BN/Prabhupada 0556 - সবার প্রথমে আত্ম উপলব্ধি হতে হবে, আত্মা হচ্ছে চিরন্তন



Lecture on BG 2.62-72 -- Los Angeles, December 19, 1968

প্রভুপাদঃ জড়বাদী মানুষেরা বুঝতে পারে না ভবিষ্যত কী। তারা ভাবছে এই শরীরটিই সব কিছু। "আমরা এই দেহটি পেয়েছি এবং এটি শেষ হয়ে গেলে সবকিছু শেষ হয়ে যায়।" এই প্রশ্নগুলি আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। কিন্তু আসলে তা হয় না। এটি হচ্ছে আত্মোপলব্ধির প্রথম উপলব্ধি যে, আত্মা চিরন্তন, এই দেহ ধ্বংসের পরেও তা ধ্বংস হয় না। এটি আত্মোপলব্ধির শুরু। সুতরাং এই সমস্ত লোকেরা, তারা এটি বুঝতে পারে না। তাদের এতে কিছু যায় আসে না। এটিই তাদের ঘুম। এটিই তাদের করুণ অবস্থা। চালিয়ে যাও।

তমালকৃষ্ণঃ "তিনি জাগতিক প্রতিক্রিয়ার দ্বারা বিঘ্নিত না হয়ে তার আত্ম-উপলব্ধি কার্যক্রম চালিয়ে যান।" (শ্রীমদ্ভগবদগীতা ২।৭০)ঃ "যে ব্যক্তি তার বাসনা রূপ তরঙ্গের দ্বারা বিচলিত হয় না, ঠিক যেমন সমুদ্রের মধ্যে নদী প্রবেশ করে, যা সর্বদাই পূর্ণ হচ্ছে, কিন্তু তবুও তা সর্বদা স্থির থাকে, একাই শান্তি অর্জন করতে পারে, এবং এমন ব্যক্তি নয় যে এইরকম আকাঙ্ক্ষা মেটাতে সচেষ্ট হয়। "

প্রভুপাদঃ এখন, এখানে ... একজন জড়-জাগতিক ব্যক্তি, তার ইচ্ছা আছে। ধর তিনি কিছু ব্যবসা করছেন, তিনি অর্থ পাচ্ছেন। তাই তিনি জাগতিক উপায়ে তার বাসনা পূর্ণ করেন। তবে একজন কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি, ধর তিনিও একইভাবে করছেন, তিনিও কৃষ্ণভাবনামৃতের জন্য পরিকল্পনা বা কিছু করছেন। সুতরাং এই দুটি ভিন্ন বলয়ের ক্রিয়াকলাপ একই স্তরের নয়। চালিয়ে যাও।

তমালকৃষ্ণঃ (শ্রীমদ্ভগবদগীতা ২।৭০): " একজন ব্যক্তি যিনি ... :(শ্রীমদ্ভগবদগীতা ২।৭১) : "যে ব্যক্তি ইন্দ্রিয়তৃপ্তির সমস্ত বাসনা ত্যাগ করেছেন, যিনি আকাঙ্ক্ষা থেকে মুক্ত থাকেন, যিনি প্রভুত্ব করার সমস্ত ধারণা ত্যাগ করেছেন এবং মিথ্যা অহংকার থেকে মুক্ত, তিনিই কেবল প্রকৃত শান্তি লাভ করতে পারেন।"

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। সুতরাং যে ব্যক্তি ইন্দ্রিয়তৃপ্তির জন্য সমস্ত আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করেছেন। আমরা আমাদের বাসনাকে হত্যা করতে পারি না। কিভাবে তুমি হত্যা করতে পার? বাসনা একটি জীবের নিরবিচ্ছিন্ন সঙ্গী। এটাই জীবনের লক্ষণ। কারণ আমি জীব, তুমি জীব, তোমার বাসনা আছে, আমার বাসনা আছে। এই টেবিল না। এই টেবিলটার কোনও জীবন নেই; সুতরাং এটির কোন বাসনাও নেই। টেবিল বলতে পারে না যে "আমি এখানে কত মাস দাঁড়িয়ে আছি। দয়া করে আমাকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাও।" না। কারণ তার কোনও ইচ্ছা নেই। তবে আমি যদি এখানে তিন ঘন্টা বসে থাকি, ওহ আমি বলব, "ওহ, আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। দয়া করে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও... দয়া করে আমাকে অন্য একটি জায়গা দাও।" তাই বাসনা অবশ্যই থাকবে কারণ আমরা জীবিত। আমাদেরকে আমাদের বাসনাগুলোর দিক পরিবর্তন করতে হবে। আমরা যদি আমাদের বাসনা গুলোকে ইন্দ্রিয়তৃপ্তির কাজে নিযুক্ত করি তবে তা জড়-জাগতিক। তবে আমরা যদি আমাদের বাসনা গুলোকে শ্রীকৃষ্ণের জন্য কার্যনির্বাহের সেবায় লাগাই, তাহলেই আমরা সমস্ত বাসনা থেকে থেকে মুক্ত। সেটাই হল নির্ণায়ক।

তমালকৃষ্ণঃ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ২।৭২|) : "এটিই হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও ঐশ্বরিক জীবনের পথ, যা অর্জন করার পরে একজন মানুষ আর বিমোহিত হন না। এমনকি মৃত্যুর সময়ও তিনি এইভাবে অবস্থিত থেকে ভগবানের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারেন।" তাৎপর্য্যঃ "কেউ তৎক্ষণাৎ কিংবা এক সেকেন্ডের মধ্যে কৃষ্ণভাবনামৃতের দিব্য জীবন লাভ করতে পারে, আবার লক্ষ লক্ষ জন্মের পরেও একজন এই ধরণের জীবন অর্জন করতে নাও পারে। "

প্রভুপাদঃ বেশ কয়েকবার প্রশ্ন এসেছিল যে "কৃষ্ণভাবনাময় হতে কত সময় লাগবে?" আমি ইতিমধ্যেই উত্তর দিয়েছি যে, এক সেকেন্ডেই এটি করা যেতে পারে। একই জিনিস ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। চালিয়ে যাও।