BN/Prabhupada 0060 - জড় বস্তু থেকে জীবন আসতে পারে না
Room Conversation with Svarupa Damodara -- February 28, 1975, Atlanta
শ্রীল প্রভুপাদঃ আমরা বলি যে, জীবন অর্থাৎ জীবসত্তা বীর্যে থাকে এবং তা যখন স্ত্রীলোকের গর্ভে প্রবেশ করে, তখন দেহ বিকাশ হতে থাকে। শুরুটা হয় জীবনের মাধ্যমে। সেটিই বাস্তব। আর এই জীবসত্তাটি পরম সত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। অতএব সূচনাটি হচ্ছেন ভগবান। জন্মাদ্যস্য যতঃ (ভাগবত ১/১/১) সুতরাং আমাদেরকে ভ্রান্তভাবে পরিচালিত বিশ্বে এই তত্ত্বটি স্থাপন করতে হবে এর পাশাপাশি এই কথাটিও আসছে যে তারা কেন জড় বস্তু থেকে জীবন সৃষ্টি করতে পারছে না? যে কাজ তারা করতে পারে নি, তাহলে তাদের কথার কি মূল্য রয়েছে? এর প্রমাণ কোথায় যে জড় থেকে জীবনের সৃষ্টি হচ্ছে? এটি করে দেখাও।
স্বরূপ দামোদরঃ প্রমাণ সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
শ্রীল প্রভুপাদঃ আহ! সেটি একটি বাজে কথা। একদম বাজে কথা। জীবন থেকে জীবনের সৃষ্টি হচ্ছে, এর ভুরি ভুরি প্রমাণ রয়েছে। মানুষ, পশু, গাছপালা - এই সব কিছুই জীবন থেকে সৃষ্টি। এখনও পর্যন্ত কেউ দেখেনি যে একটি পাথর থেকে একজন মানুষ সৃষ্টি হয়েছে। কেউই দেখে নি। কখনও কখনও একে বলা হয় বৃশ্চিক-তণ্ডুল ন্যায়। তোমরা এটি জানো? বৃশ্চিক-তণ্ডুল ন্যায়। বৃশ্চিক মানে শুঁয়োপোকা আর তণ্ডুল মানে চাল। কখনও কখনও দেখা যায় যে একটি চালের স্তুপ থেকে শুঁয়োপোকা বেরিয়ে আসছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে চাল থেকে সেই শুঁয়োপোকার জন্ম হয়েছে। তোমাদের দেশে তোমরা এটি দেখো নি? আমরা দেখেছি। চাউলের স্তুপ থেকে একটি ছোট্ট শুঁয়োপোকা বেরিয়ে আসছে। আসল কথাটি হচ্ছে, সেই শুঁয়োপোকার পিতা-মাতা ঐ চাউলের স্তুপে ডিমগুলো রেখে তাতে উতসেচন করেছে এবং তাঁর ফলে শুঁয়োপোকা বেরিয়ে এসেছে। এমন না যে চাউল থেকে শুঁয়োপোকা জন্মিয়েছে। তাই একে বলা হয় বৃশ্চিক-তণ্ডুল ন্যায়। বৃশ্চিক মানে শুঁয়োপোকা এবং তণ্ডুল মানে চাউল। সুতরাং "জড় থেকে জীবনের উদ্ভব হয়" - এটি একটা বৃশ্চিক-তণ্ডুল ন্যায়। জীবন কখনই জড় থেকে আসতে পারে না। এর পাশাপাশি ... ঠিক যেমন যখন জীবন থাকে, দেহটি বৃদ্ধি পায়, দেহের পরিবর্তন হয় অথবা বৃদ্ধি পায়, যেমনটাই তুমি বল। কিন্তু যদি একটি শিশু মারা যায় হয় অথবা মৃত শিশু বেরিয়ে আসে, তাহলে দেহটি আর বাড়ে না। মানে হচ্ছে জীবনের ওপর ভিত্তি করেই জড় বস্তুটি বৃদ্ধি পায়।