BN/Prabhupada 0694 - সেবার মনোভাবে স্থিত হওয়া, সেটিই আমাদের নিরাময়



Lecture on BG 6.46-47 -- Los Angeles, February 21, 1969

ভক্তঃ "এটা না করতে পারলে তার অধঃপতন হবে। ভাগবত এই সম্বন্ধে বলছেন 'যে কোনও ব্যক্তিই যে পরমেশ্বর ভগবানের প্রতি সেবা করে না, যিনি সমস্ত জীবের উৎস, সেই ব্যক্তি নিশ্চয়ই তার স্তর থেকে অধঃপতিত হবে।'

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ।

য এষাম্‌ পুরুষম্‌ সাক্ষাদ্‌
আত্মপ্রভাবম্‌ ঈশ্বরম্‌
ন ভজন্তি অবজানন্তি
স্থানাদ্‌ ভ্রষ্টাঃ পতন্ত্যি অধঃ
(ভাগবত ১১/৫/৩)

এইটিও অনেক সুন্দর একটি উদাহরণ। ভাগবত বলেন আমরা সকলেই ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদি আমরা ভগবানের সেবা না করি তাহলে আমরা আমাদের স্বরূপগত অবস্থান থেকে পতিত হব। সেটি কি? সেই একই উদাহরণ দেয়া যায়, যে এই আঙ্গুলটি যদি এটি দেহ থেকে আলাদা করে দেয়া হয়, এবং শরীরের সেবা করতে না পারে, এটি কেবল যন্ত্রণাই দেবে আরেকটি বিষয় , অবিচ্ছেদ্য অংশ , বুঝতে চেষ্টা কর। যদি অবিছেদ্য অংগ নিয়মিত সেবা করতে না পারে, তার মানে তা যন্ত্রণাদায়ক। তাই যেই ব্যক্তিই ভগবানের সেবা করছে না সে কেবল ভগবানকে যন্ত্রনা দিচ্ছে মাত্র সে কেবল যন্ত্রণাই দিচ্ছে। তাই তাকেও ভুগতে হবে। ঠিক যেমন যেই লোকটি দেশের আইন মানছে না, যে কেবল সরকারকে যন্ত্রণাই দিচ্ছে এবং সেই অপরাধের জন্য সে দায়ী থাকছে সে ভাবতে পারে, "আমি খুব ভাল মানুষ," কিন্তু যেহেতু সে দেশের নিয়ম ভাঙছে , সে কেবল সরকারকে জ্বালাই দিচ্ছে। এটি বোঝা খুবই সহজ।

তাই যে কোনও ব্যক্তি, যে সেবা করছে না, যে জীব ভগবানের সেবা করছে না, সেই কষ্ট পাচ্ছে। যেহেতু সে কষ্ট পাচ্ছে, তাই শ্রীকৃষ্ণ আসেন। তিনি কষ্ট পান। সেটি পাপময়, যদি আমরা তাঁকে দুঃখ দেই। সেই একই উদাহরণ, স্থানাদ্‌ ভ্রষ্ট পতন্ত্যি অধঃ এবং যখনই কোন কিছু কষ্টদায়ক হচ্ছে ঠিক যেমন সরকার এই সমস্ত পাপী জনগণকে কারাগারে রাখে। একসঙ্গে নিয়ে "এখানে থাক, তোরা সবগুলি বদমাশ , অপরাধী। এখানে থাক। সারা দেশে উৎপাত করিস না।" সেই রকম ভাবে, সমস্ত অপরাধী যারা ভগবানের আইন অমান্য করেছে, যারা ভগবানকে কেবল দুঃখই দিয়েছে, তাদেরকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে সবগুলিকে। স্থানাদ্‌ ভ্রষ্ট পতন্ত্যি অধঃ, সে তার নির্দিষ্ট জায়গা থেকে অধঃপতিত হয় ঠিক সেই একই উদাহরণ। যদি তোমার আঙ্গুল কেবল দুঃখ দিচ্ছে ডাক্তার পরামর্শ দেন, "ওহ্‌ মশায়, আপনার আঙ্গুলটি কেটে ফেলতে হবে। না হলে এটি সারা দেহকে কেবল কষ্টই দেবে।" তাই স্থানাদ্‌ ভ্রষ্টঃ এটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে পতিত।

এভাবে আমরা অধঃপতিত। ভগবদ্ভাবনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার কারণে আমরা অধঃপতিত। যদি আমরা সেই অবস্থানে ফিরে আসতে চাই, তাহলে আমদের সেই সেবার মনোভাব জাগিয়ে তুলতে হবে। সেটিই সবচেয়ে ভাল রোগ সারাই ব্যবস্থা। নয়তো আমরা কেবল দুঃখই পাব । আর আমাদের কারণে ভগবানও দুঃখ পাবেন ঠিক যেমন তোমার সন্তান যদি ভাল না হয়, তুমিঅই ভুগবে , তোমার সন্তানও ভুগবে ঠিক তেমনি, আমরা সকলেই ভগবানের সন্তান, তাই যখন আমরা দুঃখ পাই, তখন তিনিও দুঃখ পান তাই সবচেয়ে ভাল হচ্ছে আমাদের কৃষ্ণভাবনাকে জাগ্রত করা, এবং তাঁর সেবায় নিযুক্ত হওয়া। সেটিই স্বাভাবিক জীবন। সেটি কেবল ভগবদ্ধামে বা চিন্ময় আকাশে গোলোক বৃন্দাবনেই সম্ভব। পড়তে থাকো।