BN/Prabhupada 0933 - কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন মানুষকে পশু জীবনে অধঃপতিত হওয়া থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে



730424 - Lecture SB 01.08.32 - Los Angeles

প্রভুপাদঃ শ্রীকৃষ্ণ দেবকী মাতার পুত্র রূপে এসেছিলেন দেবকী মাতাকে মহিমান্বিত করার জন্য। শ্রীকৃষ্ণ যশোদা মায়ের পুত্র রূপে এসেছিলেন, তাঁর ভক্ত, মা যশোদাকে মহিমান্বিত করার জন্য। একইভাবে শ্রীকৃষ্ণ মহারাজ যদুর বংশে আবির্ভূত হয়েছিলেন শুধু তাঁকে মহিমান্বিত করার জন্য। তিনি শ্রীকৃষ্ণের একজন মহান ভক্ত ছিলেন, এবং... তিনি মহারাজ যদুর বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সমগ্র বংশ এখনও যাদব বলে সুপ্রসিদ্ধ। শ্রীকৃষ্ণের নাম যাদব, কারণ তিনি যদু বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তো এটি কিভাবে হল যে, শ্রীকৃষ্ণ...? সেই বংশকে মহিমান্বিত করার জন্য। ঠিক এই উদাহরণটি দেয়া হয়ঃ মলয়স্যেব চন্দনম (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৮.৩২)। চন্দন। এটি একটি গাছ। একটি গাছ যে কোন জায়গায় জন্মাতে পারে, কিন্তু চন্দন গাছ, যেহেতু এটি মালয়েশিয়া দেশে খুব বিখ্যাত... পূর্বে তারা এই চন্দন গাছের চাষ করত, আমি তোমাদেরকে তা বলেছিলাম। কারণ এই চন্দন গাছের খুব চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে ভারতে। তাই তারা... এখন তারা রাবার গাছের চাষ করে কারণ এখন রাবারের খুব ভালো চাহিদা রয়েছে।

তো এমন কি ব্যবসার পরেও... কুন্তিদেবী এই সুন্দর উদাহরণটি দিচ্ছেন। এই চন্দন গাছ, একটি বিশেষ ধরণের গাছ। এটি যেকোনো জায়গায় জন্মাতে পারে। বাধ্য হয়ে এটিকে মালয়সিয়ায় অথবা মলয় পর্বতে জন্মাতে হবে এমন নয়। এমন কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। এটি যেকোনো জায়গায় জন্মাতে পারে। কিন্তু যেহেতু চন্দন পৃথিবীর এই অংশে ব্যাপক পরিমাণে চাষ হয়, তাই এটি মলয় চন্দন নামে পরিচিত। মলয়-চন্দন।

ঠিক যেমন তোমাদের পশ্চিমা দেশগুলোতে, সুগন্ধি জলঃ ওডিকলোন ও ডি কলোন। কলোন হচ্ছে ফ্রান্সের একটি জায়গা...? আর সেখানে এটি তৈরি করা হয়, তাই এটিকে বলা হয় ও ডি কলোন। ঠিক একইভাবে, ও ডি কলোন যে কোন জায়গায় তৈরি করা যেতে পারে, কিন্তু প্রথম দিকে যেহেতু এটি কলোন শহরে তৈরি করা শুরু হয়েছিল, তাই এটি ও ডি কলোন নামে পরিচিত। একইভাবে চন্দন যে কোন জায়গায় জন্মাতে পারে কিন্তু মূলত যেহেতু এটি মালয়েশিয়ায় খুব বিখ্যাত...

পাঁচ হাজার বছর আগে কুন্তিদেবী এই প্রার্থনা করছেন। তার মানে ৫০০০ বছর আগে থেকেই এই চন্দন মালয়েশিয়ায় উৎপন্ন হতো। তো এই মালয়েশিয়া কোন নতুন নাম নয়। এটি হাজার হাজার বছর আগে থেকেই পরিচিত ছিল। আর... এই সমস্ত জায়গায় বৈদিক সংস্কৃতি প্রচলিত ছিল। তো একইভাবে তিনি এই উদাহরণ দিচ্ছেন, যে ... শ্রীকৃষ্ণের এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই যে তাঁকে বিশেষ কোন দেশে বা পরিবারে জন্মগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু শুধু বিশেষ কোন পরিবার বা কোন ব্যক্তিকে, যেহেতু তিনি তাঁর ভক্ত, তাঁকে মহিমান্বিত করার জন্যই তিনি সেখানে জন্মগ্রহন করেন।

তার কারণ হচ্ছে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন...তাই একে বলা হয় দিব্যম্‌ বা অপ্রাকৃত। তিনি বাধ্য নন। কিন্তু আমরা বাধ্য। এটিই হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ এবং আমাদের জন্মগ্রহনের মধ্যে পার্থক্য। আমরা বাধ্য। যদি আমরা আমাদের কর্মের দ্বারা ভালো কোন পরিবারে জন্মগ্রহণ করার জন্য উপযুক্ত হয়, তাহলে আমি কোন ভালো পরিবারে অথবা ভালো সমাজে কিংবা দেব সমাজে জন্মগ্রহণ করব। কিন্তু আমার কর্ম যদি পশুদের মতো নিম্ন পর্যায়ের হয়, তাহলে আমাকে পশুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করতে হবে। এটিই বাধ্য। কর্মণা দৈব নেত্রেণ জন্তুর দেহ উপপত্তয়ে (শ্রীমদ্ভাগবত ৩.৩১.১)। আমরা আমাদের কর্ম অনুসারে বিশেষ ধরণের দেহ তৈরি করি।

এই জীবনে... এই মনুষ্য জীবন হচ্ছে অথাতো ব্রহ্ম জিজ্ঞাসার জন্য, পরম তত্ত্বকে জানার জন্য, কিন্তু আমরা যদি তা না করি, যদি শুধু পশুর মতো থাকি, তাহলে পুনরায় পশু শরীরে যাব। সুযোগের অপব্যবহার। তখন আমরা... তাই এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে, পশু জীবনে অধঃপতিত হওয়া থেকে।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ হরে কৃষ্ণ, সমস্ত মহিমা শ্রীল প্রভুপাদের !