BN/Prabhupada 0737 - প্রথম আধ্যাত্মিক জ্ঞান হচ্ছে - "আমি এই দেহ নই"

Revision as of 17:48, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 4.1 -- Bombay, March 21, 1974

প্রভুপাদঃ জড় দেহ ভিন্ন ভিন্নভাবে তৈরি হয়েছে, কিন্তু চিন্ময় আত্মা একই। তোমার চিন্ময় আত্মা , আমার চিন্ময় আত্মা একই। কিন্তু তোমার দেহকে বলা হয় আমেরিকান দেহ আর আমার দেহকে বলা হয় ভারতীয় দেহ। এটিই পার্থক্য। ঠিক যেমন তুমি একটি ভিন্ন পোশাক পরেছ। আমি একটি ভিন্ন পোশাক পরেছি। বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায়...... দেহটি হচ্ছে ঠিক পোশাকের মতো।

তাই প্রথম পারমার্থিক জ্ঞান হচ্ছে এটি, যে "আমি এই দেহ নই।" এরপর আধ্যাত্মিক জ্ঞানের শুরু হবে। অন্যথায় আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কোনই সম্ভাবনা নেই। যস্যাত্মবুদ্ধিঃ কুণপে ত্রিধাতুকে স্বধীঃ কলত্রাদিষু ভৌম ইজ্যধীঃ।। (শ্রীমদ্ভাগবত ১০.৮৪.১৩)। যে মনে করে, "এই দেহই আমি , আমি নিজেই, স্বয়ং আমি," সে একটা বদমাশ, পশু। এই যা। এই পাশবিক বদমাশিই সারা পৃথিবী জুড়ে চলছে। "আমি আমেরিকান," "আমি ভারতীয়," "আমি ব্রাহ্মণ," "আমি ক্ষত্রিয়।" এই হচ্ছে বদমাশি। তোমাকে এর ঊর্ধ্বে যেতে হবে। তখন সেখানে আধ্যাত্মিক জ্ঞান থাকে। এটি হচ্ছে ভক্তি যোগ।

মাং চ যোহব্যভিচারেণ
ভক্তিযোগেন সেবতে
স গুণান্‌ সমতীতৈত্যান্‌
ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে।।
(শ্রীমদ্ভগবতগীতা ১৪.২৬)

অহম্‌ ব্রহ্মাস্মি। এটি প্রয়োজন। তো এই যোগ প্রণালী বোঝার জন্য, ভক্তি যোগ...... কারণ একমাত্র ভক্তিযোগের দ্বারাই তুমি আধ্যাত্মিক স্তরে আসতে পারবে। অহম্‌ ব্রহ্মাস্মি। নাহং বিপ্র... যেমন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, নাহং বিপ্র ন ক্ষত্রিয়... এই শ্লোকটি কি?

ভক্তঃ কিবা বিপ্র, কিবা ন্যাসী...

প্রভুপাদঃ"আমি ব্রাহ্মণ নই, আমি ক্ষত্রিয় নই, আমি বৈশ্য নই, আমি শূদ্র নই। আমি ব্রহ্মচারী নই, আমি গৃহস্থ নই, আমি বানপ্রস্থ নই..." কারণ আমাদের বৈদিক সভ্যতা বর্ণ এবং আশ্রমের ওপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এ সব কিছুই অস্বীকার করেছেনঃ "আমি এগুলোর কোনটিই নই।" তাহলে তোমার অবস্থান কি? গোপীভর্তুঃ পদকমলয়োর্দাস-দাসানুদাসঃ। "আমি গোপীদের প্রতিপালকের নিত্য দাস।" এর মানে শ্রীকৃষ্ণ। আর তিনি প্রচার করেছেনঃ জীবের স্বরূপ হয় নিত্য কৃষ্ণদাস (চৈচ মধ্য ২০.১০৮-১০৯)। এটিই হচ্ছে আমাদের পরিচয়। আমরা শ্রীকৃষ্ণের নিত্য দাস। কাজেই যে দাস শ্রীকৃষ্ণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, তাদেরকে এই জড়-জগতে আসতে হয়। আর সেই দাসকে উদ্ধার করার জন্য শ্রীকৃষ্ণ আসেন। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

পরিত্রাণায় সাধূনাং
বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্‌
ধর্মসংস্থাপনার্থায়
সম্ভবামি যুগে যুগে
(শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৪.৮)।

শ্রীকৃষ্ণ আসেন। তিনি অত্যন্ত দয়ালু।

তাই আমদেরকে শ্রীকৃষ্ণের অবতরণের এই সুযোগ গ্রহণ করতে হবে, //// যথাযথভাবে এটিকে অধ্যয়ন কর আর জীবনকে সার্থক কর। এটি কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। এটি কোন ভূয়া আন্দোলন নয়। এটি সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক আন্দোলন। তো ভারতের বাইরে, এইসব ইউরোপিয়ান, আমেরিকান লোকেরা এর সুযোগ গ্রহণ করছে। ভারতীয় যুবকরা কেন নয়? সমস্যা কোথায়? এটি ভালো নয়। আমাদের একসাথে অংশ গ্রহণ করা উচিত, এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনকে খুব গুরুত্বের সাথে শুরু করা উচিত, আর এই দুর্দশাগ্রস্থ জীবেদের উদ্ধার করা উচিত। এটি আমাদের উদ্দেশ্য। তারা জ্ঞানের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। সব কিছুই এখানে আছে, পরিপূর্ণ। শুধুমাত্র ভুল ব্যবস্থাপনার কারণে... শুধুমাত্র... এটি এখন চোর আর ডাকাতদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। হাতে নাও। কৃষ্ণভাবনামৃতে দক্ষ হও আর পরিচালনায় অংশ নাও। আর তোমাদের জীবনকে সার্থক কর।

অসংখ্য ধন্যবাদ। হরে কৃষ্ণ।