BN/Prabhupada 0113 - জিভকে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন
Lecture on SB 5.6.2 -- Vrndavana, November 24, 1976
রঘুনাথ দাস গোস্বামী অত্যন্ত কঠোরভাবে অনুসরণ করেছিলেন, চৈতন্য মহাপ্রভুও কঠোরভাবে অনুসরণ করেছিলেন। এবং শ্রীরূপ সনাতন গোস্বামীও অত্যন্ত কঠোরভাবে অনুসরণ করেছেন। এমন নয় যে কেউ বৃন্দাবনে অল্প জামা গায় দিচ্ছে বলেই সে রূপ গোস্বামীর মতো হয়ে যাবে রূপ গোস্বামী সম্পূর্ণভাবে যুক্ত ছিলেন নানাশাস্ত্র বিচারণৈক নিপুণৌ সদ্ধর্মসংস্থাপকৌ লোকানাম্ হিতকারিণৌ তাঁরা বৃন্দাবনে ছিলেন, কিন্তু সর্বদা চিন্তা করতেন কিভাবে লোকের মঙ্গল করা যায়, এই জগতের কল্যাণ করা যায় ঠিক প্রহ্লাদ মহারাজের মতো। শোচে ততো বিমুখ চেতসা (SB 7.9.43) সাধুর চিন্তা হচ্ছে ভগবদবিমুখ ভ্রান্ত জনসাধারণের কথা ভাবা তাঁরা সর্বদা ভাবছেন, চিন্তা করছেন কিভাবে তাদের দুঃখ দুর্দশা দূর করে তাদের মঙ্গল করা যায় এই হচ্ছে সাধুর স্বভাব। লোকানাম্ হিতকারিণৌ সাধু , এমন নয় যে "আমি আমার পোশাক এইরকম ভাবে বদলেছি এবং মানুষের করুণা নিয়ে রুটি কাপড়ের ব্যবস্থা করে নিয়েছি, এখন খাব আর ঘুমাব"। তা সাধুর কাজ নয় সাধু ... ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন সাধু কে। অপি চেৎ সুদূরাচারো ভজতে মামনন্যভাক্ সাধুরেব স মন্তব্য (গীতা ৯/৩০) এই হচ্ছে সাধু। যিনি তাঁর জীবনকে পূর্ণরূপে ভগবানের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন তিনিই সাধু। এমনকি তাঁর কোন বাজে অভ্যাস থাকলেও... বাজে অভ্যাস, সাধুর বাজে অভ্যাস থাকতে পারে না। কারণ যদি কেউ সাধু হন শুরুতে হয়ত তাঁর কিছু বাজে অভ্যাস থাকতে পারে, কিন্তু তা পরিষ্কার হয়ে যাবে ক্ষিপ্রং ভবতি ধর্মাত্মা শশ্বৎ শান্তিম্ নিগচ্ছতি (ভগবদ গীতা 9.31)। যদি তিনি প্রকৃতই সাধু হন, তাহলে শীঘ্রই তাঁর সব বাজে অভ্যাস দূর হয়ে যাবে অতি শীঘ্র। এমন না যে কেউ তার বাজে অভ্যাস ইচ্ছে করে ধরে রাখবে আর সাধুও হবে। তা হবে না। সেটি সাধুসুলভ নয়। হয়ত তার পূর্ব অভ্যাসবশত সে কিছু ভুল কাজ করে ফেলেছে। সেটি ক্ষমা করা যেতে পারে। কিন্তু সাধুর নাম করে, মুক্ত হয়ে গেছে মনে করে যদি বাজে কাজ করা চালিয়ে যায়, আজেবাজে কর্ম করে, তবে সে একটা প্রতারক। সে সাধু নয়। অপি চেৎ সুদূরাচারো। চেৎ, যদি, ঘটনাক্রমে, তা হতেও পারে। কিন্তু সে যদি কৃষ্ণভাবনামৃতের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে ক্ষিপ্রং ভবতি ধর্মাত্মা শশ্বৎ শান্তিম্ নিগচ্ছতি শুরুতে ভুল ত্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের দেখতে হবে যে "সেই ভুলগুলি কি আমরা শুধরে নিতে পেরেছি?" সেইরকম ভাবে সতর্ক থাকতে হবে। মনকে কখনও বিশ্বাস করতে নেই সেই কথাই এখানে উপদেশ করা হচ্ছে। মনকে কখনও বিশ্বাস করবে না আমার গুরুমহারাজ সেই কথা বলতেন "ঘুম থেকে উঠে জুতো দিয়ে মনকে একশ ঘা মারা উচিত এই হচ্ছে তোমার প্রথম কাজ। এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঝাড়ু নিয়ে তোমার মনকে একশ বার ঝাটা মারা উচিত তাহলে তুমি তোমার মনকে সংযত করতে পারবে, নয়ত তা অত্যন্ত কঠিন"।
এই জুতো আর ঝাঁটাপেটা করাটাও একটা তপস্যা আমাদের মতো মানুষদের জন্য মনের ওপর আমাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই আমাদের এই তপস্যা অভ্যাস করা উচিত। জুতো ও ঝাঁটা দিয়ে মনকে প্রহার করা উচিত তবেই তা নিয়ন্ত্রণ হতে পারে এবং স্বামী মানে যার মনের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ আছে বাচো বেগম্ ক্রোধ বেগম্ উদর বেগম্ উপস্থ বেগম্ মনস বেগম্ জিহ্বা বেগম্ এতান্ বেগান যো বিষহেত ধীরঃ পৃথিবীম্ অপি মাম্ শিষ্যাৎ (উপদেশামৃত ১) এই হচ্ছে শ্রীল রূপ গোস্বামীর উপদেশ। যখন আমরা বাচোবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারব এই হচ্ছে ক্রন্দন বেগম্ (হাসি) ওরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না । তাই তারা শিশু শিশুকে ক্ষমা করা যেতে পারে, কিন্তু যে ব্যক্তি পারমার্থিক জীবনে আছে সে যদি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে তার কোন আশা নেই কোন আশা নেই তার। একে নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে বাচো বেগম্ ক্রোধ বেগম্ উদর বেগম্ উপস্থ বেগম্ মনস বেগম্ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে উদর বেগম্ এবং জিহ্বা বেগম্ জিহ্বা বেগম্ । একে নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে ভক্তিবিনোদ ঠাকুর বলেছেন, "তাহার মধ্যে জিহ্বা অতি লোভময় সুদুর্মতি" "তাহার মধ্যে জিহ্বা অতি লোভময় সুদুর্মতি তাঁকে জেতা কঠিন সংসারে অত্যন্ত কঠিন, জিহবাকে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন