BN/Prabhupada 0038 - জ্ঞান বেদ থেকে উৎপন্ন হয়
Lecture on BG 7.1 -- Hong Kong, January 25, 1975
শ্রীকৃষ্ণ রয়েছেন। আমাদের কাছে শ্রীকৃষ্ণের আলেখ্য আছে, শ্রীকৃষ্ণের ছবি আছে, শ্রীকৃষ্ণের মন্দির আছে, শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কিত এতকিছু রয়েছে। এসব কল্পনাপ্রসূত নয়, এগুলো কোন কল্পনা নয়, যেমনটা মায়াবাদী দার্শনিকেরা বোঝায়, যে "আপনি আপনার মনে মনে কল্পনা করতে পারেন।" না। ভগবানকে কল্পনা করা যায় না। সেটি আরেকটি মূর্খতা। কিভাবে আপনি ভগবানকে কল্পনা করতে পারেন? তাহলে ভগবান আপনার কল্পনার বিষয়বস্তু হয়ে যাবে। তিনি কোন জড় পদার্থ নন। তা ভগবান নয়। যা কল্পনা করা হয়, তা ভগবান নয়। ভগবান আপনার সামনেই উপস্থিত, শ্রীকৃষ্ণ। তিনি এই ধরাধামে আসেন। তদাত্মানং সৃজাম্যহম, সম্ভবামি যুগে যুগে। সুতরাং যারা ভগবানকে দেখেছেন, আপনি তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
- তদ বিদ্ধি প্রণিপাতেন
- পরিপ্রশ্নেন সেবয়া
- উপদেক্ষ্যন্তি তে জ্ঞানং
- জ্ঞানিনস্তত্ত্বদর্শিনঃ
- (ভগবদ্গীতা ৪.৩৪)
তত্ত্ব-দর্শিনঃ। যতক্ষণ আপনি না দেখেছেন, কিভাবে আপনি অন্যকে সত্যের তথ্য দিতে পারেন? তাই ভগবানকে দেখা সম্ভব, শুধুমাত্র ইতিহাসেই নয়। ইতিহাসে, যখন শ্রীকৃষ্ণ এই গ্রহে উপস্থিত ছিলেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের ইতিহাস, যেখানে এই ভগবদ্গীতা বলা হয়েছিল । এটি একটি ঐতিহাসিক তথ্য। তাই আমরা ইতিহাসের মাধ্যমে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পারি আবার শাস্ত্রের মাধ্যমেও তাঁকে দেখতে পারি। শাস্ত্রচক্ষুসা। যেমন ঠিক এই মুহূর্তে শ্রীকৃষ্ণ শারীরিকভাবে উপস্থিত নেই। কিন্তু আমরা শাস্ত্রের মাধ্যমে বুঝতে পারি শ্রীকৃষ্ণ কি ?
তাই শাস্ত্রচক্ষুসা। শাস্ত্র... হয় আপনি প্রত্যক্ষ অনুভূতি নিন অথবা শাস্ত্রের মাধ্যমেই নিন। শাস্ত্রের মাধ্যমে গ্রহণ করা অনুভূতি, প্রত্যক্ষ অনুভূতির চেয়ে ভাল। অতএব আমাদের জ্ঞান, যা বৈদিক নীতিসমূহ অনুসরণ করছে, তাদের জ্ঞান বেদ থেকে নেওয়া হয়েছে। তারা কোন মনগড়া জ্ঞান বানায় করে না। যদি একটি বিষয় বেদের প্রমাণ দ্বারা বোঝা যায়, তবে সেটি একটি বাস্তব সত্য। তাই শ্রীকৃষ্ণকে বেদের মাধ্যমে বুঝতে হয়। বেদৈশ্চ সর্বৈরহমেব বেদ্য (ভগবদ্গীতা ১৫.১৫)। ভগবদ্গীতাতে সে কথাই বর্ণিত হয়েছে। আপনি শ্রীকৃষ্ণকে কল্পনা করতে পারেন না। যদি কোন বদমাশ বলে যে, "আমি কল্পনা করছি" সেটি তার মূর্খামি। আপনাকে বেদের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে হবে। বেদৈশ্চ সর্বৈরহমেব বেদ্য (ভগবদ্গীতা ১৫.১৫)। এই হচ্ছে বেদ অধ্যয়ন করার উদ্দেশ্য। অতএব একে বেদান্ত বলা হয়। শ্রীকৃষ্ণের সন্মন্ধে জ্ঞানই হল বেদান্ত।