BN/Prabhupada 0813 - প্রকৃত স্বাধীনতা হচ্ছে কিভাবে এই জড় আইনের বন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

Revision as of 07:03, 4 September 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


751011 - Lecture BG 18.45 - Durban

এটি প্রহ্লাদ মহারাজের বর্ণনা। তিনি তাঁর বিদ্যালয়ের বন্ধুদের কাছে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করতেন। কারণ তিনি এক অসুর পিতা হিরণ্যকশিপুর ঘরে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাঁকে এমন কি "কৃষ্ণ" নাম উচ্চারণ করা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। প্রাসাদের ভিতর তিনি কোন সুযোগ পেতেন না, তাই তিনি যখন বিদ্যালয়ে যেতেন, মধ্যাহ্নের বিরতির সময় তিনি তাঁর ছোট বন্ধুদের ডাকতেন, পাঁচ বছর বয়স, আর তিনি ভাগবত ধর্ম প্রচার করতেন। তাঁর বন্ধুরা বলত, "প্রিয় প্রহ্লাদ, এখন আমরা শিশু। ওহ, এই ভাগবত ধর্মের কি প্রয়োজন? এখন আমাদের খেলতে দাও।" "না," তিনি বলতেন, "না।" কৌমার আচরেৎ প্রাজ্ঞো ধর্মান্‌ ভাগবতানিহ, দুর্লভং মানুষং জন্ম (শ্রীমদ্ভাগবত ৭.৬.১)। "আমার প্রিয় বন্ধুরা, এ কথা বলো না যে, বৃদ্ধ বয়সে অনুশীলন করার জন্য কৃষ্ণভক্তিকে এখন দূরে সরিয়ে রাখবে। না, না।" দুর্লভম। "আমরা জানি না আমরা কবে মারা যাব। পরবর্তী মৃত্যুর আগেই আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃতের শিক্ষা সম্পূর্ণ করা উচিত।" এটিই হচ্ছে মনুষ্য জীবনের লক্ষ্য। অন্যথায় আমরা সুযোগটি হারাবো। প্রত্যেকেই চিরতরে বেঁচে থাকতে চায়, কিন্তু প্রকৃতি তা অনুমোদন করবে না। এটিই সত্য। আমরা খুব স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে পারি, কিন্তু আমরা স্বাধীন নই। আমরা প্রকৃতির কঠোর আইনের অধীন। একজন যুবক হিসেবে তুমি বলতে পারবে না যে "আমি বৃদ্ধ হবো না।" না। তোমাকে হতেই হবে। এটি প্রকৃতির আইন। আর তুমি বলতে পার, "আমি মরব না," না, তুমি অবশ্যই মরবে। সুতরাং এটিই হচ্ছে প্রকৃতির আইন। সেজন্য আমরা হচ্ছি মূঢ়। আমরা বাস্তব সম্মত ভাবে জানি না প্রকৃতির আইন কি।

প্রকৃতেঃ ক্রিয়মাণানি
গুণৈঃ কর্মাণি সর্বশঃ
অহংকারবিমূঢ়াত্মা
কর্তাহমিতি মন্যতে
(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৩.২৭)।

সবকিছু প্রকৃতির আইনের অধীনে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, কিন্তু তবুও, যেহেতু আমরা বোকা আর বদমাশ, তাই আমরা মনে করি "আমরা স্বাধীন।" এটিই আমাদের ভুল। এটিই আমাদের বিভ্রান্তি। আমরা জানি না জীবনের লক্ষ্য কি, কিভাবে প্রকৃতি আমাদেরকে ধারণ করছে, আমরা কিভাবে জীবনের সমস্যাগুলো থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি। আমরা জীবনের অস্থায়ী সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য ব্যস্ত, ঠিক যেমন স্বাধীন অথবা পরাধীন। এগুলো সাময়িক সমস্যা। প্রকৃতপক্ষে আমরা স্বাধীন নইঃ আমরা প্রকৃতির আইনের অধীন। এবং ধর তুমি স্বাধীন হলে, তথাকথিত স্বাধীন, কয়েক দিনের জন্য। এটি স্বাধীনতা নয়। প্রকৃত স্বাধীনতা হচ্ছে কিভাবে এই সমস্ত জড় জাগতিক আইনের কবল থেকে বের হয়ে আসা যায়।

কৃষ্ণ তোমার সামনে সমস্যা উপস্থাপন করবে... আমাদের বহুবিধ সমস্যা রয়েছে, কিন্তু এগুলো সাময়িক। প্রকৃত সমস্যা হচ্ছে, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, জন্মমৃত্যুজরাব্যাধিদুঃখদোষানুদর্শনম্‌ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৩.৯)। একজন জ্ঞানী ব্যাক্তির সর্বদাই প্রকৃত সমস্যার মোকাবিলা করা উচিত। এগুলো কি? জন্ম, মৃত্যু, জরা এবং ব্যাধি। এগুলো হচ্ছে আমাদের প্রকৃত সমস্যা। তাই মানব জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই চারটি সমস্যার সমাধান করাঃ জন্ম, মৃত্যু, জরা এবং ব্যাধি। আর এটি কৃষ্ণভাবনামৃতের মাধ্যমেই করা সম্ভব। তাই আমরা জীবনের চূড়ান্ত সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য কৃষ্ণভাবনামৃতের মাধ্যমে উদ্যোগী হচ্ছি। কাজেই আমাদের অনুরোধ হচ্ছে এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনকে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ কর, আর জীবনের চরম সমস্যা গুলোর সমাধান কর। আর জীবনের এই সমস্ত সমস্যা গুলোর সমাধান করা যায় শুধু মাত্র শ্রীকৃষ্ণকে জানার মাধ্যমে। শুধু মাত্র শ্রীকৃষ্ণকে জানার মাধ্যমেঃ

জন্ম কর্ম চ মে দিব্যং
যো জানাতি তত্ত্বতঃ
ত্যক্তা দেহং পুনর্জন্ম
নৈতি মামেতি সোহর্জুন
(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৪.৯)।