BN/Prabhupada 0781 - শ্রীকৃষ্ণের চরণে মন নিবদ্ধ করাই যোগের প্রকৃত সার্থকতা



Lecture on SB 6.1.21 -- Chicago, July 5, 1975

যোগ্য ব্রাহ্মণ মানে কি? তোমরা অনেকবার শুনেছ শমো দমঃ সত্যম্‌ শৌচম্‌ আর্জবম্‌ তিতিক্ষা জ্ঞানম্‌ বিজ্ঞানম্‌ আস্তিক্যম্‌ ব্রহ্মকর্মস্বভাবজম্‌ (গীতা ১৮/৪২) এই গুণগুলো পেতে হবে। প্রথমে শম। শম মানে জাগতিক পরিস্থিতিতে মনের সাম্যাবস্থা। মন কখনও বিক্ষিপ্ত হবে না মন বিক্ষেপ হবার অনেক কারণ আছে যখন মন বিক্ষিপ্ত হয় না, তখন সেটি হচ্ছে শম গুরুণাপি দুঃখেন বিচাল্যতে । সেটি হচ্ছে যোগের সিদ্ধি

যং লব্ধা চাপরম্‌ লাভম্‌
মন্যতে নাধিকম্‌ ততঃ
যস্মিন্‌ স্থিতে গুরুনাপি
দুঃখেন ন বিচাল্যতে
(গীতা ৬/২২)

এর নাম প্রশিক্ষণ। মন অত্যন্ত চঞ্চল। এমনকি পাঁচ হাজার বছর আগেও অর্জুনকে শ্রীকৃষ্ণ এই একই উপদেশ দিয়েছিলেন "তোমার অশান্ত মনকে নিয়ন্ত্রণ কর" তিনি খোলাখুলি বললেন "হে কৃষ্ণ, তা সম্ভব নয়"। চঞ্চলম্‌ হি মনঃ কৃষ্ণ প্রমাথি বলবদ্‌ দৃঢ়ম্‌ (গীতা ৬/৩৪) "আমার মন সর্বদা অত্যন্ত বিক্ষিপ্ত এবং এই অশান্ত মনকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা যেন বায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টার মতো তাই তা সম্ভব নয়।" কিন্তু আসলে ওনার মন শ্রীকৃষ্ণেই ছিল যাদের মন শ্রীকৃষ্ণে নিবদ্ধ হয়েছে, তাঁদের মন তাড়া জয় করতে পেরেছেন তাঁদের মন নিয়ন্ত্রিত। সেটিই চাই স বৈ মনঃ কৃষ্ণ পদারবিন্দয়ো বচাংসি বৈকুণ্ঠ গুণানুবর্ণনে (ভাগবত ৯.৪.১৮) এইগুলি ছিল অম্বরীষ মহারাজের গুণ। তিনি অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ সম্রাট ছিলেন, কিন্তু তাঁর মন শ্রীকৃষ্ণে নিবদ্ধ ছিল আমরা সেটিই চাই।

এটি হচ্ছে ব্রাহ্মণের গুণ। কীভাবে কৃষ্ণপাদপদ্মে মন নিবদ্ধ করা যায় এবং সেটিই হচ্ছে যোগসিদ্ধি যোগ মানে... কিছু ভেল্কিবাজী দেখানো নয়। না যোগের প্রকৃত সিদ্ধি হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের চরণে মন নিবদ্ধ করতে পারা এই জন্য তোমরা দেখবে ষষ্ঠ অধ্যায়ের শেষ শ্লোকে সিদ্ধান্ত দেয়া হচ্ছে

যোগিনাম্‌ অপি সর্বেষাম্‌
মদ্‌গতেনান্তরাত্মনা
শ্রদ্ধাবান্‌ ভজতে যো মাম্‌
স মে যুক্ততমো মতঃ
(গীতা ৬/৪৭)

অর্জুনকে উৎসাহিত করার জন্য। তিনি ভাবছিলেন, "আমি কোন কাজের নই, , আমি আমার মন নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না"। কিন্তু ওনার মন ইতিমধ্যেই কৃষ্ণে নিবদ্ধ ছিল। তাই শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে উৎসাহ দিলেন, "হতাশ হয়ো না, যে ব্যক্তির মন ইতিমধ্যেই আমাতে স্থিত হয়েছে তিনি প্রথম শ্রেণীর, শ্রেষ্ঠ যোগী" । তাই আমাদেরকে সবসময় কৃষ্ণস্মরণ করতে হবে। হরে কৃষ্ণ কীর্তন করতে হবে। যদি তুমি হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন কর, হরে কৃষ্ণ। অর্থাৎ তোমার মন শ্রীকৃষ্ণে নিবদ্ধ। সেটিই হচ্ছে যোগের সিদ্ধি তাই ব্রাহ্মণ হবার সেটিই প্রথম যোগ্যতা মনকে সর্বদা যুক্ত রাখা, বিক্ষিপ্ত না হতে দেয়া। শম। এবং যখন তোমার মন নিয়ন্ত্রিত, তখন তোমার ইন্দ্রিয়গুলোও নিয়ন্ত্রিত থাকবে যদি তুমি মনকে স্থির কর যে "আমি কেবল হরে কৃষ্ণ কীর্তন করব এবং কেবল কৃষ্ণ প্রসাদ পাব, আর কিছু না" তাহলে ইন্দ্রিয়গুলো আপনা থেকেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তার মধ্যে জিহ্বা অতি, লোভময় সুদুর্মতি।