BN/Prabhupada 0929 - স্নান করাটাও অভ্যাসে নেই। হয়তো সপ্তাহে একদিন



730424 - Lecture SB 01.08.32 - Los Angeles

অনুবাদঃ কেউ কেউ বলেন পুণ্যবান রাজাদের মহিমান্বিত করার জন্য অজ জন্মগ্রহণ করেন, এবং কেউ কেউ বলেন তোমার অন্যতম প্রিয় ভক্ত যদুর আনন্দ বিধানের জন্য তুমি জন্মরহিত হওয়া সত্ত্বেও যদুবংশে জন্ম নিয়েছ। মলয় পর্বতের যশ বৃদ্ধির জন্য যেমন চন্দন বৃক্ষের জন্ম হয়, তেমনই তুমি মহারাজ যদুর বংশে জন্মগ্রহণ করেছ।"

প্রভুপাদঃ দুইটি মলয় আছে একটি হচ্ছে মলয় পর্বত এবং এই মলয় ... এখন মালয়েশিয়া নামে পরিচিত পূর্বে পৃথিবীর এই মালয়েশিয়া নামক অঞ্চলে অনেক পরিমাণে চন্দন উৎপাদন হোত কারণ ৫০০০ হাজার বছর আগে চন্দনের অনেক চাহিদা ছিল। প্রত্যেকেই চন্দন ব্যবহার করত কারণ যেহেতু ভারত একটি ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশ তাই ওখানে এটি খুব ভাল প্রসাধন এখনও যাদের সাধ্য আছে গরমের দিনে যদি গায়ে চন্দন লাগানো হয়, তাহলে কোন গরম লাগে না। এটি খুবই শীতল।

তাই এটা ছিল তখনকার ব্যবস্থা... এখনও সেই চল রয়েছে, কিন্তু খুব সামান্য লোকের মাঝে সকলেই স্নানের পর সারা গায়ে চন্দন বাটা লেপন করতেন। এটি সারাদিন দেহকে শীতল ও শান্ত রাখে। তাই এটা ছিল প্রসাধন। এখন কলিযুগে... একে বলা হয় প্রসাধনম্‌ ঠিক যেমন, সব দেশেই স্নানের পর ব্যবস্থা আছে যে চুলে বা অন্য কিছুতে সুগন্ধি লাগানো। ভারতবর্ষে এই প্রথা ছিল যে স্নানের পর মানুষেরা তিলক করে বিগ্রহ কক্ষে গিয়ে প্রণাম করতেন তারপর বিগ্রহ কক্ষ থেকে চন্দন প্রসাদ নিয়ে তা ব্যবহার করা হত। একে বলা হয় প্রসাধনম্‌। বলা হয়েছে যে এই কলিযুগে স্নানম্‌ এব হি প্রসাধনম্‌ যদি কেউ ভাল করে স্নান করে, তাহলে সেটিই প্রসাধনম্‌ ঐটুকুই। কোন কসমেটিক বা চন্দন তেল বা গোলাপসুগন্ধি বা গোলাপজল নয়। অতটাই শেষ। স্নানম্‌ এব হি প্রসাধনম্‌ (ভাগবত ১২.২.৫) কেবল স্নান করলেই ...

শুরুতে আমি যখন ভারতে ছিলাম ... ওখানে স্নান করাটা খুবই সাধারণ ব্যাপার, কেননা এমনকি সবচাইতে গরীব মানুষটিও খুব ভোরে স্নান করে। কিন্তু আমি যখন তোমাদের দেশে এলাম তখন দেখলাম এমনকি স্নান করাটাও অনেক কঠিন কাজ। (হাসি) স্নান করাটাও এখানে কোন অভ্যাস নেই। হয়ত সপ্তাহে একদিন। আমরা ভারতে দিনে তিনবার স্নানে অভ্যস্ত। আর নিউ ইয়র্কে দেখেছি এক বন্ধু আরেক বন্ধুর বাড়িতে আসছে কারণ ওদের ওখানে স্নানের ব্যবস্থাই নেই তাই বন্ধুর বাড়িতে আসছে। তাই না? আমি দেখেছি। এইভাবে কলিযুগের বর্ণনা দেয়া হয়েছে যে এমনকি স্নান করতেও লোকের অনেক কষ্ট এখন। স্নানম্‌ এব হি প্রসাধনম্‌।

এবং দাক্ষ্যম্‌ কুটুম্বভরণম্‌ দাক্ষ্যম্‌ মানে যে তাঁর পুণ্যকর্মের জন্য বিখ্যাত তাঁকে বলা হয় দাক্ষ্যম্‌। এই শব্দটি দক্ষ থেকে এসেছে। দক্ষ মানে পটু। দাক্ষ্যম্‌ কুটুম্বভরণম্‌ কলিযুগে যদি কেউ ভালভাবে সংসার চালাতে পারে... পরিবার মানে স্ত্রী এবং দুই একটা সন্তান, এটাই এখন পরিবার। কিন্তু ভারতে পরিবার মানে তা নয়। পরিবার মানে যৌথ পরিবার। যৌথ পরিবার, বাবা-কাকারা, ছেলেমেয়েরা, কাকাত-মামাত ভাইবোন, স্বামী সবাই মিলে একসঙ্গে। এর নাম পরিবার। কিন্তু এই কলিযুগে এমনকি পরিবার সামলানোটাও কঠিন। যদি কেউ তার পরিবার ভরণপোষণ করতে পারে...

আমি যখন নিউ ইয়র্কে ছিলাম একজন বৃদ্ধা মহিলা আসতেন তাঁর প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে ছিল আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "আপনি কেন আপনার ছেলেকে বিয়ে দিচ্ছেন না?" "হ্যাঁ, ও বিয়ে করতে পারে যদি ও সংসার চালাতে পারে তো।" আমি জানতাম না যে এখানে সংসার চালানোও একটা কঠিন কাজের মধ্যে পড়ে। আমি তা জানতাম না। তাই সমস্ত কথা শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে। কেউ যদি একটা পরিবার চালাতে পারে, তাহলেই সেটা খুব মহিমান্বিত ব্যাপার "ওহ্‌ সে পাঁচজনকে চালাচ্ছে" (?) যদি কোন মেয়ে একটি ভাল স্বামী পায়, তবে তাকে সৌভাগ্যবতী ধরা হয়। এই সমস্ত ব্যাপার রয়েছে।