভগবানের রূপ কল্পনা করে। আর যখন তারা বিভ্রান্ত হয়, তখন বলে, "ওহ, ভগবান কোন ব্যক্তি নন। তিনি নির্বিশেষ বা শুন্য।" সেটি হচ্ছে হতাশা। কিন্তু আসলে ভগবানের রূপ আছে। কেন থাকবে না? বেদান্ত বলছেন, "জন্মাদস্য যতঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১.১.১) পরম সত্য হচ্ছেন সেই ব্যক্তি বা বস্তু যার থেকে সবকিছুই প্রকাশিত হয়েছে। আমাদে রূপ আছে। আমাদের অবশ্যই... শুধু আমরাই নই, বিভিন্ন ধরণের জীব দেহ রয়েছে। তারা সব কোথা থেকে এসেছে? কোথা থেকে এই সমস্ত রূপগুলো সৃষ্টি হল? এটি খুবই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন। যদি ভগবান কোন ব্যক্তিই না হবেন তাহলে তাঁর সন্তানেরা কিভাবে ব্যক্তিত্ব পেল? যদি তোমার পিতা একজন ব্যক্তি না হন, তাহলে তুমি কিভাবে একজন ব্যক্তি হলে? খুবই সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন। যদি আমার পিতার এই ধরণের রূপ না ছিল, তাহলে আমি কিভাবে এই রূপ বা শরীরটি পেলাম। কিন্তু লোকেরা কল্পনা করছে। কারণ তারা যখন হতাশ হয়ে যায়... যখন তারা দেখে যে এই দেহ বা রূপটি কষ্টদায়ক, তখন ওরা সিদ্ধান্ত করে তাহলে ভগবান নিশ্চয়ই নিরাকার হবেন। সেটি হচ্ছে এই বর্তমান রূপের বিরোধী একটি মতবাদ। কিন্তু ব্রহ্মসংহিতায় বলা হচ্ছে, না। ভগবানের রূপ আছে। কিন্তু তিনি সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ। ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫.১) সৎ, চিৎ, আনন্দ। সৎ মানে নিত্য। সৎ মানে নিত্য। চিৎ মানে জ্ঞান, এবং আনন্দ মানে আনন্দ। তাই ভগবানের রূপ রয়েছে। কিন্তু তাঁর রূপটি হচ্ছে আনন্দময়, জ্ঞানময় এবং নিত্য। এখন তোমার শরীরটি তুলনা কর। তোমার শরীরটি না নিত্য, না আনন্দপূর্ণ আর না সেটি পূর্ণ জ্ঞানময়। তাই ভগবানের রূপ রয়েছে। কিন্তু তাঁর রূপটি ভিন্ন ধরণের। কিন্তু আমরা যখনই রূপ বা আকারের কথা বলি, তখনই আমরা ভাবি সেটি নিশ্চয়ই এই রূপের মতোই। অতএব উল্টোটা। কোন রূপ নেই। কিন্তু সেটি জ্ঞানের কথা হল না। অতএব পদ্মপুরাণে বলা হয়েছে, এই জড় ইন্দ্রিয় দিয়ে ভগবানের নাম, রূপ, গুণ, লীলা তুমি বুঝতে পারবে না। অতঃ শ্রীকৃষ্ণ নামাদি ন ভবেদ্ গ্রাহ্যম্ ইন্দ্রিয়ৈঃ (CC Madhya 17.136) তোমার ইন্দ্রিয়জাত কল্পনার দ্বারা... যেহেতু তোমার ইন্দ্রিয়গুলো অপূর্ণ তাই তুমি কিভাবে পরম পূর্ণকে বুঝতে পারবে? সেটি সম্ভব নয়। তাহলে তা কিভাবে সম্ভব? সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ। যদি তুমি তোমার ইন্দ্রিয়গুলোকে প্রশিক্ষিত কর। যদি তুমি ইন্দ্রিয়গুলোকে পরিশুদ্ধ কর সেই শুদ্ধ ইন্দ্রিয়গুলোই তোমাকে ভগবানকে দেখতে সাহায্য করবে।

ঠিক যেমন তোমার যদি চক্ষুরোগ হয়, যদি ছানি পড়ে, তার মানে এই নয় যে তুমি দেখতে পারবে না। যেহেতু তোমার চোখে ছানি পড়েছে, তাই তুমি দেখতে পারছো না। তার মানে এই নয় যে দেখার কিছুই নেই। তুমি দেখতে পারবে না। তাই ভগবানের রূপ সম্বন্ধে এখন তুমি কোন কল্পনা করতে পার না। কিন্তু যদি তোমার ছানি কেটে ফেলা হয়, তাহলে তুমি দেখতে পারবে। সেটিই দরকার। প্রেমাঞ্জনচ্ছুরিত ভক্তিবিলোচনেন সন্তঃ সদৈব হৃদয়েষু বিলোকয়ন্তি (ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৮) ব্রহ্মসংহিতায় বলা হয়েছে, যে সমস্ত ভক্তদের চোখ ভগবৎপ্রেমের অঞ্জন বা কাজল পড়েছে, সেই ধরণের ব্যক্তিরা শ্রীকৃষ্ণকে তাঁদের হৃদয় অভ্যন্তরে সর্বদা, ২৪ ঘণ্টাই দেখতে পারেন। তাই তোমার ইন্দ্রিয়গুলোকে পবিত্র করতে হবে। তখনই তুমি ভগবানের রূপ কেমন তা বুঝতে পারবে, ভগবানের নাম কি রকম, তাঁর গুণ কি রকম, তাঁর লীলা, পরিকর কি রকম তা বুঝতে পারবে। ভগবানের সবই আছে। এই বিষয়গুলো বৈদিক শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়েছে।

ঠিক যেমন অপাণি-পাদ-জবনোগ্রহীতা। বলা হয়েছে যে ভগবানের কোনও হাত পা নেই। কিন্তু তুমি যাই তাকে অর্পণ কর না কেন, তিনি তা গ্রহণ করতে পারেন। ভগবানের কোনও চোখ বা কান নেই। কিন্তু তিনি সবকিছুই দেখতে পারেন , শুনতে পারেন। সুতরাং এগুলো হচ্ছে আপাতবিরোধী। অর্থাৎ যখনই আমরা দেখার বিষয় নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা ভাবি নিশ্চয়ই সেই ব্যক্তিটির আমার মতোই চোখ আছে। সেটি আমাদের জড় ধারণা। ভগবানের চোখ আছে। তিনি এমন কি অন্ধকারেও দেখতে পারেন। তুমি অন্ধকারে দেখতে পারবে না। তাই তাঁর চোখগুলো ভিন্ন ধরণের। ভগবান শুনতে পারেন। যদি তুমি... ভগবান তাঁর ধামে থাকেন যেটি এখান থেকে কোটি কোটি মাইল দূরে অবস্থিত কিন্তু যদি তুমি এখান থেকে কিছু বলছো, ফিসফিস করছো কিংবা ষড়যন্ত্র করছ, তিনি তা শুনতে পারছেন। কারণ তিনি তোমার ভেতরেই বসে আছেন। তুমি কখনই ভগবানের দর্শন, শোনা কিংবা তাঁর স্পর্শ থেকে নিজেকে এড়িয়ে রাখতে পারবে না।