BN/Prabhupada 1058 - ভগবদ্গীতার বক্তা হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ
660219-20 - Lecture BG Introduction - New York
ভগবদ্গীতার বক্তা হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভগবদ্গীতার বক্তা হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভগবদ্গীতার প্রতিটি পাতায় বলা হয়েছে যে, শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান ভগবান শব্দটি কখনও কখনও কোন শক্তিমান পুরুষ অথবা কোন দেব-দেবীর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়। এখানে ভগবান্ শব্দটির দ্বারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে মহাপুরুষ রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু সেইসঙ্গে আমাদের জ্ঞাত হওয়া উচিত যে, শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান। ভগবান শ্রীকৃ্ষ্ণই যে পরমেশ্বর তা স্বীকার করেছেন সমস্ত সত্যদ্রষ্টা ও ভগবৎ-তত্ত্ববেত্তা আচার্যেরা- যেমন, শঙ্করাচার্য, রামানুজাচার্য, মধ্বাচার্য, নিম্বাকাচার্য, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এবং আরও অনেকে । ভারতে অনেক প্রমানিক বিদ্বান এবং আচার্য ছিল। আমি বলতে চাচ্ছি, বৈদিক জ্ঞানের কর্তৃপক্ষ। শঙ্করাচার্য সহ তাঁদের সকলেই শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবান বলে গ্রহণ করেছেন। শ্রীকৃ্ষ্ণ নিজেই ভগবদ্গীতাতে বলে গেছেন যে, - -তিনিই হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান। ব্রহ্মসংহিতা ও সব কয়টি পুরাণে, বিশেষ করে ভাগবত-পুরাণ শ্রীমদ্ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর ভগবানরূপে বর্ণনা করা হয়েছে (কৃষ্ণস্তু ভগবান্ স্বয়ম্) (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৩.২৮)। তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেমনভাবে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, ঠিক তেমনভাবে ভগবদ্গীতাকে আমাদের গ্রহণ করতে হবে
ভগবদ্গীতার চতুর্থ অধ্যায়ে(৪/১-৩) ভগবান বলেছেন:
- ইমং বিবস্বতে যোগং
- প্রোক্তবানহমব্যয়ম্।
- বিবস্বান্মনবে প্রাহ
- মনুরিক্ষ্বাকবেহব্রবীৎ।।
- এবং পরম্পরাপ্রাপ্ত
- মিমং রাজর্ষয়ো বিদুঃ।
- স কলেনেহ মহতা
- যোগো নষ্টঃ পরন্তপ।।
- স এবায়ং ময়া তেহদ্য
- যোগঃ প্রোক্তঃ পুরাতনঃ।
- ভক্তোহসি মে সখা চেতি
- রহস্যং হ্যেতদুত্তমম্।।
এখানে ভগবান অর্জুনকে বলেছেন যে, এই যোগপন্থা, ভগবদ্গীতা, সর্ব প্রথম আমি সূর্যদেবকে দান করি, সূর্যদেব মনুকে বলেছিলেন, মনু ইক্ষ্বাকুকে বলেছিলেন, এবং এভাবে গুরু-পরম্পরাক্রমে গুরুদেব থেকে শিষ্যতে এই জ্ঞান ধারাবাহিকভাবে প্রবাহিত হয়ে আসছিল। এবং কালক্রমে এখন পরম্পরা ছিন্ন হয়ে যায়। তাই এই যোগ প্রণালীর পরম জ্ঞান পুনরায় তোমাকে দান করছি, সেই ভগবদ্গীতার একই যোগ পন্থা বা গীতোপনিষদ্। কারন তুমি আমার ভক্ত এবং সখা, তাই শুধুমাত্র তোমার পক্ষেই অনুধাবন করা সম্ভব।”
এই কথার তাৎপর্য হচ্ছে যে, ভগবদ্গীতার জ্ঞান কেবল ভগবানের ভক্তদের জন্য। অধ্যাত্মবাদীদের সাধারণত তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়, যথা- জ্ঞানী, যোগী ও ভক্ত । অথবা নির্বিশেষবাদী, ধ্যানী ও ভক্ত। এখানে ভগবান স্পষ্টভাবে অর্জুনকে বলেছেন যে আমি তোমাকে বলছি অথবা তোমাকে পরম্পরার প্রথম ব্যাক্তি হিসাবে নির্বাচিত করছি। কারন পুরাতন পরম্পরা এখন ছিন্ন হয়ে গেছে, তাই আমি আবার আরেকটি পরম্পরা স্থাপন করছি একই ধারার জ্ঞান সূর্যদেব থেকে অন্যদের কাছে নেমে এসেছিল সুতরাং তুমি, তুমি গ্রহণ কর এবং বিতরণ কর। বা পন্থাটি, ভগবদ্গীতার যোগ পন্থাটি তোমার মাধ্যমে বিতরিত হবে। তুমি ভগবদ্গীতার প্রামানিক বিদ্বান হও।" এখানে বিশেষ করে অর্জুন মহাশয়কে ভগবদ্গীতার দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, পরমেশ্বর ভগবানের ভক্ত, সরাসরি ভগবান কৃষ্ণের শিষ্য। শুধু তাই নয়, তিনি কৃষ্ণের অন্তরঙ্গ সখা। সুতরাং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মতো সমগুণ সম্পন্নরাই ভগবদ্গীতা হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে। তার অর্থ, অবশ্যই তিনি হবেন একজন ভক্ত, অবশ্যই তিনি পরমেশ্বর ভগবানের সহিত সরাসরি সম্পর্কিত হবেন।