BN/Prabhupada 0782 - জপ কীর্তন করা বাদ দিও না। তাহলেই কৃষ্ণ তোমাকে রক্ষা করবেন



Lecture on SB 6.1.28-29 -- Philadelphia, July 13, 1975

অজামিল তার যুবক অবস্থায় একজন বেশ্যার সঙ্গপ্রভাবে তার সমস্ত সদ্‌গুণাবলী হারিয়েছিলেন। সেই বেশ্যার খরচ মেটাতে একটার পর একটা চুরি করা, প্রতারণা করা এসবেই ছিলেন ভুল করেই হোক অথবা বয়সের কারণেই হোক সেই বেশ্যার দ্বারা সে প্রভাবিত হয়েছিল ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সবকিছু দেখছিলেন। তাই তিনি তাকে সুযোগ দিয়েছিলেন যে সে যেন কমপক্ষে তার ছেলেকে আদর করে ডাকতে গিয়ে "নারায়ণ নারায়ণ" বলে ডাকে। নারায়ণ আমার কাছে এসো। নারায়ণ খেয়ে যাও। নারায়ণ বসো। তাই ভাবগ্রাহী জনার্দন (চৈতন্য ভাগবত আদি খণ্ড ১১/১০৮) । ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এতোই করুণাময় তিনি উদ্দেশ্য বা সার গ্রহণ করেন কারণ তাঁর দিব্য নামের শক্তি রয়েছে তাই যদিও অজামিল মূর্খতাবশত তাঁর ছেলের দেহের প্রতি আসক্ত ছিল কিন্তু যেহেতু সে নারায়ণ নারায়ণ জপ করছিল, তাই ভগবান তাতে সার বস্তুটি গ্রহণ করেছিলেন। ব্যাস্‌। "যে কোন ভাবেই হোক ও তো আমার নাম উচ্চারণ করেছে"। ভগবানের নাম কীর্তনের বা উচ্চারণ এতোই চমৎকার তাই জপ কীর্তন বন্ধ কর না। তাহলেই কৃষ্ণ তোমাকে রক্ষা করবেন এটি খুবই সরল "হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ" এভাবেই অভ্যাস করতে থাকো। স্বাভাবিকভাবেই যখন তুমি বিপদে থাকো, তুমি 'হরে কৃষ্ণ' বলবে। সেটিও কাজে লাগবে তোমাকে এটি করার অভ্যাস করতে হবে। হরে কৃষ্ণ জপ করতে হবে , তাহলেই তুমি নিরাপদ।

এটি কঠিন কিছু নয়, আন্তরিকভাবে জপ কর। অপরাধ মুক্ত হয়ে থাকার চেষ্টা কর ইচ্ছে করে ইন্দ্রিয়তৃপ্তির দ্বারা অধঃপতিত হবার চেষ্টা কোর না। সেটি খুবই মারাত্মক ... তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে অধঃপতিত হন নি ঘটনাক্রমে এক বেশ্যার সঙ্গপ্রভাবে এটি হয়েছিল। নিজেকে বাঁচাতে পারেন নি... তাই ঘটনাক্রমে তিনি অধঃপতিত হয়েছিলেন, ইচ্ছে করে নয় এই বিষয়টি লক্ষ্য করতে হবে। ইচ্ছে করা করাটা অনেক বড় অপরাধ ঘটনাক্রমে হয়ে যাবার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে কারণ আমরা এমনিতেই পতিত এবং জন্মজন্মান্তর ধরে বাজে কাজে অভ্যস্ত কারণ জাগতিক জীবন মানেই পাপের জীবন তুমি দেখবে যে সমস্ত জনসাধারণ , কেউই এটা পাত্তা দেয় না তারা এটা জানেও না পর্যন্ত এসব পাপকর্ম আমরা বলি, "কোন মদ খাওয়া চলবে না, মাংসাহার চলবে না, কোন জুয়া খেলা চলবে না" এই কথা শুনে পাশ্চাত্যের লোকেরা ভাবে, "এসব কি আজেবাজে কথা বলছে? এসব মানুষের জীবনের প্রাথমিক চাহিদা আর এই লোকটা এসব করতে না করছে।" ওরা জানেও না আমাদের কিছু অনুসারীরা সংস্থা ছেড়ে চলে গেছে ওরা ভাবছে যে "স্বামীজী আমাদের জীবনের প্রাথমিক চাহিদাগুলোই অস্বীকার করছে" ওরা এতোই মূর্খ যে ওরা বোঝেও না যে এগুলো পাপময় কর্ম কেবল সাধারণ মানুষই নয়, এমন কি একজন বিখ্যাত ব্যক্তি, যুক্তরাজ্যের লর্ড জেট্‌ল্যান্ড সেও। আমার একজন গুরুভাই প্রচার করতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে লর্ড জেট্‌ল্যান্ড, জেট্‌ল্যান্ডের মার্কুইস ... তিনি লর্ড রোনাল্ডশে নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি বাংলার গভর্নর ছিলেন আমাদের কলেজ জীবনে তিনি মাঝেমধ্যে আসতেন... একজন স্কটিশ ছিলেন খুব ভদ্রলোক ছিলেন এবং দর্শনে আগ্রহী ছিলেন তিনি আমার গুরুভাইকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আপনি আমাকে ব্রাহ্মণ বানিয়ে দিতে পারেন?" তিনি বললেন, হ্যাঁ, কেন পারবো না? আপনি এইসব নিয়মকানুন পালন করুন, তাহলে ব্রাহ্মণ হতে পারবেন।" যখন সেই লোক এই নিয়মের কথাগুলো শুনল- কোন মাংসাহার চলবে না, জুয়া, নেশা, অবৈধ যৌনসঙ্গ চলবে না তিনি বলেন - "ওহ্‌ এসব করা অসম্ভব, এ সম্ভব নয়"। তিনি সোজাসুজি না করে দেন যে "আমাদের দেশে এসব সম্ভব না" তাই এটি খুব কঠিন ব্যাপার, কিন্তু কেউ যদি করতে পারে এই পাপকর্ম বাদ দিতে পারে, তাহলে তাঁর জীবন শুদ্ধ হবে, তিনি পবিত্র হবেন এবং কেউ যদি শুদ্ধ হতে না পারে, সে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করতে পারবে না আর না সে পারবে কৃষ্ণভাবনামৃতকে বুঝতে।