BN/Prabhupada 0901 - যদি আমি ঈর্ষাপরায়ণ না হই, তাহলে আমি চিন্ময় জগতে রয়েছি। যেকেউই তা পরীক্ষা করতে পারে

Revision as of 07:05, 10 July 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


730415 - Lecture SB 01.08.23 - Los Angeles

বর্তমানে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলি কলুষিত অবস্থায় আছে আমি ভাবছি, "আমি আমেরিকান, তাই আমার ইন্দ্রিয়গুলো আমার দেশ, আমার সমাজ, আমার জাতির সেবায় লাগানো উচিৎ নয়।" বড় বড় নেতা, বড় বড় অনেক কিছু প্রকৃত ধারণাটি হচ্ছে যে, "আমি আমেরিকান, তাই আমার ইন্দ্রিয়গুলো আমেরিকান তাই এগুলো আমেরিকার সেবায় লাগানো উচিৎ"। একইভাবে ভারতীয়রা ভাবছে, অন্যরাও ভাবছে কিন্তু তাদের কেউই জানে না যে প্রকৃত অর্থে এই ইন্দ্রিয়গুলো শ্রীকৃষ্ণের। এটি হচ্ছে অজ্ঞানতা। কোন বুদ্ধি নেই। তারা কেবল কিছু সময়ের জন্য ভাবছে যে এই ইন্দ্রিয়গুলো... উপাধি, আমেরিকান ইন্দ্রিয়, ভারতীয় ইন্দ্রিয়, আফ্রিকান ইন্দ্রিয় না। এ হচ্ছে মায়া। তা আবৃত আছে, অতএব ভক্তি মানে সর্বোপাধি বিনির্মুক্তম্‌ (চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ১৯/১৭০) যখন তোমার ইন্দ্রিয়সমূহ এই সব উপাধি থেকে মুক্ত হবে, তখন তা হবে ভক্তির সূচনা আমি যদি মনে করি, "আমি আমেরিকান, আমি কেন কৃষ্ণ ভাবনামৃত গ্রহণ করব? এটা তো হিন্দুদের ভগবান" সেটি মুর্খামি যদি আমি ভাবি "আমি মুসলমান," "আমি খ্রিষ্টান", তাহলে তুমি শেষ। কিন্তু আমি যদি ইন্দ্রিয়গুলো শুদ্ধ করতে পারি যে, "আমি চিন্ময় আত্মা। আর পরমাত্মা হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ, আমি তাঁর নিত্য অংশ। তাই আমার কর্তব্য তাঁর সেবা করা"। তাহলে তুমি তৎক্ষণাৎ মুক্ত হয়ে হবে। তৎক্ষণাৎ। তুমি আর আমেরিকান, ভারতীয় বা আফ্রিকান বা এটা ওটা নও। তুমি এখন কৃষ্ণময়। কৃষ্ণভাবনাময়। সেটাই চাই।

তাই কুন্তী দেবী বলেছেন, "হে হৃষীকেশ, প্রিয় কৃষ্ণ। তুমি ইন্দ্রিয়ের অধীশ্বর , এই ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য আমরা এই জগতে পতিত হয়েছি, বিভিন্ন ধরনের জীব প্রজাতিতে"। তাই আমরা দুঃখভোগ করছি, এমনকি শ্রীকৃষ্ণের মা হওয়ার পরও... কারণ এটাই জড় জগত, যে এখানে তাঁকেও কষ্ট পেতে হয়েছে। তাহলে অন্যদের কথা আর কি বলার? দেবকী এতোই উন্নত ছিলেন যে তিনি কৃষ্ণের মা হয়েছিলেন কিন্তু তাঁর পরেও তাঁকে দুঃখ ভোগ করতে হয়েছে আর সমস্যাগুলো কার থেকে আসছে? তাঁর ভাই, কংস থেকে। তাই এই জগতটা হচ্ছে এরকম। বোঝার চেষ্টা কর এমনকি যদি তুমি কৃষ্ণের মা-ও হয়ে যাও, এমনকি তোমার ভাই, খুব কাছের আত্মীয় তাই জগত এতোটাই ঈর্ষাপরায়ণ যে কারও নিজের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে সকলেই তোমাকে দুঃখ দিতে প্রস্তুত থাকবে। এটাই হচ্ছে এই জগত। সবাই। এমনকি সে যদি ভাইও হয়, বাবাও হয়। অন্যদের কথা আর কি বলার আছে? খলেন। মানে ঈর্ষাপরায়ণ। জড় জগত মানে ঈর্ষাপরায়ণ। আমি তোমার প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ, তুমি আমার প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ। এটাই আমাদের কাজ। এটাই আমাদের কাজ।

তাই এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে তাঁদের জন্য যারা ঈর্ষাপরায়ণ নন যিনি আর ঈর্ষাপরায়ণ নন। আদর্শ ব্যক্তি। ধর্মপ্রোজ্ঝিত কৈতবহত্র পরমো নির্মৎসরাণাম্‌ সতাম্‌ বাস্তবম্‌ বস্তুবেদ্যম্‌ অত্র (ভাগবত ১/১/২) যারা ঈর্ষাপরায়ণ, মাৎসর্যপরায়ণ, তারা এই জগতের মধ্যেই আছে। আর যারা মাৎসর্যপরায়ণ নন, তাঁরা চিন্ময় জগতে আছেন সোজা কথা। তুমি নিজেই নিজেকে পরীক্ষা কর যে, "আমি কারও প্রতি মাৎসর্যপরায়ণ কিনা, আমার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, বাকি কারোর প্রতি?" তাহলে আমি জড় জগতে আছি, আর যদি আমি ঈর্ষাপরায়ণ নই, তাহলে আমি চিন্ময় জগতে আছি। যে কেউই এটা পরীক্ষা করতে পারে। আমি পারমার্থিকভাবে উন্নত কিনা সেই প্রশ্নের কিছু আসছে না তুমি নিজেকে নিজেই পরীক্ষা করতে পার। ভক্তি পরেশানুভব বিরক্তিঃ অন্যত্রস্যাৎ (ভাগবত ১১/২/৪২) ঠিক যেমন, খাবার খেলে তুমি বুঝতে পারবে যে তুমি সন্তুষ্ট হয়েছ কিনা, তোমার ক্ষুধা মিটেছে কিনা তোমাকে এর জন্য অন্য কারও থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে না। তেমনি, তুমি যদি পরীক্ষা কর, তুমি ঈর্ষাপরায়ণ কিনা, মাৎসর্যপরায়ণ কিনা, তাহলে তুমি এই জড় জগতে আছ। আর যদি তুমি ঈর্ষাপরায়ণ না হও, মাৎসর্যপরায়ণ না হও, তাহলে তুমি চিন্ময় জগতে আছ। যদি তুমি মাৎসর্যপরায়ণ না হও, তাহলে তুমি খুব সুন্দর করে কৃষ্ণ সেবা করতে পারবে কারণ আমাদের এই ঈর্ষা শুরু হয়েছে কৃষ্ণ থেকেই যেমন মায়াবাদীরা ভাবে, "কৃষ্ণ কেন ভগবান হবে? আমি ভগবান, আমিও ভগবান, আমিও।"