BN/Prabhupada 0095 - আমাদের কর্তব্য হল শরনাগত হওয়া
Lecture on BG 4.7 -- Bombay, March 27, 1974
আমরা শরণাগত হচ্ছি, কিন্তু কৃষ্ণের শরণাগত হচ্ছি না। এটি হচ্ছে রোগ। এই হচ্ছে রোগ। আর কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন মানে হচ্ছে এই রোগের নিরাময় করা। এই রোগ নিরাময় করো। শ্রীকৃষ্ণও আসেন। তিনি বলেছেন, যদা যদা হি ধর্মস্য (ভগবদ্গীতা.৪.৭) ধর্মস্য গ্লানি, ধর্মাচরনের অবনতি। যখন পতন হয়, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, তদাত্মনং সৃজামহ্যম। এবং অভ্যুত্থানম অধর্মস্য। দুটি জিনিস আছে। যখন মানুষ শ্রীকৃষ্ণের নিকট শরণাগত হয় না, তারা অনেক "কৃষ্ণ" তৈরি করে, বহু বদমাশ রয়েছে, শরণ নেবার জন্য। এটাই অধর্মস্য। ধর্ম মানে শ্রীকৃষ্ণের নিকট আত্মসমর্পণ করা, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত না হয়ে, তারা কুকুর, বিড়াল আরো অন্য অনেক বস্তুর শরণাগত হতে চায়, এটাই অধর্ম।
শ্রীকৃষ্ণ তথাকথিত হিন্দু ধর্ম বা মুসলিম ধর্ম বা খৃস্টান ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য আসেননি। না। তিনি প্রকৃত ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছিলেন। প্রকৃত ধর্ম মানে হচ্ছে আমাদেরকে সঠিক ব্যক্তির নিকট শরণাগত হতে হবে, এটাই প্রকৃত ধর্ম। আমরা শরণাগত হচ্ছি। প্রত্যকেরই নিজস্ব কিছু ধারণা রয়েছে। আর সে সেখানে শরণাগত হচ্ছে। হতে পারে এটি রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, যেকোন কিছু। প্রত্যেকেরই কিছু ধারণা রয়েছে। আর সেই মতাদর্শের নেতাও রয়েছে। সুতরাং আমাদের কাজ হচ্ছে শরণাগত হওয়া। এটি সত্যি। কিন্তু আমরা এটা জানি না কোথায় শরণাগত হতে হবে। এটিই সমস্যা। আর যেহেতু শরনাগতিটা ভুল জায়গায় হচ্ছে কিংবা ভুল দিকে পরিচালিত হচ্ছে, তাই সমগ্র পৃথিবী আজ বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে।
আমরা এই শরণাগতিকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবর্তন করছি। "আর কোনও কংগ্রেস দল নয় এখন সাম্যবাদ দল।" আবার, "আর কোন সাম্যবাদ দল নয় ... এই দল, সেই দল।" এই দল পরিবর্তন করে কি হবে? কারণ এই দল বা সেই দল, তারা কৃষ্ণের শরণাগত নয়। তাই যতক্ষণ তুমি শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত না হচ্ছো, সেখানে কোন শান্তি থাকবে না। এটাই হচ্ছে মূল বিষয়। কেবল গরম কড়াই থেকে নেমে আগুনে ঝাঁপ দিলে তুমি সুরক্ষিত হয়ে যাবে না। তাই শ্রীকৃষ্ণের অন্তিম উপদেশ হচ্ছে
- সর্ব ধর্মান পরিত্যজ্য
- মাম একং শরণং ব্রজ
- অহং তাং সর্ব পাপেভ্যো
- মোক্ষয়িষ্যামি
তাই ধর্মের বৈষম্য মানে হচ্ছে ... এটি শ্রীমদ্ভাগবতমে বলা হয়েছে। স বৈ পুংসাং পরো ধর্মঃ। প্রথম শ্রেণীর বা সর্বোচ্চ ধর্ম। পরোঃ অর্থ উচ্চতর, চিন্ময়। স বৈ পুংসাং পরো ধর্ম যতো ভক্তির অধোক্ষজে (শ্রীমদ্ভাগবত ১.২.৬) যখন আমরা অধোক্ষজের শরণাগত হই... অধোক্ষজ মানে পরম চিন্ময় অথবা শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণের আরেক নাম অধোক্ষজ। অহৈতুকী অপ্রতিহতা। অহৈতুকি মানে কোনও হেতু ছাড়া। কোনও কারণ ছাড়া। এইরকম না যে "শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন এই বা সেই, তাই আমি তাঁর শরণাগত হবো।" না। কোন ও কারণ ছাড়াই। অহৈতুকী অপ্রতিহতা। এবং এটিকে থামানো যাবে না। কেউ থামাতে পারবে না। তুমি যদি শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত হতে চাও, তবে সেখানে কোনও বাধা নেই, কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। তুমি যেকোনো পরিস্থিতিতে এটি করতে পারো। তুমি তা করতে পার। অহৈতুকী অপ্রতিহতা যয়াত্মা সুপ্রসীদতি। তাহলে তুমি, তোমার আত্মা,তোমার মন,তোমার দেহ, সবকিছু সন্তুষ্ট হবে। এটিই প্রক্রিয়া।