BN/Prabhupada 0582 - শ্রীকৃষ্ণ হৃদয়ে অবস্থান করছেন
Lecture on BG 2.21-22 -- London, August 26, 1973
পরীক্ষাটি আমাদের নিজেদের হাতেই আছে যদি মঙ্গল আরতির সময় আমি অলস অনুভব করি, তার মানে আমি এখনও পারমার্থিকভাবে উন্নত নই। এবং কেউ যদি উৎসাহ বোধ করে, "এখন মঙ্গল আরতির সময়, আমকে উঠতে হবে, এটা করতে হবে, তাহলে তা পারমার্থিক। যে কেউই তা পরীক্ষা করতে পারে ভক্তিপরেশানুভব বিরক্তিঃ অন্যত্র স্যাৎ (ভাগবত ১১/২/৪২) তাই যেই মাত্র তুমি চিন্ময় বস্তুর সংস্পর্শে আসবে, বিরক্তিঃ অন্যত্র স্যাৎ এই অগতের আর কোন ভোগ ভাল লাগবে না শ্রীকৃষ্ণ আছেন, তিনি তোমার হৃদয়ে বসে আছেন এবং আমি জীবাত্মাও বসে আছি, ঠিক যেমন একটি গাছে দুটি পাখির মতো সেই কথা উপনিষদেও বলা হয়েছে সমানে বৃক্ষ পুরুষ নিমগ্নঃ। তারা একই স্তরে বসে আছে নিমগ্নঃ। পাখিটি সেই গাছের ফল খাচ্ছে অর্থাৎ জীবাত্মা সে সকাম কর্ম করেই যাচ্ছে ক্ষেত্রজ্ঞ। এই সবকিছুই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ক্ষেত্রজ্ঞম্ মাম্ চাপি বিদ্ধি সর্বক্ষেত্রেষু ভারত (গীতা ১৩/৩) মালিক এবং ক্ষেত্রে অবস্থানকারী। আমি এই দেহে অবস্থানকারী এবং কৃষ্ণ হচ্ছে মালিক তাই কৃষ্ণের আরেক নাম হচ্ছে হৃষীকেশ। হৃষীকেশ। তাই আসলে প্রকৃতপক্ষে তিনিই এই দেহের, এই হাত এই পা, আমার সমস্ত ইন্দ্রিয়ের অধীশ্বর । আমি কেবল এখানে অবস্থানকারী মাত্র। আমি মালিক নই। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি ঠিক যেমন তুমি যদি কোন বাড়িতে ভাড়া থাকো, তার মানে কেবল তুমি কেবল ওখানে অবস্থান করছ তোমাকে সেই বাড়িতে থাকতে অনুমতি দেয়া হয়েছে । তুমি মালিক নও কিন্তু যদি তুমি ভাব তুমি মালিক, সেটি হবে স্তেন এব স উচ্যতে (গীতা ৩/১২) তৎক্ষণাৎ তাকে অপরাধী গণ্য করা হবে
তাই যে কিছুই ধর না কেন, তোমার দেহ, তোমার দেশ, তোমার জাতি, তোমার বিশ্ব অথবা এই ব্রহ্মাণ্ড, কোন কিছুই তোমার নয় এর মালিক হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। মালিক হচ্ছেন সর্ব লোক মহেশ্বরম্ (গীতা ৫/২৯) কৃষ্ণ বলেছেন, "আমিই হচ্ছি অধীশ্বর" তাই ভুলটি হচ্ছে যে আমরা মালিককে জানি না, এবং আমরা যদিও এতে অবস্থান করছি, কিন্তু এই অবস্থানকে ভুল্ভাবে নিচ্ছি। সেটি জাগতিক অবস্থা। ভুল। নতুবা পরিচালনা আছে, পরিচালক রয়েছেন, তিনি সর্বদা তোমাকে সাহায্য করছেন কিন্তু রোগটি হচ্ছে আমরা মালিক বলে নিজেকে দাবী করছি এবং আমার নিজের খেয়ালখুশিমতো চলতে চাইছি। সেটি হচ্ছে জাগতিক অবস্থা আমার কাজ হচ্ছে মালিকের জন্য কাজ করা, আমার নিজের জন্য নয় তাই সেটিই হচ্ছে আমার প্রকৃত স্থিতি। শ্রীকৃষ্ণ আমাকে বানিয়েছেন ঠিক বানান নি, বরং আমরা সকলেই তাঁর সঙ্গে রয়েছি কিন্তু আমরা চিরন্তন দাস। ঠিক যেমন এই দেহের সঙ্গে এই আঙ্গুলও জন্মেছে আঙ্গুলগুলো আলাদাভাবে জন্মায় নি, যখন আমি জন্মেছি তখন আঙ্গুলও জন্মেছে তাই যখন কৃষ্ণ ছিলেন, তিনি কখনও জন্ম গ্রহণ করেন না। তাহলে আমরাও কখনও জন্ম গ্রহণ করি নি। ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে (গীতা ২/২০) খুবই সরল দর্শন কারণ আমরা শ্রীকৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদি কৃষ্ণ জন্ম নিতেন তাহলে আমিও নিতাম। যদি কৃষ্ণ জন্ম না নেন, তাহলে আমিও জন্ম নেই নি। কৃষ্ণ অজ, তাই আমিও অজ। অজম্ অব্যয়ম্ । শ্রীকৃষ্ণ অজ, অব্যয়। আমরাও অব্যয়। কারণ আমরা কৃষ্ণেরই অংশ তাই এই অংশেরা কেন আছে? আমার হাত কেন আছে? কারণ আমার তা দরকার এই হাতের সাহায্য আমার দরকার, এই আঙ্গুলের সাহায্য আমার দরকার। তা প্রয়োজন আছে বদমাশেরা বলে, "ভগবান কেন আমাদের বানালেন?" আরে মূর্খ, তা দরকার আছে। কারণ তিনি ভগবান, তিনি তোমার সেবা গ্রহণ করতে চান। ঠিক যেমন ধনীলোক, তাঁর অনেক সেবক থাকে। যদি কোন মূর্খ বলে, "আপনি কেন এত সেবক রাখছেন?" "কারণ আমি বড়লোক, আমি চাই রাখতে "। সহজ কথা। ঠিক তেমনই, যদি ভগবান পরম কর্তৃপক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁরও অনেক সহকারী থাকবে। অন্যথায়, তিনি কীভাবে এসব ব্যবস্থা করবেন?"