BN/Prabhupada 0786 - যমরাজের দ্বারা শাস্তি পেতে অপেক্ষা কর



Lecture on SB 6.1.48 -- Dallas, July 30, 1975

প্রভুপাদঃ ব্রহ্মচারী সাধারণত পঁচিশ বছর পর্যন্ত গুরুকুলে থাকা উচিৎ। সেইভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তারপর যদি গুরু মনে করেন যে তাঁর শিষ্যের বিবাহ করা উচিৎ তখন সে গৃহে যাবে এবং বিবাহ করবে অন্যথায় সারাজীবন ধরে তাঁর ব্রহ্মচর্য পালন করা উচিৎ (গৃহে) প্রবেশের দরকার নেই... কারণ এই মনুষ্য জীবন ভগবদ্‌ উপলব্ধির জন্য এই জীবন মৈথুন উপভোগ বা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য নয় এটি কেবল... সেই সুযোগ এই জীবনে আছে যে একজন ব্যক্তি এই জীবনে তাঁর স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে যে সে হচ্ছে চিন্ময় আত্মা এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বা পরমাত্মা সম্পর্কে জানতে পারেন। এই চিন্ময় আত্মা হচ্ছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তাঁর কর্তব্য হচ্ছে পূর্ণের সঙ্গে যুক্ত থাকা ঠিক যেমন একটি যন্ত্রের যেমন এই টাইপরাইটার মেশিনের একটি নাট যদি এই নাটটি এই মেশিনের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে এর মূল্য আছে আর যদি এই নাটটি যন্ত্র ছাড়াই থাকে তাহলে এর কোন মূল্য নেই। একটা ছোট্ট নাটবল্টুর কি মূল্য আছে? কিন্তু যখন একটি যন্ত্রের মধ্যে নাটের দরকার পড়ে, তখন তোমাকে সেটি কিনতে যেতে হবে - আর ওরা পাঁচ ডলার দাম নিয়ে নেবে। কিন্তু কেন? কারণ যখন এটি যন্ত্রের অঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত তখন এর মূল্য আছে এইরকম অনেক উদাহরণ আছে। ঠিক যেমন আগুনের স্ফুলিঙ্গ আগুন যখন জ্বলে, তখন তোমরা অনেক ছোট ছোট অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখবে "ফট্‌ ফট্‌" আওয়াজ করে। খুব সুন্দর খুব সুন্দর কেন? কারণ এটি আগুনের সঙ্গে আছে এবং যেই মুহূর্তে স্ফুলিঙ্গ আগুন থেকে ছিটকে পড়ছে, তখন আর এর কোন মূল্য নেই কেউই সেই স্ফুলিঙ্গের পরোয়া করে না। ওটা শেষ ঠিক তেমনই, আমরা যতক্ষণ কৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত থাকছি ততক্ষণ আমাদের মূল্য আছে এবং যেই আমরা শ্রীকৃষ্ণের স্পর্শ থেকে দূরে সরে যাই, তখন আমাদের আর কোন মূল্য থাকে না।

সেই কথা আমাদের বোঝা উচিৎ। সুতরাং কীভাবে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে কেউ যুক্ত থাকতে পারে সেটিই হচ্ছে মানব জীবনের লক্ষ্য এবং আমরা যদি তা না করি, তাহলে সেটি পাপময়। আর ফলে আমরা শাস্তিযোগ্য হচ্ছি "তোমাকে আত্ম উপলব্ধির সুযোগ দেয়া হয়েছে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তোমার সম্বন্ধ নিয়ে বুঝতে। তুমি সেই সুযোগ নাও নি।" "ওকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ঠিক আছে, তুমি আবারো পশু হয়ে যাও, জন্মমৃত্যুর চক্রে ঘুরতে থাকো।" তাই আমাদের অত্যন্ত সাবধান হতে হবে। এমনটা মনে কর না যে "আমরা স্বাধীন, আমি যা খুশি করতে পারি" সেটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জীবন। তাই সেই রকম মূর্খের মতো ভেব না। যমরাজ আছেন। আমরা শ্রীকৃষ্ণের সন্তান। যখন ভগবান চান, যে "আমার সন্তানেরা এই জড় জগতে দুঃখভোগ করছে ওরা আমার কাছে ফিরে আসুক।" এই কারণে তিনি স্বয়ং আবির্ভূত হন যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত, অভ্যুত্থানম্‌ অধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্‌ (গীতা ৪/৭) তিনি চান যে, "এই সব বদমাশেরা এই জড় জগতে পচে মরছে জন্ম জন্মান্তর ধরে। ওরা আমার কাছে ফিরে আসুক"। কারণ তিনি অত্যন্ত কৃপাময় ... এবং সে যদি এই মানব জীবনের সদ্ব্যবহার না করে এবং ভগবানের কাছে ফিরে যেতে প্রয়াস না করে, তাহলে সেটি তার পাপময় জীবন হবে। তাকে শাস্তি পেতে হবে

তাই সিদ্ধান্ত হচ্ছে সকল্কেই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন গ্রহণ করতে হবে অন্যথা তাকে যমরাজের থেকে শাস্তি পেতে হবে।

অনেক ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ জয় শ্রীল প্রভুপাদ